তথাগতকে নিয়ে চিন্তা বাড়ছে দিলীপের? কোন পথে বঙ্গ বিজেপি?

তথাগতকে নিয়ে চিন্তা বাড়ছে দিলীপের? কোন পথে বঙ্গ বিজেপি?

 

দেবময় ঘোষ: বঙ্গ রাজনীতিতে তথাগত রায়ের পুনরাগমনে দিলীপ ঘোষের চিন্তার কারণ নেই। কারণ, প্রায় চার বছর রাজ্য বিজেপি সভাপতির দায়িত্ব সামলাচ্ছেন তিনি। দিলীপ শুধু রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখই নন, এই বঙ্গে আগ্রাসী হিন্দুত্বের 'পোস্টার বয়'। গ্রাম বাংলার একটি বড় অংশের মানুষ মনে করেন, দিলীপ তাদের মনের কথা বলেন। শব্দগুলি অনেক সময় অনেকের পছন্দ হয় না। কিন্তু, দিলীপের জনপ্রিয়তা কম হয়নি। কেন্দ্রীয় বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব মনে করে, পশ্চিমবঙ্গে পার্টির মুখ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছে দিলীপ ঘোষ। অযথা, তার বিকল্পধারা বইয়ে দেওয়ার কোনও দরকার নেই।

মুকুল রায় বিজেপির সংগঠন তৈরির কাজ করছেন। মুকুলের কার্যপদ্ধতিতে ব্যাঘাত ঘটাতে চায় না পার্টি। তার সঙ্গে দিলীপের সম্পর্কের ঊর্ধ্ব ও নিম্নগামীতা রয়েছে। তবে, তা বড় করে দেখতে চায় না কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের পর শহীদ মিনারের সভায় দাঁড়িয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলে গিয়েছেন, মুকুল রায় দলের জন্য অসাধারণ কাজ করেছেন। মুকুলের সাংগঠনিক দক্ষতা এবং দিলীপের কঠোর ভাষণ ও পরিশ্রমের মাধ্যমে রাজ্য বিজেপির 'মুখ' হয়ে ওঠাকে হাতিয়ার করেই এগোতে চাইছে বিজেপি।

তথাগত রায় অবশ্য রাজ্য বিজেপিতে বাড়তি শক্তি যোগ করবেন তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্র সম্পর্কে তার জ্ঞান প্রশ্নাতীত। বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপালের দায়িত্বে ছিলেন। উচ্চশিক্ষিত এবং কঠোর বক্তা তথাগত দীর্ঘদিন রাজ্যের সংগঠন সামলেছেন। বিজেপির প্রাক্তন রাজ্য সভাপতিও। রাজনীতি ও গেরুয়া রাজনীতি তার চর্চার বিষয়। এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে তার মন্তব্য যে একাধিকবার 'ভাইরাল' হয়েছে তা কেন্দ্রীয় বিজেপির নজর এড়িয়ে যায়নি। সেক্ষেত্রে রাজ্য বিজেপির হয়ে রাজনৈতিক আদর্শের ভিত্তিতে সওয়াল করার জন্য তিনিই যোগ্য ব্যাক্তিত্ব, তা নিয়ে সন্দেহ নেই।

তথাগত রায় রাজ্যে ফিরে আসায় অনেকেই ভাবতে শুরু করেছেন, বিজেপি মুখ্যমন্ত্রীত্বের মুখ খুঁজে পেল। কিন্তু তারা হতাশ হবেন। ইতিমধ্যেই প্রতিষ্ঠিত মুখ দিলীপ ঘোষকে অন্তরালে পাঠাতে চাইবে না বিজেপি। মুকুল রায় উত্তরপ্রদেশ থেকে রাজ্য সভার সাংসদ হতেই পারেন। তার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিত্বের দরজা খুলতে পারে। কারণ, পার্টি তার অবদানকে অস্বীকার করে না। সর্বশেষ বিতর্ক হল, দিলীপ-তথাগত'র কী ব্যক্তিত্ব সংঘাত তৈরি হবে। তা, হওয়াটাই স্বাভাবিক। কিন্ত, বিজেপি একটি 'রিজিমেন্টেড' পার্টি। এই সংঘাতে দলের বিশেষ অসুবিধা হবে না।

রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের আশীর্বাদ রয়েছে দিলীপ এবং তথাগত'র উপর রয়েছে। বিজেপির অভ্যন্তরে যারা তথাগত'র আগমনে ভ্রু-কুঁচকেছেন, তারা হয়ত যাবেন কিনা জানি না, কেন্দ্রীয় পার্টি এবং তার ব্যক্তিগত ইচ্ছায় তিনি আবার বাংলার রাজনীতিতে অবতীর্ণ হয়েছেন। বিজেপি মনে করে, তথাগত'র বিশ্লেষণ জনতা মন দিয়ে শুনবে। বাংলায় গৈরিক আদর্শ প্রচারের দূত হিসাবে কাজ করবেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

16 − 13 =