নয়াদিল্লি: অবশেষে বিজেপিতে যোগ দিলেন কলকাতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ সঙ্গে বিজেপিতে নাম লেখালেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ মুকুলের হাতে গেরুয়া উত্তরীয় পড়তে মাথা নত করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা প্রিয় কানন৷ তৃণমূল ছেড়ে স্বামীর বিজেপিতে যোগদান বাড়িতে বসে টিভিতে দেখলেন রত্না চট্টোপাধ্যায়৷ কিন্তু, এই দলবদল ঘিরে তৈরি হয়েছে নানান বিতর্ক৷ বৈশাখী দলের শক্তি বাড়াবে, মুকুলের দাবি প্রসঙ্গে বিস্ফোরক রত্না৷
বুধবার দিল্লিতে শোভন-বৈশাখীকে বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে মুকুল রায় বলেন, ‘‘৩৪ বছর ধরে শোভন চট্টোপাধ্যায় রাজনীতি করছেন৷ শোভন দলে আসায় বিজেপি আরও মজবুত হবে৷ তৃণমূল নেত্রী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপির শক্তি বাড়াবে৷’’
মুকুল রায়ের এই মন্তব্যকে তীব্র সমালোচনা করেন রত্না৷ বলেন, ‘‘মুকুল রায় বলছেন, বৈশাখী তৃণমূল নেত্রী৷ বিজেপিতে গিয়ে শক্তি বাড়াবেন৷ কিন্তু, বৈখাশী তৃণমূলে থাকার সময় কোনও শক্তি যোগাননি৷ এবার যদি বিজেপিতে গিয়ে শক্তি যোগান, বা বৈশাখীকে দেখে বিজেপির শক্তি বাড়ে তাহলে অন্য কথা৷ ওকে দেখে এবার ওদের মানসিক বাড়বে৷’’
বিজেপিতে যোগদান করার পরেই নাম না করে সরাসরি তিনি তাঁর প্রাক্তন দলের একাধিক প্রথম সারির নেতাদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন৷ তিনি বলেন, তৃণমূলে অামি অনেক কিছুই সিদ্ধান্ত নিতে পারতাম না। দলে আমার কোন মতামত ছিল না। অনেক কষ্ট করে এই দলটাকে একদিন প্রতিষ্ঠিত করার জন্য লড়াই করেছিলাম। পরে দেখছি সেই দলের বেশকিছু নেতা আমার ব্যাক্তিগত জীবন সহ আমার কাজেও নাক গলাচ্ছেন। যা আমি মানতে পারছিলাম না। তখন থেকেই দল ছারবার সিদ্ধান্ত নিই। অবশেষে তৃণমূলের সঙ্গে সব সম্পর্ক চুকিয়ে আমি বিজেপিতে যোগদান করলাম। অতীত ভুলে ফের বিজেপিকে প্রতিষ্ঠিত করতে আমি ফের রাজনীতির আঙিনায় ময়দানে নামবো বলে জানান শোভন চট্টোপাধ্যায়৷
এদিন শোভন চট্টোপাধ্যায়ের বিজেপিতে যোগদান প্রসঙ্গে রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আজ শোভনবাবু নৈতিকতার কথা বলছেন৷ কিন্তু, নিজে দুই সন্তানকে ফেলে চলে গিয়েছেন৷ তার পরও শোভনের মুখে নৈতিকতার কথা মানায় না৷’’ রত্নাদেবী আরও বলেন, ‘‘শোভনকে বিজেপি নিয়েছে, তা মেনে নেওয়া যেতে পারে৷ কিন্তু,বৈশাখী? ও কবে নেত্রী ছিল জানি না৷ ও আমার ঘর ভেঙেছে৷ এই কলকাতার আরও বহু ঘর ভেঙেছে৷ আজ বিজেপি বৈশাখীকে দলে নিয়ে বিশ্বাসযোগ্য হারিয়েছে৷ আর মুকুল রায় কীভাবে ওকে দলে নিল৷’’ বলেন, ‘‘যতই দল পরিবর্তন করো না কেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছেই তোমাকে ফিরতে হবে৷’’