শিক্ষক অনশন মঞ্চে মান্নান-তন্ময়-রঞ্জন, দিলেন কড়া হুঁশিয়ারি

কলকাতা: যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনক্রোম চালু ও ১৪ জন শিক্ষকের বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারে দাবিতে টানা ৪ দিন ধরে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ৷ এখনও পর্যন্ত ২০ জন শিক্ষক এই অনশনে অংশ নিয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ মঙ্গলবার অনশনরত শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে হাজির হলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও

7247a871ce0aed218caffd4d48cb7a0f

শিক্ষক অনশন মঞ্চে মান্নান-তন্ময়-রঞ্জন, দিলেন কড়া হুঁশিয়ারি

কলকাতা: যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনক্রোম চালু ও ১৪ জন শিক্ষকের বদলির নির্দেশ প্রত্যাহারে দাবিতে টানা ৪ দিন ধরে অনশন কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছেন প্রাথমিক শিক্ষকদের একাংশ৷ এখনও পর্যন্ত ২০ জন শিক্ষক এই অনশনে অংশ নিয়েছেন৷ তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন অসুস্থ হয়ে পড়েছেন৷ মঙ্গলবার অনশনরত শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে হাজির হলেন বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান, আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য ও বাম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য৷ শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে দাঁড়িয়ে দিলেন কড়া হুঁশিয়ারি৷

আইনজীবী বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘এ রাজ্যে কোনও কাজ শান্তিপূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কোন দাবি আদায় করা যায় না৷ আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমরা এই রকম একটা নির্দয় সরকারের শরিক হয়েছি৷ মানুষ তাঁদের ভোট দিয়েছে, আমার দেশের শিক্ষিত ছেলে মেয়েরা মাঝে মাঝে অনশনে বসছেন৷ মাঝে মাঝে রাস্তায় নামছে৷ কী মনে হয়, পশ্চিমবঙ্গে কোন সরকার চলছে? যে সরকার গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে নির্বাচিত হয়েছে৷’’

শিক্ষক অনশন মঞ্চে মান্নান-তন্ময়-রঞ্জন, দিলেন কড়া হুঁশিয়ারিবিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলেন, ‘‘শিক্ষকদের প্রতি সহানুভূতি জানাতে আমি এখানে এসেছি৷ শিক্ষকদের দাবি কীভাবে পূরণ করা যায়, আমি চাই তা ভেবে দেখুক সরকার৷’’ বাম বিধায়ক তন্ময় ভট্টাচার্য জানান, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষকদের কথা বারংবার আমি বিধানসভায় বসেছি৷ কিন্তু, সরকার কোনও পদক্ষেপ নেয়নি৷ আমরা চাই, সরকার এই সমস্যা অবিলম্বে সমাধান করুক৷’’

অন্যদিকে সোমবার শিক্ষামন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারির পর আন্দোলনকারী প্রাথমিক শিক্ষকদের তরফেও পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে কড়া ভাষায় আক্রমণ করা হয়েছে৷ শিক্ষামন্ত্রীর হুঁশিয়ারি শিক্ষক বিদ্রোহের আগুনে ঘি ঢালছে বলেও দাবি করা হয়৷ মঙ্গলবার অনশনমঞ্চ থেকে শিক্ষক সংগঠনের তরফে বলা হয়, ‘‘শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, অনশনকারী শিক্ষকরা শিক্ষা ব্যবস্থাকে পিছিয়ে দিচ্ছে৷ যেখানে শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে এসেছেন, উনি তাতে আগুনে ঘি দিচ্ছেন৷ যাতে আমরা আরও রাস্তায় থাকি৷ যাতে শিক্ষাব্যবস্থা আরও ভেঙে পড়ে৷ আমি প্রশ্ন তুলছি, ওনার বাস্তব বুদ্ধি কোথায়? উনি বলতে চাইছেন, শিক্ষকরা সমাজের শত্রু? দিনের পর দিন প্রেস বিবৃতি করে বোঝাতে চাইছেন, শিক্ষকরা সমাজের শত্রু৷ শিক্ষকরা ইচ্ছাকৃতভাবে রাস্তায় নেমে এসেছেন৷ শিক্ষামন্ত্রী বলেছেন, ওরা অনশন করছে অকারণে৷ শিক্ষামন্ত্রীকে টাইট দেওয়ার জন্য এই অনশন করা হচ্ছে৷ শিক্ষামন্ত্রীর এই ধরনের ভাষায় আমরা স্তম্ভিত৷ আমরা এখানে অনশন করছি, আমরা আমদের ন্যায্য দাবি জানাচ্ছি৷ শিক্ষামন্ত্রী, আমাদের অপমান করে নিজের চেয়ারটাকে অপমান করছেন৷ উনি নিজেই নিজের সম্মান নষ্ট করছেন৷’’

সোমবার অনশনকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘‘প্রাইমারি টিচারদের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে৷  আমি আপনাদের খুব দায়িত্ব নিয়ে বলছি, যাঁরা বসে আছে তাঁরা অকারণে বসে আছে৷ আপনাদের দিকে তাকিয়ে আছে, যাতে আপনারা কতটা খবর করবেন, তার উপর তাঁদের সাংগঠনিক জোর বাড়বে৷ এটা একেবারেই ভুল৷ সরকারের আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে আমরা লিখেছিলাম যে, এদের কিছু একটা ব্যবস্থা করে দেয়া হোক৷ এটা ওঁরাও চিঠিতেও প্রথমদিকে জানিয়েছিল৷ এখন নানা রকম দাবি তুলছেন৷ এবং অনশন করছে৷ এখানে বসে আছেন৷ যে যা পারছে সে তাই করছে৷ চারটে লোক নিয়ে ট্রেড অ্যাসোসিয়েশন করেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করবে৷ একটা অদ্ভুত প্রবণতা দেখা গিয়েছে৷ তারা আলোচনা রাস্তায় না গিয়ে রাস্তায় গিয়ে বসে পড়েছেন৷ রাস্তাতেই তারা বসে ভাবছেন, এতে সরকার বোধহয় দুর্বল হয়ে পড়বে, আমাদের কথা শুনবে৷ যেটা বাস্তব সেটাই আগেও বলেছি, আমি আমরা অবশ্যই তাদেরটা ভেবে দেখব৷ শীঘ্রই আমরা প্রাইমারি টিচারদের মিটিং ডাকছি৷ সেখানে সরকারের তরফে যা বলার তা বলা হবে৷ এছাড়াও কয়েকটি সমস্যা আছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে আলোচনা করে সবুজ সংকেত নিয়ে আমরা শীঘ্রই নজরুল মঞ্চে আলোচনায় বসবো৷ যেহেতু ২১ তারিখ ধর্মতলা সভা আছে, তার আগে হয়তো সম্ভব হবে না৷ আর যদি তা না হয়, এই মাসেই আমরা তিনটি বিষয়ে সমাধানের পথে যাব৷ এছাড়াও প্রাইমারি প্রাইমারি টিচারদের গ্রেড পে নিয়ে যে একটা নিজেদের মধ্যে একটা অসন্তোষ আছে, সেটা সমাধান করব৷’’

বলেন,‘‘উস্তিদের সঙ্গে বহুবার বসেছি৷ যখন বিধানসভার চলছিল, তখন তাঁদের সঙ্গে বসেছি৷ ওদের মনে হচ্ছে যে, একটু দিচ্ছি আরও একটু যদি সরকারকে টাইট দেওয়া যায়৷ কিন্তু কোনও দিন যা বলিনি তাই আজ বলছি৷ স্কুল কামায় করে যারা আন্দোলনে বসছেন, তাঁদের কিন্তু এই অপশনের জন্য যদি কোনও ছুটি না থাকে, তাহলে কোন ছুটি এডজাস্ট হবে না৷ যারা ছাত্রদের না পড়িয়ে দিনের পর দিন নানা ধরনের আন্দোলন করছেন, স্কুল কামাই করেছেন, তাদেরকে জানিয়ে দিচ্ছি, ছাত্রদের দিকে তাকিয়ে কাজে ফিরিন৷’’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *