আজ বিকেল: সপ্তদশ লোকসভা নির্বাচনে নজিরবিহীন কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকলেও রিগিং, ছাপ্পা, খুনোখুনি, বোমাবাজি কোনও কিছু বাদ যায়নি।বুথের মধ্যে এমনও এজেন্টকে বসতে দেখা গিয়েছে ঠিনি মনেই করতে পারলেন না কোন দলের প্রতিনিধি। একইভাবে বুধ সভাপতি কোন প্রতীকের পাশের বোতাম চাপবেন তা ভোটারদের বার বার মনে করিয়ে দিচ্ছেন। প্রিসাইডিং অফিসার নাকি ফর্ম পূরণে এতটাই ব্যস্ত যে ভোটারদের প্রভাবিত করার বিষয়টি তাঁর নজরেই আসেনি। ইভিএমের সামনে ভোটারের সঙ্গেই পৌঁছে গিয়েছেন রাজনৈতিক দলের সমর্থক তাঁর নির্দেশে চলছে ভোটদান, সেদিকে কারও খেয়াল নেই। কাঁকিনাড়ায় বোমবাজি চলছে দফায় দফায়। প্রাথরপ্রতিমা, কুলতলি কোথাওই সংঘর্ষের বিরাম নেই। সাতদফার ভোটের শেষে বুথ ফেরত সমীক্ষা ঠিক কি বলছে একবার দেখে নিতে পারি।
রাজ্যের নটি কেন্দ্রের এদিনের নির্বাচনে শান্তিপূর্ণ শব্দটাকে উহ্য রাখাই ভাল, কেননা গন্ডগোলের মাত্রা এতটাই ভয়াবহ ছিল যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা মুহূর্তের জন্যও বিশ্রাম পাননি। যাদবপুরে তৃণমূলের ভোট লুট রুখেছেন বিজেপি প্রার্থী অনুপম হাজরা। আবার রায়দিঘিতে বহিরাগতদের সাহায্যে বিজেপির তাণ্ডব ছিল মারাত্মক। সাধারণ মানুষ তো বেলা চারটে পর্যন্ত ভোটকেন্দ্রের ধারেকাছে ঘেঁষতে পারেনি। উলটে মুড়িমুড়কির মতো বোমা পড়েছে। একই অবস্থা কুলতলি পাথরপ্রতিমায়। বারাসতের দেগঙ্গার বেশ কয়েকটি জায়গায় মারধর, বোমাবাজি, গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া থেকে শুরু করে বিজেপি ও তৃণমূল সমর্থকদের মদ্যে সংঘর্ষ মারধরের ঘটনা ঘটেছে। কলকাতায় যাদপপুরে ভোটপ্রক্রিয়াই ছিল ঢিমে তালে, এতে বেশ সমস্যা হয়। মুদিয়ালিতে প্রথমে তৃণমূল প্রার্থী মালা রায়কে ভোটকেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ানরা তাঁকে ভেতরে ঢুকতেদেননি। পরে কমিশনে নালিশ গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এককথায় বলা যেতে পারে সাতদফা তথা শেষ দফার ভোট এরাজ্যে বেশ হ্যাপিনিং হয়ে রইল। সেই মাত্রাকে বাড়িয়ে দিল কাঁকিনাড়ার উপনির্বাচনের অশান্তি।
বাংলায় ভোট করানোর নামে কমিশন প্রহসন করছে, এই কথাটা খণ্ডনের সময় এদিন হয়ে গিয়েছে। ভোটে রিগিং, ছাপ্পা দেওয়া, মারামারি অভিযোগ সেই বাম আমল থেকে চলে আসছে। বাসিন্দারা প্রাণের ভয়ে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে ভোটকেন্দ্রে যেতে পারছেন না। তারপরেও বলতে হবে রাজনীতির কারবারিরা সবকিছু স্বচ্ছ দেখেন? আর কমিশন যে সাধারণমানুষের করের টাকায় এতবড় রাজসূয় যজ্ঞ পরিচালনা করল তা তো ফলদায়ক হল না কোনও দিক থেকেই। না রোখা গেল দুর্ীতি, না অশান্তি। সেই বোমা গুলি ইটবৃষ্টি, সঙ্গে খুনোখুনি। এরপরেও মানুষ ভোট নিয়ে আগ্রহী হবেন কিনা তা সন্দেহের অবকাশে পরিণত হচ্ছে ক্রমশ।