সন্ময় তো বিধানসভা ভাঙচুর করেনি, তাহলে কেন গ্রেপ্তারি? খোঁচা জয়প্রকাশের

কলকাতা: ‘মাননীয়া’র বিরুদ্ধে মুখ খুলে গ্রেপ্তার বর্ষীয়ান সাংবাদিক তথা প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় সমালোচনা করার দায়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ প্রদেশ কংগ্রেসের পার্টি অফিস থেকে বিশাল মিছিল কংগ্রেস কর্মীদের৷ অন্যদিকে, আজ দুপুরে ধৃত প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে

imagesmissing

কলকাতা: ‘মাননীয়া’র বিরুদ্ধে মুখ খুলে গ্রেপ্তার বর্ষীয়ান সাংবাদিক তথা প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কড়া ভাষায় সমালোচনা করার দায়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে কংগ্রেসের তরফে অভিযোগ তোলা হয়েছে৷ এই ঘটনার প্রতিবাদে আজ প্রদেশ কংগ্রেসের পার্টি অফিস থেকে বিশাল মিছিল কংগ্রেস কর্মীদের৷ অন্যদিকে, আজ দুপুরে ধৃত প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে যায় বিজেপির প্রতিনিধি দল৷ সেখানে পরিবারের সদস্যদের কথা বলেন বিজেপির সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার ও বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল৷

রাজ্য বিজেপি সহ-সভাপতি সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারকে আশ্বস্ত করে বলেন, মতাদর্শ গত পার্থক্য থাকলেও গণতন্ত্রের স্বার্থে কংগ্রেস নেতার পাশে আছে বিজেপি৷ জয়প্রকাশ আরও জানিয়েছেন, গণতন্ত্র রক্ষা করতেই তাঁরা কংগ্রেস নেতার বাড়িতে এসেছেন৷ কংগ্রেস নেতাকে যেসব ধারায় পুলিশ মামলা দিয়েছে, তা ঠিক নয় বলে দাবি তুলেছেন তিনি৷ বাংলার গণতন্ত্র ইস্যুতে মমতা বন্দোপাধ্যায়কে খোঁচা দিয়ে জয়প্রকাশ বলেন, সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভা ভাঙচুর করেননি৷ যারা বিধানসভা ভাংচুর করেছেন, তাঁরা বহাল তবিয়ৎয়ে ঘুরছেন৷ আর যারা মমতার সমালোচনা করছেন তাঁরা জেলে যাচ্ছেন৷ বাংলায় সমালোচনা বন্ধ করে তৃণমূল গণতন্ত্র শেষ করতে চাইছে৷ বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পল জানান, দলের ঊর্ধ্বে উঠে আমার আজ সন্ময়দার পরিবারের পাশে দাঁড়ালাম৷

সোশ্যাল মিডিয়ায় কট্টর সরকার বিরোধী বলে পরিচিত বর্ষীয়ান সাংবাদিক সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়৷ ইউটিউবে তাঁর একটি চ্যানেল রয়েছে৷ সেখানে জনপ্রিয়তা কুড়িয়েছেন এই প্রবীণ সাংবাদিক৷ ইউটিউব চ্যানেলে নিয়মিত রাজ্য রাজনীতির নিয়ে একাধিক ভিডিও পোস্ট করেন তিনি৷ সেখানে রাজ্য সরকারকে তুলোধোনা করে একাধিক ভিডিওয় মন্তব্য করতে দেখা যায় তাঁর ওই ইউটিউব চ্যানেলে৷ বৃহস্পতিবারও তাঁর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে একটি ভিডিও পোস্ট করেন৷ সাড়ে ১৭ মিনিটের ওই ভিডিও পোস্টটিতে এই ‘বঙ্গে তুমি নেই কে বলল? শুনুন বাংলার বার্তা’ নামের শিরোনামে তিনি রাজ্য সরকারকে কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন৷

অভিযোগ, ধারাবাহিকভাবে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনা করায় গত ২৩ সেপ্টেম্বর রাজ্য কংগ্রেসের মুখপাত্র তথা প্রবীণ সাংবাদিকের বিরুদ্ধে পুরুলিয়া সাইবার থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়৷ অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তাঁর বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়৷ শুক্রবার পুরুলিয়া আদালতে তাঁকে পেশ করেছে পুলিশ৷ দেওয়া হয় দু’দিনের পুলিশি হেফাজত৷ এর প্রতিবাদে শুক্রবার খড়দা থানার সামনে বিক্ষোভ দেখান কংগ্রেস ও বাম কংগ্রেসের কর্মীরা৷ বিশিষ্ট আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অরুণাভ ঘোষ-সহ রাজ্য নেতৃত্ব ওই বিক্ষোভে অংশ নেন৷

বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে ২০১৬ পুরভোটে নির্বাচিত হয়েছিলেন৷ তৃণমূলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি লেখালেখি করতেন৷ এটাই তো হওয়া উচিত৷ এটাই কী ওঁর অপরাধ? সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে কি অপহরণ করা হয়েছে? নাকি ওঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে? পুলিশ তো কোন কাগজ দেখাতে পারছে না৷ এরেস্ট ওয়ারেন্ট কোথায়? তাহলে আমরা কী বুঝবো, ওঁকে কি অপহরণ করা হল? ওঁর অপরাধটা কী? অপরাধ হচ্ছে, তৃণমূল জমানার পিসি-ভাইপো বিরুদ্ধে লেখালেখি করেছিলেন৷ তিনি সরব হয়েছিলেন পিসি-ভাইপোর বিরুদ্ধে৷ এটাই তো তাঁর অপরাধ! একই জিনিস ঘটেছে ত্রিপুরায়৷ কাজল চৌধুরী প্রাক্তন মন্ত্রীকেও ভুয়া মামলায় জড়ানো হয়েছে৷ প্রাক্তন মন্ত্রীদের বিরুদ্ধেও মামলা দেওয়া হয়েছে৷ ত্রিপুরাতে বিজেপি যা করছে, এখানে তৃণমূলও তাই করছে৷ এর মধ্যে কোনও পার্থক্য আমি দেখতে পারছি না৷’’

এদিন সোশ্যাল মিডিয়ায় সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়ের গ্রেপ্তারের প্রসঙ্গে মুখ খুললেন লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী৷ ফেসবুক পোস্টে তিনি লেখেন-

এই বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি সোমেন মিত্র জানিয়েছেন, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে মন্তব্য করায় সন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায়কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে৷ বাড়ি থেকে তাঁকে সন্ত্রাসবাদীদের মত তুলে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ তুলেছেন তিনি৷ একই সঙ্গে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অসহিষ্ণুতার অভিযোগ তুলেছেন প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *