কলকাতা: সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর স্ত্রী নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়ের আয়কর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা নিয়ে তদন্তে নামল কলকাতা পুলিশের সাইবার শাখা৷ ইতিমধ্যেই তারা বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে বলে খবর৷ তবে তদন্তের স্বার্থে সেই তথ্য গোপন রাখা হয়েছে৷ এই কাজে পিছনে কোন ব্যক্তি রয়েছে নাকি কোনও চক্র কাজ করছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ পুলিশের আশা, খুব শীঘ্রই চক্রদের জাল উদ্ঘাটিত হবে৷
অভিযোগ, গত শনিবার নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তাঁর আইনজীবী নাকি আয়কর ফাইল করে দিয়েছেন বলে জানতে পারেন৷ ইতিমধ্যেই তা জমা পড়ে গিয়েছে৷ অথচ তিনি কখনও রিটার্ন জমা দেননি৷ তাহলে রিটার্ন দাখিল করল কে? তাঁদের আইনজীবীর জানিয়েছেন, খুব সম্ভবত তাঁদের অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে করে ওই কুকীর্তি ঘটনা ঘটান হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, জানা গিয়েছে, একই ঘটনা ঘটেছে সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়েরও৷ ই-ফাইলিং অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে৷
গোটা বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন নয়না বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এই প্রসঙ্গে তাঁদের আইনজীবী সংবাদমাধ্যমে জানিয়েছেন, তিনি ১৮ বছর ধরে এই দু’জনের রিটার্ন জমা করে আসছেন৷ কখনও এমন হয়নি৷ দু’জনের নম্বার যেহেতু ভোটের সময় হলফনামায় দিতে হয়, প্রতারকরা সেখান থেকে বিষয়টি জেনে নিতে পারে বলে আশঙ্কা৷ দু’জনেই আয়করের অ্যাকাউন্টের সঙ্গে ইমেইল আইডি একই৷ মোবাইল নম্বর রেজিস্টার করা হয়েছে৷ কিন্তু, তার পরও কীভাবে এই জালিয়াতি, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন৷
সুদীপ-নয়নাদের আগেই তৃণমূল সাংসদের হয়ে আয়কর দাখিল করার অভিযোগ তোলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার৷ গত পয়লা আগস্ট তিনি সংবাদমাধ্যমের দাবি করেন, তাঁর হয়ে কেউ বা কারা আয়কর রিটার্ন দাখিল করে দিয়েছে৷ গোটা ঘটনায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলেন কাকলি ঘোষ দস্তিদার৷ ইতিমধ্যেই মধ্যমগ্রাম থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি৷
সাংসদের অভিযোগ, তাঁর সই জাল করে ও প্যান কার্ডের অপব্যবহার করা হয়েছে৷ কীভাবে তাঁর হয়ে কে বা কারা রিটার্ন ফাইল করে দিল তাই নিয়ে সরব হন বারাসাতে সাংসদ৷ ইতিমধ্যেই কাকলি ঘোষ দস্তিদারের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে৷
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, এইভাবে সাংসদদের টার্গেট করে কীভাবে ভুয়া আয়কর দাখিল করার প্রবণতা বাড়ছে৷ এই নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে সাংসদ হলেও৷ অনেকেই এই ঘটনার পিছনে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা কেই দায়ী করেছেন৷ কারণ হলফনামা জমা দেওয়ার সময় প্রার্থীকে তাঁর সম্পত্তির হিসাব ও প্যান-সহ বিভিন্ন নথিপত্র দাখিল করতে হয়৷ সেই নথি আবার বিভিন্ন সংস্থার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করে থাকে৷ মনে করা হচ্ছে, সেই সমস্ত ওয়েবসাইট থেকেই সাংসদদের তথ্য হাতিয়ে এই ধরনের কোনও কর্মকাণ্ড ঘটানো হচ্ছে৷