সংসদের শুরুতেই বারবার কেন উঠছে জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ?

জরুরি অবস্থা: কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ (Emergency proclamation 1975 India) বুধবার লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পরেই ওম বিড়লা প্রায় পঞ্চাশ বছর আগেকার জরুরি অবস্থা জারির প্রসঙ্গ…

emergency proclamation 1975 India

জরুরি অবস্থা: কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ (Emergency proclamation 1975 India)

বুধবার লোকসভার স্পিকার নির্বাচিত হওয়ার পরেই ওম বিড়লা প্রায় পঞ্চাশ বছর আগেকার জরুরি অবস্থা জারির প্রসঙ্গ তুলে কংগ্রেসকে তীব্র আক্রমণ করেছেন। তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে,

“১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থা ঘোষণার তীব্র নিন্দা করছে এই পবিত্র সদন। তখন যাঁরা গণতন্ত্র রক্ষা করার জন্য সেই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে লড়াই চালিয়েছিলেন, তাঁদের সাধুবাদ জানাই।”

ঠিক তার একদিন পরেই, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার সংসদের যৌথ অধিবেশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুকেও বলতে শোনা গিয়েছে,

“১৯৭৫ সালে জারি হওয়া জরুরি অবস্থা ভারতীয় গণতন্ত্রের অন্ধকারতম অধ্যায়। সেটি ছিল সংবিধানের উপর সরাসরি সবচেয়ে বড় আক্রমণ৷”

রাষ্ট্রপতির ভাষণ

বিরোধীদের দাবি, যেহেতু রাষ্ট্রপতির ভাষণ সরকারপক্ষ লিখে দেয়, তাই সেটাই পাঠ করেছেন দ্রৌপদী মুর্মু। অন্যদিকে পরিকল্পিত ভাবে স্পিকারকে দিয়ে তার আগের দিন জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ তোলা হয়েছিল বলে কংগ্রেসের অভিযোগ। অর্থাৎ বিজেপির কৌশলেই এটা হয়েছে বলে বিরোধীদের স্পষ্ট দাবি। তবে যাই হোক না কেন, পরপর দু’দিন সংসদে যেভাবে প্রায় পঞ্চাশ বছর আগেকার জরুরি অবস্থার প্রসঙ্গ উঠে এসেছে, তা যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।

ধর্মীয় মেরুকরণকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য

কী কারণ থাকতে পারে সেখানে? রাজনৈতিক মহলের ব্যাখ্যা, লোকসভা নির্বাচনের প্রচারে ধর্মীয় মেরুকরণকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দিয়েছিল বিজেপি। কিন্তু তাতে দেশ জুড়ে ততটা লাভ হয়নি তাদের। সেখানে কংগ্রেস বারবার সংবিধান বাঁচানোর কথা বলে পাল্টা প্রচার করেছে। কংগ্রেস প্রচার করেছিল বিজেপি ৪০০ আসন পেলে দেশে আর সংবিধানের কোনও গুরুত্ব থাকবে না। সেই প্রচারে যথেষ্ট লাভ হয়েছে বিরোধীদের। বিজেপি একার জোরে এবার ম্যাজিক ফিগার ২৭২ ছুঁতে পারেনি।

আগামী দিনেও হিন্দুত্ব ইস্যু

১৯৭৫ সালের ২৫ জুন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী দেশজুড়ে জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। যা প্রায় দু’বছর বজায় ছিল। ঘটনাচক্রে সেই ২৫ জুনের ঠিক আগেই লোকসভায় সাংসদদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। সেই সূত্রে বিজেপি জরুরি অবস্থা জারির প্রসঙ্গ তুলে ধরে অভিযোগ করতে থাকে, আসলে কংগ্রেসই সংবিধান মানতে চায় না। সেই কারণেই অতীতে তাদের সরকার জরুরি অবস্থা দেশ জুড়ে জারি করেছিল। অর্থাৎ আগামী দিনে হিন্দুত্ব ইস্যু, অর্থাৎ ধর্মীয় মেরুকরণকে বিজেপি আর ততটা প্রচারের অভিমুখ করতে চায় না বলে মনে করা হচ্ছে।

উচ্চগ্রামে হিন্দুত্ববাদ সম্পর্কিত প্রচার

কারণ তাতে আপত্তি তুলতে পারেন এনডিএ জোটের অন্যতম দুই শরিক নীতিশ কুমার এবং চন্দ্রবাবু নাইডু। কারণ তাঁদের অনেকাংশেই নিজেদের রাজ্যে সংখ্যালঘু ভোটের উপর নির্ভর করতে হয়। মূলত সেই কারণেই হিন্দুত্ববাদ সম্পর্কিত প্রচারকে এখনই উচ্চগ্রামে তুলে ধরতে চায় না বিজেপি, এমনটাই মনে করেন রাজনীতির কারবারিরা। আর সেই সূত্রেই দেশ জুড়ে বিজেপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কংগ্রেসকে জরুরি অবস্থা জারির প্রসঙ্গ তুলে পাল্টা আক্রমণের চেষ্টা করছে গেরুয়া শিবির, এ বিষয়ে নিশ্চিত রাজনৈতিক মহল।

আরও পড়ুন- 

প্রশ্নফাঁস রুখতে এই রাজ্যের এত বড় পদক্ষেপ! কী আইন আনা হচ্ছে?

অত্যন্ত কৌশলী চাল! কোন কারণে রাহুলকে বিরোধী দলনেতা করল কংগ্রেস

মীনাক্ষীর নেতৃত্বে ভরসা রাখতে পারছে না সিপিএম? উঠছে নানা মত

অধীর-জল্পনা! তিনি কী এবার রাজ্যসভায়?

Politics: The 1975 emergency proclamation in India – a dark chapter in Indian democracy. Know the reasons behind its imposition and the impact on Indian politics.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *