কৃষি বিলের বিরুদ্ধে পথে নেমে কতটা লাভবান হবে বামফ্রন্ট?

কৃষি বিলের বিরুদ্ধে পথে নেমে কতটা লাভবান হবে বামফ্রন্ট?

নয়াদিল্লি: মোদি সরকারের কৃষি বিল। সারা রাজ্য জুড়েই তীব্র আন্দোলন সংগঠিত করার প্রস্তুতি শুরু করল সিপিএম। তবে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে এই আন্দোলন রাজ্যে কতটা রাজনৈতিক ফায়দা দিতে পারবে তা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। বিশেষ করে সেই সময় যখন রাজ্য বাসী বাম-কংগ্রেস জোটের ভূমিকা নিয়ে সন্দিহান। অনেক বিশেষজ্ঞ বলছেন, বাম-কংগ্রেসকে ভোট দিলে আদতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুবিধা। বিজেপি তাতে দুর্বল হবে। এদিকে, বাম-কংগ্রেস চরম মমতা বিরোধিতায় শামিল। এই পরিস্থিতিতে মোদি সরকারের কৃষি বিলের বিরোধিতায় সারা দেশ জুড়েই আন্দোলন সংগঠিত করবে সিপিএম। স্বাভাবিক ভাবেই কৃষি প্রধান পশ্চিমবঙ্গে এই আন্দোলন তীব্রতর করার ডাক দিয়েছে সিপিএম। কিন্তু, সিপিএমের লাভের গুড় পিঁপড়ে (পড়ুন তৃণমূল কংগ্রেস) খাবে না তো? মোদি সরকারের নীতির বিরুদ্ধে সিপিএম পশ্চিমবঙ্গে আন্দোলনে নামছে। যে কৃষকদের কথা ভেবে আন্দোলনে যাবে সিপিএম তাদের কত শতাংশ ভোগ বাম-কংগ্রেস শিবিরে যাবে।

যদিও, ১৬টি বামপন্থী ও সহযোগী দলের পক্ষ থেকে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুর বিবৃতি, ‘‘বামপন্থী ও সহযোগী দলসমূহের সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় মুখ্য আলোচ্যসূচী ছিল সংসদীয় রীতিনীতিকে ধংস করে সংসদের অভ্যন্তরে কৃষি সংক্রান্ত তিনটি বিল পাস সম্পর্কে। ফলত, কৃষক ফসলের এখনও যেটুকু দাম পেতে পারতেন তা হরণ করা হবে। একইসঙ্গে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য আইন হিসাবে যা ছিল তা রদ করায় দাম নির্ধারণের দন্ডমুন্ডের কর্তা হবেন বড় বড় কর্পোরেট ও ব্যবসায়ী মহল।’’

বিমানবাবু আরও বলেন, ‘‘কৃষকদের কর্পোরেটের ধার্য্য করা দামের ওপরে নির্ভর করতে হবে, এবং কৃষকের অভাবী বিক্রয় আরও বাড়বে। অন্যদিকে লোকসভায় বিল পাস হওয়ার পরে রাজ্যসভায় যেভাবে গণতান্ত্রিক রীতিনীতি লঙ্ঘন করে সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যদের পার্লামেন্টের সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবি নস্যাৎ করে ধ্বনিভোটে পাস করানো হয়েছে তা ন্যক্কারজনক। এর বিরুদ্ধে সারা ভারত কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির পক্ষ থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর দেশব্যাপী প্রতিবাদ দিবসের আহবান করা হয়েছে। অনুরূপভাবে এই কৃষক সংঘর্ষ সমন্বয় কমিটির পশ্চিমবঙ্গ শাখা রাজ্যের জেলায় জেলায় সর্বত্র, গঞ্জ বাজার এলাকায় কৃষকদের বিক্ষোভ ও রাস্তা অবরোধের কর্মসূচীর কথা ঘোষণা করেছে। এই কর্মসূচীকে এরাজ্যের সমস্ত ট্রেড ইউনিয়ন সংগঠন সমর্থন জানিয়েছে।১৬টি বামপন্থী ও সহযোগী দলের সভায় এই কর্মসূচীকে সফল করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছে।’’

একই সঙ্গে ১৬ দলের পক্ষ থেকে তৃণমূল কংগ্রেস ও বিজেপি বিরোধী সমস্ত রাজনৈতিক দলকে ২৫ সেপ্টেম্বরের প্রতিবাদী কর্মসূচীতে অংশগ্রহণ করতে আবেদন জানানো হচ্ছে। কলকাতা শহরে ২৫ সেপ্টেম্বর ট্রেড ইউনিয়ন ও অন্যান্য গণসংগঠন বিকেল পাঁচটায় ধর্মতলার লেনিন মূর্তির সামনে জমায়েত হয়ে যে মিছিলের আহবান করেছে তাকেও ১৬ দলের পক্ষ থেকে সমর্থন করা হয়েছে এবং এই কর্মসূচীতেও ১৬ দল সামিল হবে।যে বামদলগুলি যুক্ত, সেগুলি হল, সিপিআই(এম), সিপিআই, ফরওয়ার্ড ব্লক, আরএসপি, সিপিআই(এমএল) লিবারেশন, আরসিপিআই, মার্কসবাদী ফরওয়ার্ড ব্লক, ওয়ার্কার্স পার্টি, ভারতীয় বলশেভিক পার্টি, পিডিএস, সিপিআই(এমএল), সিআরএলআই, সিপিবি, এনসিপি, আরজেডি, এলজেডি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × 2 =