চূড়ান্ত ‘অসৌজন্যতা’! অবশেষে ভেস্তে গেল রাজ্যপালের বৈঠক

বারাসত ও আলিপুর: ফের শিলিগুড়ির পুনরাবৃত্তি এবার দুই ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে৷ রাজ্যপালের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠকে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও শাসক তৃণমূলের প্রতিনিধিদের গরহাজির জেরে ভেস্তে গেল রাজ্যপালের ধামাখালির প্রশাসনিক বৈঠক৷ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের গরহাজিরা নিয়ে এদিন উষ্মা প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল৷ জানিয়েছেন, আমি সরকারের অধীনস্থ নয়৷ রাজ্যপালের নির্দেশ মানছে না

imagesmissing

বারাসত ও আলিপুর: ফের শিলিগুড়ির পুনরাবৃত্তি এবার দুই ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে৷ রাজ্যপালের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠকে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও শাসক তৃণমূলের প্রতিনিধিদের গরহাজির জেরে ভেস্তে গেল রাজ্যপালের ধামাখালির প্রশাসনিক বৈঠক৷ রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও শাসক দলের জনপ্রতিনিধিদের গরহাজিরা নিয়ে এদিন উষ্মা প্রকাশ করেছেন রাজ্যপাল৷ জানিয়েছেন, আমি সরকারের অধীনস্থ নয়৷ রাজ্যপালের নির্দেশ মানছে না জেলাশাসকরা৷ সরাসরি ক্ষোভ প্রকাশ করে বৈঠক বাতিল করার সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের৷

ধামাখালির বৈঠক ভেস্তে যাওয়ার পর হেমনগর হয়ে আজ দুপুরে রাজ্যপাল দক্ষিণ ২৪ পরগনার সজনেখালিতে যাবেন তিনি৷ সেখানে রয়েছে আরও একটি প্রশাসনিক বৈঠক৷ সজনেখালি বনাঞ্চল পরিদর্শনের পর ফের ধামাখালি হয়ে কলকাতা কথা রয়েছে রাজ্যপালের৷ আজ ধামাখালি ও সন্দেশখালিতে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন রাজ্যপাল৷ সেই মর্মে রাজভবনের তরফে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ আধিকারিক আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়৷ একইসঙ্গে শাসক-বিরোধী সমস্ত জনপ্রতিনিধিদের আমন্ত্রণ জানিয়ে বৈঠকে অংশ নিতে আর্জি জানানো হয়৷ আজ ছিল সেই বৈঠক৷ কিন্তু, রাজ্যপালের ডাকা প্রশাসনিক বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যের উপস্থিতি না থাকা নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করেন রাজ্যপাল৷

সংবাদমাধ্যমে জানান, রাজ্যে সাংবিধানিক প্রধানের ডাকা বৈঠক তৃণমূল ও প্রশাসনের একাংশ কীভাবে এড়িয়ে যাচ্ছেন? রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে সরব হয়ে রাজ্যপাল জানান, ‘‘আমার সফরের কথা আগেই জানানো হয়েছিল৷ যেকোনো জায়গাতেই যেতে পারেন রাজ্যপাল৷ আমার সফরের আগে সবাইকে গত ১৭ অক্টোবর জেলা প্রশাসনকে জানানো হয়৷ কিন্তু, ২১ তারিখ একটি চিঠি দেন জেলাশাসক৷ জনপ্রতিনিধিদের ডাকতে গেলে রাজ্যের অনুমতি লাগবে৷ চিঠিতে জানান ডিএ৷ এতে আমি বিস্মিত৷’’ বলেন, ‘‘রাজ্যপালের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে অনুমতি লাগবে? রাজ্যপাল কি রাজ্য সরকারের অধীনস্থ? রাজ্যপাল হিসেবে যেখানে খুশি যেতে পারি৷ শিলিগুড়িতে জেলাশাসক অসুস্থ৷ ধামাখালিতেও জেলাশাসক অসুস্থ৷ সেখানেই যাব, যেখানে জেলাশাসক অসুস্থ হবেন৷ মন্ত্রীদের সঙ্গে কেন আমলারা আমাকে বয়কট করল? এটা বিবেচনা করে দেখতে হবে৷’’

একই সঙ্গে জেলা প্রশাসনের বিরুদ্ধে কার্যত অপমানজনক ব্যবহারের অভিযোগ তুললেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর৷ আজ ধামাখালি প্রশাসনিক বৈঠকে উপস্থিত হয়ে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা শাসককের খোঁজ করেন রাজ্যপাল৷ কিন্তু তাঁকে না দেখে হতাশা প্রকাশ করেন তিনি৷ একইসঙ্গে অপমানজনক বলেও আখ্যা দেন রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান৷ কেননা, রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধানের প্রটোকল অনুযায়ী রাজ্যপালের জেলা সফরের সময় স্থানীয় জেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তারা তাঁকে স্বাগত জানান৷ সে ক্ষেত্রে জেলাশাসকরা এই কাজ করে থাকেন৷ ঠিক যেমন রাষ্ট্রপতির রাজ্য সফরে এলে সেই রাজ্যের রাজ্যপাল তাঁকে অভ্যর্থনা জানাতে হাজির হয়ে যান৷ এক্ষেত্রেও রাজ্যপাল যদি কোনও জেলা সফরে যান, সেখানেও জেলার জেলাশাসক কিংবা উচ্চপদস্থ আধিকারিক তাঁকে অভ্যর্থনা জানাবেন এটাই শ্রেয়৷

অভিযোগ, রাজ্যপালের ধামাখালি প্রশাসনিক বৈঠকে সেই প্রটোকল ঠিকঠাক মানা হয়নি৷ জেলাশাসকের ভূমিকা প্রশ্নের মুখে তুলে রাজ্যপাল অপমানিত হয়েছেন বলেও মন্তব্য করেছেন৷ রাজ্যপালের ডাকা বৈঠকে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিক ও শাসক তৃণমূলের গরহাজিরা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি৷ এর আগেও শিলিগুড়িতে ও একই ঘটনা ঘটেছিল৷ কিন্তু সেখানে শাসক দলের প্রতিনিধিরা উপস্থিত না থাকায় হতাশা প্রকাশ করেছিলেন রাজ্যপাল৷ একই সঙ্গে পুলিশের প্রশাসনের গরহাজিরা নিয়েও তোলেন প্রশ্ন৷ ওই দিন উষ্মা প্রকাশ করে রাজ্যপাল জানিয়েছিলেন, এবার তিনি গোটা রাজ্যজুড়ে একই ধরনের প্রশাসনিক বৈঠক করবেন৷ এবার তারই পরিপ্রেক্ষিতে শিলিগুড়ির পর সুন্দরবন সফরে যান রাজ্যপাল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *