দেবের দুর্গে ভাঙছে তৃণমূল, শিলাবতীর পারে জমছে ক্ষোভ

ঘাটাল: বাঁধ ভেঙেছে শিলাবতীর। ভয়াবহ ভাঙন এড়াতে পারছে না তৃণমূল। ৫০০ফুট চওড়া করে ভেঙে গিয়েছিল শিলাবতীর বাঁধ। ৭৫ফুট গভীর করে রাক্ষসী মূর্তি নিয়ে বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে দিয়েছিল শিলাবতী। নদী এখন শান্ত। বাঁধের ঢের নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শিলাবতী। এই নদী দেখে বোঝার উপায় নেই, কেমন রুদ্ররূপ সেদিন দেখেছিল প্রতাপপুর। নদীবাঁধ এখন চলনসই, মেরামতি করে দিয়ে

দেবের দুর্গে ভাঙছে তৃণমূল, শিলাবতীর পারে জমছে ক্ষোভ

ঘাটাল: বাঁধ ভেঙেছে শিলাবতীর। ভয়াবহ ভাঙন এড়াতে পারছে না তৃণমূল। ৫০০ফুট চওড়া করে ভেঙে গিয়েছিল শিলাবতীর বাঁধ। ৭৫ফুট গভীর করে রাক্ষসী মূর্তি নিয়ে বাঁধ ভেঙে ভাসিয়ে দিয়েছিল শিলাবতী। নদী এখন শান্ত। বাঁধের ঢের নিচ দিয়ে বয়ে যাচ্ছে শিলাবতী। এই নদী দেখে বোঝার উপায় নেই, কেমন রুদ্ররূপ সেদিন দেখেছিল প্রতাপপুর।

নদীবাঁধ এখন চলনসই, মেরামতি করে দিয়ে গিয়েছে সেচ দপ্তর। ফের জল বাড়লে কী হবে, সেই ভাবনা যদিও আছে। কিন্তু একটা বিষয়ে প্রতাপপুর নিশ্চিত। বাঁধের থেকেও বড় ভাঙন আসছে শাসক দলের। চারদিনের মধ্যেই শাসকের কাছে সেই ভাঙন সর্বগ্রাসী চেহারা নিতে চলেছে। ‘‘তৃণমূলের ভোটটা ভাঙছে। আমরা তো চোখে দেখছি। ওরা নিজেরাই এসে বলে যাচ্ছে। শিলাবতীর বাঁধের মতোই ভাঙবে তৃণমূল’’, বলছিলেন প্রদীপ মণ্ডল। মনোহরপুর ২নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের হরিসিংপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে শিলাবতী। বাঁধের রাস্তার ধারেই ছোট মুদিখানার দোকান প্রদীপ মণ্ডলের। সেই দোকানে প্রায়ই আসেন গ্রামের মানুষ। কথাও হয়। সেই কথা থেকেই দোকানি একেবারে নিশ্চিত, ‘‘ওদের ১০০জনের মধ্যে ২৫জন চলে যাবে।’’ হরিসিংপুরের পাশেই প্রতাপপুর।

দু’বছর আগে এখানেই নদীবাঁধে ভয়াবহ ভাঙনে শীলাবতীর গতিমুখ কার্যত পালটে গিয়েছিল। নিমেষে ওই তল্লাটের ২৫টি বাড়ি ধূলিসাৎ হয়ে যায় জলের স্রোতে। সেই রেশ এখনও বয়ে নিয়ে যাচ্ছে গোটা এলাকা। দোতলা পাকা বাড়ির গোটা একতলা এখন মাটির নিচে। কোনোরকমে মাথা গুঁজে দিন কাটাচ্ছেন মালতী পাত্র। চোখের সামনে আস্ত একটা পাকি বাড়ি সম্পূর্ণ হেলে পড়ে আছে। সেই বাড়ির বাসিন্দারা এখন ধান জমিতে মাটির বাড়ি করে থাকছেন। ক্ষত এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন সরস্বতী পাত্র, ‘‘অঘ্রাণ মাসে পুজো করে ঘরে উঠেছিলাম। শ্রাবণ মাসে সেই বাড়ি বন্যায় মিশে গেল।’’ ২০১৭’তে ঘাটালে ভয়াবহ বন্যায় প্রতাপপুরের পানচাঁদায় কপ্টার উড়িয়ে এসেছিল বায়ুসেনা। সেদিনের কথা স্পষ্ট মনে আছে বিমল মণ্ডল, কমল মণ্ডলদের। ‘‘তিন রাত বাড়ির ছাদে আটকে। দু’পাশ দিয়ে প্রচণ্ড শব্দে বয়ে যাচ্ছে নদীর জল। বিকট আওয়াজ করে একের পর এক বাড়ি ভাঙছে। খাওয়া দাওয়া নেই। তিনদিন এইভাবে থাকার পর সেনাবাহিনীর হেলিকপ্টার আমাদের ছাদের ওপর আসে। মই সিঁড়ি নামিয়ে ৩৫জনকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়’’, ওই দিনের কথা বলতে গিয়ে এখনও গলা শুকিয়ে যায় বিমলের। সেদিনের বিপর্যয় থেকে পরিবার উদ্ধার হলেও তৃণমূলের উদ্ধার হওয়ার কোনও নিশ্চয়তা দিতে পারছেন না ৩৫সদস্যের মণ্ডল পরিবার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *