নয়াদিল্লি: সামনেই লোকসভা নির্বাচন, বিজেপির পাশাপাশি অন্যান্য দলগুলিও চাইছে বেশি সংখ্যাক জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসতে। বিজেপিকে আটকাতে সামনে আসছে নাগরিকত্ব বিল, যা নিয়ে বেশ কয়েকমাস আগে পর্যন্ত উত্তপ্ত ছিল গোটা দেশ, আর আগুনের খনি হয়ে উঠেছিল উত্তরপূর্বের সবুজ রাজ্য অসম। একইভাবে রোহিঙ্গা সমস্যাও ফেলে দেওয়ার নয়। আসলে গোটা বিশ্বের প্রায় প্রত্যেকেই প্রতি মুহূর্তে লড়াই করে চলেছে, বেঁচে থাকার লড়াই। পরিচয়ের লড়াই, সে কে, কোন দেশের নাগরিক ইত্যাদি ইত্যাদি, নাগরিকত্ব আজ শুধু রোহিঙ্গা বা অসমিয়াদের সমস্যা নয় আজ বিশ্ববাসীর অন্যতম চাহিদা।
নিজের জন্মভূমি যখন অশান্ত হয়ে ওঠে তখন মানুষ খাদ্য বস্ত্র আর নিশ্চিন্তের বাসস্থানের জন্য বহির্বিশ্বের দিকে নজর দেয়। সীমান্তে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে কখন শরনার্থীদের জন্য খোলা হবে দরজা, রিফিউজি ক্যাম্পে মিলবে ঠাঁই, দুবেলা অন্ন জুটবে চাইলে চাকরিও। তাই প্রতিবছর এশিয়া ও আফ্রিকা থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে শরনার্থী আসে ইউরোপ সীমান্তে, নিশ্চিন্তের আশ্রয় ও খেতে পাওয়ার প্রত্যাশায়। মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়া যখন অশান্ত হল তখন মানুষ ইউরোপের বিভিন্ন সীমান্তে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকত অপেক্ষার প্রহর গুনত এই বুঝি সেই সুযোগ এল। চোখে কত আশার ঝিলিক এমনও অনেক শরনার্থী আসেন যাঁরা ফ্রান্সের এক সীমান্ত দিয়ে ঢুকে ইংলিশ চ্যানেল পেরিয়ে ব্রিটেনে যেতে চান। একটু ভাল থাকার আশায়, যুদ্ধবিগ্রহ, অশান্ত জন্মভূমি, বোমা বারুদ কার্তুজের গন্ধ ভুলে একটু শান্তি তারজন্য দিনের পর দিনের অপেক্ষা চলে। ভাল থাকার অপেক্ষা।
হন্ডুরাসের সবহারানো মানুষ গুলি নতুন করে বাঁচার আসায় মেক্সিকোতে জড়ো হয়, সেখান থেকেই সীমান্ত পেরিয়ে প্রবেশ করা যাবে সব পেয়েছির দেশ মার্কিন মুলুকে। একবার ঢুকে পড়তে পারলেই হল. তবে বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরোতে গিয়ে কত কীই না করতে হয় এই মানুষগুলিকে। কী আর করা যাবে, যারা আগেই মাথার ছাদ, পায়ের তলার মাটি আর পরিচয় হারিয়েছে, তাদের আর ভয়, তাইতো পণ্যবাহী ট্রাক থেকে শুরু করে মালগাড়ি সবেতেই নিজেদের আশ্রয় খুঁজে নেয় এই মানুষগুলি। তারপর সীমান্ত প্রহরীর হাতে ধরা পড়ে ঠাঁই মেলে ক্যারাভ্যানে। সেই ক্যারাভ্যান করে সোজা পাগলা গারদে অথবা জেলে, কিছুদিন সেখানে থাকার পরই মুক্তি, হোক না দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক তবুও তো পরিচয় মিলল। অনেকখানি পথ হেঁটে আসার পর অপেক্ষার প্রহর শেষে আশ্রয়ের ঠিকানা।