কলকাতা: পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং আম জনতার পকেটে আগুন – এই ইস্যুতে তৃণমূল তৃণমূল কংগ্রেস বেশ কিছু আন্দোলন সংগঠিত করেছে। মূল লক্ষ্য নরেন্দ্র মোদি এবং বিজেপিকে আক্রমণ। এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কতটা জনমোহিনী তা প্রতিষ্ঠা করা। একই আন্দোলন সংগঠত করেছে রাজ্য বামফ্রন্টও। আন্দোলনের অভিমুখ এবং লক্ষ্য একই দিকে। কিন্তু, রাস্তার উপর থেকে শান্তিপূর্ণ বাম আন্দোলনের কর্মীদের গ্রেফতার করে লালবাজারের সেন্ট্রাল লক-আপে পুড়েছে। অথচ একই ইস্যুতে কোভিড বিধি না মেনে মাচা বেঁধে বিক্ষোভ দেখিয়েছে তৃণমূল। পুলিশ নীরব। এই বিষয়টি বারবার জনসমক্ষে তুলে ধরতে চাইছে সিপিএম। কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কতটা সৎ তৃণমূল তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে বলে মনে করে বাম গুলি ও সিপিএম। বাম আন্দোলনকে রুখতে রাজ্য সরকার এবং তার পরিচালত পুলিশ নির্লজ্জ দলীয় পক্ষপাতিত্বে অবতীর্ণ হয়েছে বলে মনে করে বামফ্রন্ট। বামফ্রন্টের প্রকাশিত বিবৃতিতে তা রয়েছে।
ইতিমধ্যে সিপিএম দাবি তুলেছে, ধার-দেনা, কর্মহীন এবং উন্নয়নহীন একটি রাজ্যে বিধানপরিষদ স্থাপন প্রয়োজন ঠিক কেন? প্রশ্ন তুলেছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র। তিনি বলেছেন, “মঙ্গলবার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় উচ্চকক্ষ অর্থাৎ বিধান পরিষদ গঠনের পক্ষে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে। রাজ্যবাসীর স্বার্থ এবং রাজ্যের বর্তমান আর্থ-সামাজিক প্রয়োজনীয়তাকে বিবেচনা না করে সরকারপক্ষ সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে এই প্রস্তাব পাস করিয়েছে।”
ইতিহাস উল্লেখ করে সূর্যবাবু দেখিয়েছেন কেন বিধান পরিষদের পুনস্থাপনায় বিরোধিতা করছে সিপিএম। তিনি বলেন, “পশ্চিমবঙ্গেও স্বাধীনতার পরে বিধান পরিষদ ছিল, কিন্তু আইনসভার কার্যপ্রণালীতে তার কোনো কার্যকরী ভূমিকা ছিল না। ১৯৫২ থেকে পরবর্তী ১৭বছরে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় ৪৩৬টি বিল পাস হয়েছিলো, তারমধ্যে মাত্র দুটি বিল সংশোধিত হয়েছিলো বিধান পরিষদে। ১৯৬৯ সালে যুক্তফ্রন্ট সরকার পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় সর্বসম্মতিক্রমে প্রস্তাব নিয়ে বিধান পরিষদ তুলে দেয়।”
সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক আরও জানান, “২০১১ সালে রাজ্যে তৃণমূল সরকার গঠিত হওয়ার কয়েক মাসের মধ্যেই মুখ্যমন্ত্রী বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু তখন বিধানসভায় বামফ্রন্টের যুক্তিপূর্ণ বিরোধিতার মুখে তিনি পিছু হঠতে বাধ্য হয়েছিলেন। এখন পুনরায় কোনো যুক্তি ছাড়াই বিধান পরিষদ ফিরিয়ে আনার প্রস্তাব পেশ করে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে পাস করালেন।” বামফ্রন্ট মনে করছে তৃনমূল এখানে কোনও বিরোধী রাজনৈতিক শক্তি চাইছে না। সেকারণেই, পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি এবং আম জনতার পকেটে আগুন – এই ইস্যুতে আন্দোলন করতে নামলেই বামফ্রন্টকে অবদমিত করার চেষ্টা করছে পুলিশ।