কলকাতা: নজিরবিহীন বললেও কম বলা হবে৷ চলতি লোকসভা নির্বাচনে এই প্রথম ভোটের হিংসা রুখতে ১৪৪ল ধারা জারি করল নির্বাচন কমিশন৷ পরবর্তী নির্দেশ না আসা পর্যন্ত ভাটপাড়ায় জারি থাকবে ১৪৪ ধারা৷
রবিবার ভাটপাড়া কেন্দ্রে উপনির্বাচনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে তৃণমূল-বিজেপি৷ রাজনৈতিক হিংসা পরিণত হয় ধর্মীয় অশান্তিতে৷ একে অপরের বিরুদ্ধে মুড়ি মুড়কি মতো বোমা-গুলি ছোড়া হয়৷ ভাঙা হয় পুলিশের গাড়ি৷ ভোটের আগে জ্বালানো হয় বেশ কয়েকটি গাড়ি৷ বারাকপুর লোকসভা নির্বাচনের রণক্ষেত্রের চেহারা নেয় গোটা ভাটপাড়া৷ এই পরিস্থিতিতে ভাটপাড়ায় ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশনের৷
আজ জগদ্দল থানায় দিনভর বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি।উপনির্বাচনের আগের দিন অর্থাৎ শনিবার রাতভর অশান্ত থাকে ভাটপাড়া। মদন মিত্রের অভিযোগ, জ্বালিয়ে দেওয়া হয় তাঁদের দুটি গাড়ি। রবিবার ভোটপর্ব শুরু হওয়ার পর কিছুক্ষণ শান্তির বাতাবরণ থাকলেও ফের অশান্ত হয় ভাটপাড়া। মুড়ি-মুড়কির মতো চলতে থাকে বোমাবাজি। ঘটনায় স্বতোপ্রনোদিতভাবে মামলা রুজু করেছে পুলিশ। ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ৩৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে আজ সকাল থেকে দফায় দফায় কাঁকিনাড়া স্টেশনে চলে আবরোধ।
১৪৪ ধারা ঠিক কী? আপনার কী করা উচিত?
নির্বাচনের সময়ে সংশ্লিষ্ট এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি হয়৷ এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে ১৪৪ ধারা জারি করে থাকে প্রশাসন৷ কিন্তু তা কি সাধারণ মানুষের জন্যেও প্রযোজ্য? আইন বলছে, কোনও এলাকায় শান্তি বজায় রাখার জন্য এই ধারা লাগু করা হয়। দাঙ্গা, লুঠপাঠ, হিংসার পরিস্থিতি হলে প্রযোগ করা হয়। অশান্তি হলেই ১৪৪ ধারা লাগু হবে এমন কোনও কারণ নেই। অশান্তির আশঙ্কাতেও তা লাগু করা হয়। এই ধারা ভারতীয় দণ্ডবিধির অন্তর্ভুক্ত নয়। এটি ১৯৭৩ সালের ক্রিমিনাল প্রোসিডিওর কোড (সিআরপিসি)-এর অন্তর্গত। এই ধারা লাগু হলে সেই এলাকায় দলবদ্ধভাবে চলাফেরা করা যায় না। এক সঙ্গে ৫ বা তার বেশি মানুষ প্রকাশ্য জায়গায় একত্রিত হতে পারে না। এই আইন ভঙ্গ করলে ৩ বছর পর্যন্ত কারাবাসের সাজা হতে পারে। কোথাও বিক্ষোভ প্রদর্শনের ঘোষণা থাকলে প্রশাসন তা বন্ধ করতে এই ধারা লাগু করতে পারে। অস্ত্র সহ কোনও সমাবেশের আগাম খবর পেয়েও লাগু হতে পারে ১৪৪ ধারা। ১৪৪ ধারা লাগু হলে তা মেনে চলাই সুনাগরিকের কর্তব্য। বিশেষ প্রয়োজনের ক্ষেত্রে প্রশাসনের অনুমতি নেওয়া উচিত।