নয়াদিল্লি: শুধুমাত্র বিজেপির কর্মী সমর্থকদের টাকা পাইয়ে দিতে সাংসদ তহবিল আইন ভাঙলেন কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রকের মন্ত্রী শ্রীমতি স্মৃতি ইরানি। এখানেই শেষ নয়, বেশ কয়েক ধাপে সাংসদ তহবিল থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ পেয়েছে সারদা মজুর কামদার সমিতি। যারা নাকি গুজরাটের আনন্দ জেলার এক গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীনে বিভিন্ন উন্নয়ন মূলক কাজ করেছে। কিন্তু বাস্তবে সেই উন্নয়নের ছিটোফোটাও দৃশ্যমান হয়নি, এরপরেই আসরে নামেন আনন্দের জেলাশাসক, তবে সালটা ২০১৭। পঞ্চায়েত স্তরে যে উন্নয়নের নামে সাংসদ তহবিলের টাকা নিয়ে নয়ছয় করা হচ্ছে, তার রিপোর্টও জমা দেন তিনি। এতদিনে সেই দুর্নীতি প্রকাশ্যে এল। একই সঙ্গে দুর্নীতিতে নাম জড়িয়ে গেল মন্ত্রী স্মৃতি ইরানির।
অভিযোগ, তাঁরই কলমের খোঁচায় সাংসদ তহবিল থেকে সমবায় মারফৎ ৮৪.৫৩ লক্ষ টাকা একলপ্তে সারদা নামের মজুর কামদার সমিতির হাতে চলে আসে। যার সদস্যদের সবাই বিজেপির সক্রিয় কর্মী। এছাড়াও শুধুমাত্র বিজেপির কর্মী সমর্থকদের কথা মাথা রেখে ৫.৯৩ লক্ষ টাকা অনুমোদন করেন স্মৃতি। যে গ্রামে এত উন্নয়নের বহর দেখিয়ে টাকা পয়সার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে, আনন্দের সেই গ্রামটিই দত্তক নিয়ে রেখেছেন বস্ত্র মন্ত্রকের মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। অপরাধের বহর কিন্তু এতেও কমেনি। বেশকিছু দিন আগে ওই মজুর সংগঠনটির তরফে জানানো হয় তারা গ্রামের পঞ্চায়েত অফিসটির সংস্কার করেছে। এই সংস্কার বাবদ খরচ হয়েছে ৪৫.২০ লক্ষ টাকা।
বলাবাহুল্য, খরচের হিসেবপত্র বোঝানোর আগেই সংস্থাটিকে পাওনাগন্ডা মিটিয়ে দেওয়া হয়। পরে কাগজপত্র ঘেঁটে দেখা যায় ভবনটির সংস্কার অনেক আগেই হয়ে গিয়েছে, আর সেজন্য সংসদ তহবিলের টাকাও আগে দেওয়া হয়েছিল। সরকারি জমিতে দেওয়াল, স্কুল তৈরি ও শ্মশানের সংস্কার করতে নটি গ্রামে কাজ করেছে সারদা, এমনটাই দাবি করা হয়। তবে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উন্নয়েনর ফিরিস্তি দিলেও কোনও জায়গাতেই একখানা ইটও গাঁথা হয়নি।এরপরেই আসরে নামেন কংগ্রেসের মুখপাত্র রণদীপ সিং সূরযেওয়ালা, তিনি স্মৃতি ইরানির এই জলের দরে অর্থ অনুমোদনের প্রমাণ হিসেবে অনেক তথ্য প্রকাশ্যে আনেন তাতে দেখা যায় যেসব প্রকল্পের জন্য একের পর এক টাকা বিলিয়ে গিয়েছেন স্মৃতি তা আসলে উন্নয়নের নামে বোকা বানাননোর প্রকল্প, যার কোনও বাস্তবায়নই হয়নি। এককথায় স্মৃতি ইরানি যে সাংসদ তহবিলের অর্থ অনুমোদন সংক্রান্ত আইন ভেঙেছেন তা জোর দিয়ে বলেন সূরযেওয়ালা।এবং স্মৃতির মন্ত্রী পদের অপসারণও দাবি করেন তিনি, উল্লেখযোগ্যভাবে বিষয়টি নিয়ে নীরব রয়েছে কেন্দ্র ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিজে। তাঁদের এই জোড়া নীরবতাই স্মৃতির আইনভাঙার কাজকে সিলমোহর দিচ্ছে সন্দেহ নেই।