কলকাতা: সারদা রিয়েলিটি মামলায় আগাম জামিন পেলেও আদৌ কি পুরোপুরি স্বস্তি পেলেন রাজ্যের গোয়েন্দাপ্রধান রাজীব কুমার? সিবিআই সূত্রে খবর, তারা এখনই হাল ছাড়তে নারাজ৷ সুপ্রিম কোর্টে নতুন করে মামলা দায়ের পর এবার নতুন হাতিয়ার সামনে আনতে চলেছে সিবিআই!
কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে ইঙ্গিত, কলকাতার কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়ের কপি খতিয়ে দেখে ইতিমধ্যেই শীর্ষ আদালতে পিটিশন দাখিল করেছে সিবিআই৷ আগাম জামিনের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে মামলা ঠোকাক পর রাজিব কুমারের নামে রোজভ্যালি তদন্তের খাতা খুলতে চলছে সিবিআই৷ রোজভ্যালির তদন্তে আরও জোর দিতে চাইছে সিবিআই৷ এই মামলাতেও ইতিমধ্যে দু’বার জিজ্ঞাসাবাদ জন্য তলব করে নোটিশ পাঠানো হয়েছে শীর্ষ এই আইপিএস কর্তাকে৷ তিনি হাজিরা দেননি৷
এর আগেও ফেব্রুয়ারি মাসে শীর্ষ আদালতে সিবিআইয়ের পক্ষ থেকে যে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছিল, সেখানে রাজীব কুমারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা৷ তাঁর পুলিশ কমিশনারের মধ্যে বসে কীভাবে বছরের-পর-বছর রোজভ্যালি প্রতারণা ব্যবসা চালিয়ে গেল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল সিবিআই৷ তদন্তের ক্ষেত্রে রাজীব কুমার অসহযোগিতা করেছিলেন বলে অভিযোগ কেন্দ্রীয় গোয়েন্দাদের৷
অভিযোগ, বিশেষ তদন্তকারী দল সিটের অন্যতম শীর্ষ কর্তা সত্বেও রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রোজভ্যালির বিরুদ্ধে হওয়া সম্পর্কে কোনও তথ্য সিবিআইকে দেওয়া হয়নি৷ সেই কারণে সিবিআইকে ওড়িশার একটি আদালতে মামলা শুরু করতে হয়৷ সিবিআইয়ের আধিকারিকের একাংশের দাবি, রোজভ্যালির তদন্তের তথ্য গোপন করেছেন৷ এবং সিবিআইকে তথ্য দিয়ে অসহযোগিতা করেছেন৷ তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে সিবিআইয়ের হাতে৷ সেই কারণেই রাজীব কুমারকে সিবিআই দু’বার বয়ান রেকর্ড করার জন্য ডেকে পাঠানো হয়৷ অথচ সারদা মামলা মামলার মতো তিনি নোটিশ পেয়ে হাজিরা এড়ান বলে সূত্রে খবর৷ তদন্তকারীদের ইঙ্গিত, অসহযোগিতার এরকম একাধিক জোরালো প্রমাণ রয়েছে সিবিআইয়ের হাতে৷ তদন্তকারীদের একাংশের ইঙ্গিত, চিটফান্ড মামলার তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যেতে রাজীব কুমারকে হেফাজতে নেওয়া জরুরি৷ সেই ক্ষেত্রে রোজভ্যালি মামলা তাদের বড় হাতিয়ার৷
আইনজীবীদের একাংশের একাংশ মনে করছেন, সারদা মামলায় আগাম জামিন নিশ্চিত হলে রোজভ্যালি মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করতে চাইলেও কোনও আইনি বাধা নেই৷ তবে তাঁরা অবাক হয়েছেন, কেন সিবিআই রাজীব কুমারকে আগাম জামিন পাওয়ার আগে গ্রেপ্তার করতে পারল না! বৃহস্পতিবার আলিপুর আলিপুর আদালতে হাজিরা দিয়ে তাঁর আগাম জামিন নিশ্চিত করেছেন৷ এরপর অল্প সময়ের জন্য যান ভবানী ভবনে নিজের অফিসে৷ শুক্রবার থেকে রাজ্য সরকারি ছুটি পড়ে গিয়েছে৷ সিবিআই সূত্রে ইঙ্গিত, তদন্তকারীরা আইন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলছেন৷ তাঁরা গোটা বিষয়টি জানিয়েছেন দিল্লি সদর দুপ্তরে৷ দিল্লির মতামতের জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা৷