চাই দু’মুঠো ভাত, কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামছে বামফ্রন্ট

চাই দু’মুঠো ভাত, কাজের দাবিতে আন্দোলনে নামছে বামফ্রন্ট

নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: রাজ্যে খাদ্য ও কাজের দাবিতে আন্দোলনকে জোরদার করতে চাইছে সিপিএম। ষাটের দশকের খাদ্য আন্দোলন সারা জাগিয়েছিল। করোনা, লকডাউনের জেরে রাজ্যের মানুষের অবস্থা খুবই খারাপ। পার্টির পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য কমিটির সভা শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই সভা হয় ভার্চুয়াল। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিমান বসু। পার্টির সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি সভায় অংশ নেন।

রাজ্য কমিটির সভায় সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে পার্টির কর্মসূচির পর্যালোচনা হয়। রাজ্য সম্পাদক সূর্য মিশ্র জানান, পার্টির কর্মতৎপরতা বেড়েছে। সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে এই দুঃসময়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন পার্টি ও গণসংগঠনের কর্মীরা। একই সঙ্গে পার্টিকে সাংগঠনিক ভাবে আরো সংহত করার কাজে গুরুত্ব দিতে হবে। বুথভিত্তিক সংগঠনকে প্রস্তুত করতে হবে। এখন থেকেই নির্বাচনের জন্য প্রাথমিক প্রস্তুতি শুরু করতে হবে। পার্টির স্বাধীন উদ্যোগ, বামপন্থীদের সঙ্গে যৌথ কর্মসূচি এবং রাজ্যে তৃণমূল-বিজেপি বিরোধী সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে সমবেত করেই আন্দোলনের কর্মসূচি পালন করতে হবে। রাজ্যে বিশেষ করে খাদ্য ও কাজের দাবিতে আন্দোলন গড়ে তোলার জমি তৈরি হচ্ছে। রাজ্য সম্পাদক সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে জনগণের কাছে সঠিক তথ্য ও প্রচার পৌঁছে দেবার কাজে আরো গুরুত্ব দেবার কথাও বলেন।

রাজ্য কমিটির সদস্যরা জানান, সাধারণ মানুষের জীবনে গুরুতর দুর্দশা নেমে এসেছে। মহামারীর প্রকোপ মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতা যেমন প্রকট হচ্ছে তেমনই কাজের আকাল দেখা দিয়েছে। জীবিকার সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। তৃণমূলের বিরুদ্ধে অসন্তোষ তীব্র হচ্ছে। বিজেপি তার সুযোগ নিয়ে মেরুকরণের পথে হাঁটতে চাইছে। এই অবস্থায় পার্টির সাম্প্রতিক সময়ের কর্মসূচিতে উল্লেখযোগ্য সাড়া পাওয়া গিয়েছে। সর্বভারতীয় প্রতিবাদের অঙ্গ হিসেবে কর্মসূচিতে ভালো অংশের মানুষকে সমবেত করা গেছে। স্থানীয় স্তরে শাসক দলের দুর্নীতির বিরুদ্ধেও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে।

আন্তর্জাতিক ও জাতীয় পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, মহামারী মোকাবিলায় ধনতন্ত্রের অক্ষমতা প্রকট হয়েছে। অর্থনৈতিক সঙ্কট তীব্র হচ্ছে। চীন বাদে সমস্ত দেশের অর্থনৈতিক বৃদ্ধি সঙ্কোচন হচ্ছে। ভারতে এই সঙ্কোচন বিরাট। এই পরিস্থিতিতে চার প্রধান সামাজিক দ্বন্দ্বই তীব্রতর হচ্ছে। জনগণের বিরুদ্ধে শাসক শ্রেণীর আক্রমণ তীব্রতর হচ্ছে। তার বিরুদ্ধে শ্রেণী সংগ্রাম গড়ে তোলাই দুনিয়ার সব দেশের কমিউনিস্টদের কাজ।

ইয়েচুরি বলেন, আত্মনির্ভর ভারতের নামে আত্মসমর্পণের ভারত তৈরি করা হচ্ছে। দেশের রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ বেসরকারী হাতে দিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ভারত হয়ে দাঁড়াচ্ছে দেশি-বিদেশি পুঁজির মালিকদের মুনাফা সর্বোচ্চকরণের খেলার মাঠ। শ্রেণী আক্রমণ তীব্রতর হচ্ছে। এর সঙ্গেই সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকে তীব্র করা হচ্ছে। সরকার সমস্ত ক্ষেত্রকে কুক্ষিগত করছে। স্বাধীন প্রতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। স্বাধীন বিচারবিভাগের বদলে সরকারের বিচারবিভাগ গড়ে তোলার চেষ্টা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 5 =