এখনও নিখোঁজ WBCS অফিসার অর্ণব, মুখ খুললেন স্পেশাল অবজার্ভার

কলকাতা: ৩৬ ঘণ্টা অতিক্রান্ত৷ এখনও নিখোঁজ ভোটের দায়িত্বে থাকা নদিয়ার নোডাল অফিসার অর্ণব রায়৷ WBCS অফিসার নিখোঁজ রহস্যের পিছনে ‘ব্যক্তিগত’ কারণ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা স্পেশাল অবজার্ভার অজয় ভি নায়েকের৷ সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে৷ এই ঘটনার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই৷ ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে৷ ৩৬ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর শনিবার

এখনও নিখোঁজ WBCS অফিসার অর্ণব, মুখ খুললেন স্পেশাল অবজার্ভার

কলকাতা: ৩৬ ঘণ্টা অতিক্রান্ত৷ এখনও নিখোঁজ ভোটের দায়িত্বে থাকা নদিয়ার নোডাল অফিসার অর্ণব রায়৷ WBCS অফিসার নিখোঁজ রহস্যের পিছনে ‘ব্যক্তিগত’ কারণ থাকতে পারে বলে আশঙ্কা স্পেশাল অবজার্ভার অজয় ভি নায়েকের৷ সংবাদমাধ্যমে তিনি জানিয়েছেন, গোটা বিষয়টি পুলিশ তদন্ত করছে৷ এই ঘটনার সঙ্গে ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই৷ ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে৷

৩৬ ঘণ্টা নিখোঁজ থাকার পর শনিবার সকাল পর্যন্ত অর্ণব রায় নিখোঁজ রহস্যের জট এখনও কাটাতে পারেনি পুলিশ৷ WBCS অফিসার অর্ণবের গাড়ির চালকে জেরা করেও মেলিনি কোনও সমাধান সূত্র৷  নোডাল অফিসারের খোঁজে পুলিশের তরফে তদন্ত শুরু হলেও এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তারি কিংবা আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের কোনও খবর পাওয়া যায়নি৷

প্রায় দেড় দিন নিখোঁজ থাকায় অর্ণবের পরিবারের মধ্যে শুরু হয়েছে তীব্র উৎকণ্ঠা৷ আসানসোলের বাড়িতে বসে ছেলের অপেক্ষায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা৷ ছেলের খোঁজে নাওয়া-খাওয়া ভুলে পাথর অর্ণবের বাবাও৷ ছেলের ফেরার অপেক্ষায় গোটা পরিবার৷

ভোটের কাজে গিয়ে রাজকুমার রায়ের মতোই নিখোঁজ নদিয়ার নোডাল অফিসার অর্ণব রায়৷ ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷ অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আর কোনও খোঁজ মিলছে না নোডাল অফিসার অর্ণব রায়ের৷

শুক্রবার এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে বাংলার ভোটকর্মীদের অন্দরে৷ ভোটের কাজে গিয়ে নোডাল অফিসারের রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে নানা মহলে৷ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে শিক্ষক শিক্ষা কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ৷ নিন্দা জানিয়েছেন সরকারি কর্মচারী সংগঠনও৷ একাধিক শিক্ষক সংগঠনের তরফেও তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে৷ 

জানা গিয়েছে, নির্বাচনে কাজের জন্য বৃহস্পতিবার সকালেও বীপ্রদাস পালচৌধুরী পলিটেকনিক কলেজে যান অর্ণব রায়। এদিন দুপুরে খাওয়ার পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করতেন সেটিও রয়েছে। গাড়ির চালকের কাছে অর্ণবের কোনও খবর নেই৷ অর্ণব রায়ের সহকর্মীদের বক্তব্য, বহু জায়গায় খুঁজেও তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যাননি৷ দুটি মোবাইলও সুইচড অফ৷ রাতভর তাঁর খোঁজ না মেলায় অর্ণব রায়ের স্ত্রীকে নিয়ে কোতয়ালি থানায় যান জেলার এসপি ও জেলাশাসক৷ সেখানে তাঁরা একটি নিখোঁজ ডাইরি করেন৷

জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের অভিযোগ, অর্ণববাবুকে কোনও একটি বিষয় নিয়ে প্রশাসনের উচ্চপদস্থ এক কর্তা ধমক দেন। গত বুধবার তাঁকে ওসি ইভিএমের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে ডিপিআরডিও আজমল হোসেনকে সেই কাজ দেখতে বলা হয়। এই ঘটনার পর ওই অফিসারের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। যদিও অভিযোগের বিষয় মানতে চাননি নদীয়ার জেলাশাসক সুমিত গুপ্তা। নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকেও জানানো হয়েছে, ঘটনার পিছনে ভোট সংক্রান্ত কোনও বিষয় নয়, কোনও ব্যক্তিগত কারণ থাকতে পারে। পরিস্থিতি দেখে অন্য কাউকে ইভিএমের দায়িত্ব দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ওই ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। ওই দিন গভীর রাতে তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। শুক্রবার রাত পর্যন্ত তাঁর খোঁজ মেলেনি। তাঁর দু’টি মোবাইলও বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে বন্ধ। অর্ণববাবুর স্ত্রী অনীশা যশ নদীয়ায় জেলাশাসকের দপ্তরেই কর্মরত। তিনিও ডব্লিউবিসিএস (এক্সিকিউটিভ) অফিসার। স্বামীকে ফোনে না পেয়ে অনীশাদেবী জেলাশাসকের কাছে যান। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে খোঁজ চালিয়েও রাত পর্যন্ত অর্ণববাবুর খোঁজ না পেয়ে রাত ১টা নাগাদ কৃষ্ণনগর কোতোয়ালি থানায় গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। বৃহস্পতিবার মোবাইলের শেষ টাওয়ার লোকেশন শান্তিপুর পাওয়া গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, অর্ণববাবুর বাড়ি আসানসোলে। ২০১৬ সালে নদীয়ায় জেলাশাসক দপ্তরে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট হয়ে আসেন। এখানে তিনি ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে নোডাল অফিসার। লোকসভা নির্বাচনে ওসি ইভিএমের অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয় তাঁকে।

এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষক শিক্ষা কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, এই ঘটনায় তাঁরা চিন্তিত৷ বলেন, ‘‘কোনও প্রলোভনে পা নয়৷ ১০০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে জেলায় জেলায় তীব্র আন্দোলন জারি থাকবে৷ দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসুন সবাই৷ আমাদের দাবি যে কতটা বাস্তবসম্মত তা প্রমাণিত হচ্ছে৷’’

পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় গত ১৪ মে ইটাহারে ভোট গ্রহণের কাজে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন ৪৮ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসার রায়গঞ্জের বাসিন্দা রাজকুমার রায়। পরদিন ১৫ মে সন্ধ্যায় রায়গঞ্জের সোনাডাঙা এলাকায় রেললাইনের ধার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রাজকুমার রায়ের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলা৷ সিবিআই তদন্ত চেয়ে দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে৷ সেই মামলার সমাধান এখনও সময়নি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven + 19 =