তল্লাশি অভিযান তো চলছে, কিন্তু তদন্তের কিনারা হবে কবে? এমন অভিযান কি ‘হেডলাইন পলিটিক্স’?

তল্লাশি অভিযান তো চলছে, কিন্তু তদন্তের কিনারা হবে কবে? এমন অভিযান কি ‘হেডলাইন পলিটিক্স’?

Ongoing Searches

নিজস্ব প্রতিনিধি: পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় রবিবার সকাল থেকে রাজ্যের পুরমন্ত্রী তথা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের বাড়ির পাশাপাশি কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্রের দুটি বাড়িতে দিনভর তল্লাশি অভিযান চলল। যথারীতি বিষয়টি নিয়ে নতুন করে অন্দোলিত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি। কিন্তু সাধারণ মানুষের প্রশ্ন একটাই, দিনের পর দিন তদন্ত চলছে। সেই সঙ্গে চলছে তল্লাশি অভিযান। কিন্তু তদন্তের কিনারা হবে কবে? সিবিআই-ইডির তল্লাশি সংক্রান্ত বিষয় নিয়মিত খবরের কাগজে শিরোনাম হয়। সোশ্যাল মিডিয়া বা বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সেই সংক্রান্ত খবর পরিবেশন করা হয়। কিন্তু তদন্তের কিনারা কবে হবে তার উত্তর পাওয়া যাচ্ছে না। তবে কি এগুলি সিবিআই বা ইডির ‘হেডলাইন পলিটিক্স’? শুধু যেন চর্চা বা খবরই হবে, যেন কিনারা হবে না। সত্যিই কি তাই? এর উত্তর চাইছেন রাজ্যবাসী। (Ongoing Searches)

শান্তনু বন্দোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষকে জেরা  Ongoing Searches

উল্লেখ্য শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে ধৃত তৃণমূলের বহিষ্কৃত যুবনেতা শান্তনু বন্দোপাধ্যায় ও কুন্তল ঘোষকে জেরা করে প্রোমোটার অয়ন শীলের নাম পাওয়া যায়। এরপর প্রোমোটার অয়ন শীলকে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। অয়নকে জেরা করে আরও চঞ্চল্যকর তথ্য হাতে আসে সিবিআই গোয়েন্দাদের। সেই সূত্রে তদন্ত করে তাঁরা হাতে প্রচুর নথি পান। যা থেকে জানা যায় রাজ্যের অন্তত ষাটটি পুরসভায় বিভিন্ন পদে চাকরি বিক্রি করা হয়েছে। আর সেই দুর্নীতি চক্রের প্রধান মাথা হচ্ছেন অয়ন শীল। রীতিমতো রেট চার্ট বেঁধে চাকরি বিক্রি হয়েছে। গাড়ির ড্রাইভার থেকে পুরসভায় অফিসারের পদ, সব জায়গাতেই লক্ষ লক্ষ টাকার বিনিময় অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে বলে সিবিআই দাবি করেছে। আর সেই চাকরি বিক্রি কাণ্ডে রাজ্যের শাসক দলের একাধিক নেতা, মন্ত্রী, বিধায়কের পাশাপাশি পুরসভাগুলির চেয়ারম্যান বা অন্যান্য প্রভাবশালীরা যুক্ত বলে কেন্দ্রীয় তদন্তকারীরা মনে করছেন। সেই সূত্রেই তদন্ত চালাচ্ছে সিবিআই এবং ইডি। ইতিমধ্যে এই মামলায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তাদের হাতে এসেছে বলে খবর। তার ভিত্তিতেই রবিবার সকাল থেকেই কলকাতা তথা উত্তর চব্বিশ পরগনার বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান চালান সিবিআই আধিকারিকরা।

কয়লা পাচার, গরু পাচার

সবটাই না হয় বোঝা গেল। কিন্তু শুধু পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলা নয়, শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির পাশাপাশি কয়লা পাচার, গরু পাচার-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে যেভাবে সিবিআই তদন্ত হচ্ছে, তাতে আদৌ সেই সমস্ত ঘটনায় বড় মাথারা পড়বেন কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। আদালতের অনুমতির পরেও এখনও পর্যন্ত শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে ‘কালীঘাটের কাকু’র ভয়েস স্যাম্পল টেস্ট করা যায়নি। জানা গিয়েছে ‘কালীঘাটের কাকু’র মোবাইল ফোন ঘেঁটে এমন কিছু কল রেকর্ড পাওয়া গিয়েছে এবং সেখানে এমন কথোপকথন রয়েছে, যা গোটা তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। রাজ্যের অত্যন্ত প্রভাবশালী একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যে  কথোপকথন হয়েছিল ‘কালীঘাটের কাকু’র, সেই প্রমাণ তদন্তকারীদের কাছে আছে বলেই খবর। কিন্তু কোথায় কী! শুধু জিজ্ঞাসাবাদ আর মাঝে মধ্যে তল্লাশি অভিযান, অর্থাৎ তদন্তে অগ্রগতি হচ্ছে না বলে সাধারণ মানুষ মনে করছেন। গোটা বিষয়টি নিয়ে বাম-কংগ্রেসের দাবি, তৃণমূল-বিজেপির মধ্যে সেটিং রয়েছে বলেই তদন্ত এগোচ্ছে না। তাই নতুন করে পুরসভাগুলিতে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিবিআই তল্লাশি অভিযান চালালেও তা নিয়ে বিশেষ আশাবাদী হতে পারছে না রাজ্যবাসী। আসলে রাজ্যবাসী রেজাল্ট চাইছে। বেশ কয়েক মাস আগে এভাবেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি তথা মেদিনীপুরের সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তাই দুর্নীতি কাণ্ডে মাথারা আদৌ ধরা পড়বেন কিনা সে প্রশ্নের উত্তর কী তবে কালের গর্ভেই থেকে যাবে?

Ongoing Searches

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × 3 =