কলকাতা: শুভেন্দু অধিকারীর ভাই তথা তমলুকের সাংসদ দিব্যেন্দু অধিকারীকে নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা তুঙ্গে। একই সঙ্গে বিসিসিআই সভাপতি সৌরভ গাঙ্গুলিও নতুন করে আবার জল্পনায় উঠে এসেছে। জোর আলোচনা চলছে – এরা দুজনেই নাকি ৭ মার্চ ব্রিগেড প্যারেড গ্রাউন্ডে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির হাত থেকে তুলে নেবেন বিজেপির পতাকা।
লোকসভা স্পিকারের সঙ্গে সাক্ষাৎ আগেই করে এসেছিলেন দিব্যেন্দু। তা নির্ধারিতই সময়েই হয়েছিল। দিল্লি যাওয়ার আগে তিনি একসঙ্গে ৭টি হাসপাতালের রোগীকল্যাণ সমিতির সভাপতি পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছিলেন দিব্যেন্দু অধিকারী। তমলুকের তৃণমূল সাংসদকে নিয়ে রাজনৈতিক মহলে জল্পনা আরও অনেক বেড়েছে এই কয়েক দিনে।
কাঁথির অধিকারী পরিবারের দুই পুত্র শুভেন্দু ও সৌমেন্দু ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। এবার কি দিব্যেন্দুর পালা? তাই নিয়েই জল্পনা চলছে। বাজেট অধিবেশনের আগে লোকসভার স্পিকারের কাছে আলাদাভাবে দেখা করতে সময় চেয়েছিলেন তমলুকের তৃণমূল সাংসদ। ঘটনাপ্রবাহ কিন্তু ইতিমধ্যেই নানান ইঙ্গিত দিয়েছে।
শুভেন্দু তৃণমূল ছাড়ার পর অধিকারী পরিবারের সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্কের রসায়ন বদলে গিয়েছে। পুর ও নগরোয়ন্নন দপ্তর থেকে নির্দেশিকা জারি করে কাঁথির পুরসভার প্রশাসকের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে সৌমেন্দু অধিকারীকে। এমনকী, দিঘা -শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও দলের পূর্ব মেদিনীপুর জেলা সভাপতির পদ খুঁইয়েছেন প্রবীণ তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারীও। এই দুটি বিষয় শুধু শুভেন্দুকেই দুঃখিত এবং বিরক্ত করেনি, দিবেন্দুকেও বেদনাসক্ত করেছে। সূত্রের খবর, দাদার শুভেন্দুর হাত ধরে ইতিমধ্যেই বিজেপিতে (BJP) যোগ দিয়েছেন সৌমেন্দু। দলবদল না করলেও, তৃণমূল নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ঘনিষ্ঠ মহলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অধিকারী পরিবারের কর্তা শিশির ও তাঁর সাংসদ পুত্র দিব্যেন্দু।
অন্যদিকে, সৌরভ গাঙ্গুলি বরাবর খবরে থাকেন। যখন খেলতেন তখন। এমনকি ক্রিকেট প্রশাসক হিসাবেও। বছরের শেষ সপ্তাহে সৌরভ আবার হেড-লাইনে। বিষয়টি রাজনীতির। জল্পনা বছর খানেক চলছে। তিনি নাকি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী। যতবার সেকথা শুনেছেন, ততবার তা লং-অনের উপর দিয়ে বাউন্ডারির বাইরে পাঠিয়েছেন সৌরভ। সম্প্রতি রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করেও একই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন। বল আবার বাউন্ডারির বাইরে গিয়েছে।
সৌরভের রাজনীতিতে যোগদানের প্রসঙ্গে বিভিন্ন জল্পনায় বঙ্গ বিজেপির প্রচ্ছন্নে উপকার হয়েছে। বাঙালি জনজাতির কাছে সৌরভ গাঙ্গুলির ‘ইমেজ’ গগনচুম্বী। আধুনিক জীবনে অমর্ত্য সেন, অভিজিৎ বিনায়ক ব্যানার্জির মত দুই নোবেলজয়ীকে বাদ দিলে সৌরভের মত আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বাঙালি আর ক’জন। তার উপর কলকাতার বুকে বেড়ে ওঠা সৌরভের ‘ঘরের ছেলে’ ইমেজ রাজনীতিতেও কার্যকরী। সেক্ষেত্রে, ভোটের মুখে সৌরভের বিজেপিতে যোগদানের জল্পনায় কিছুটা লাভবান গেরুয়া শিবির।
সৌরভ গাঙ্গুলি হয়ত না চাইলেও তাকে নিয়ে চলতি জল্পনায় কিছুটা লাভবান বিজেপি। সৌরভ বিসিসিআই সভাপতি। সেখানে সেক্রেটারি হলেন জয় শাহ। জয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র পুত্র। সৌরভের সঙ্গে জয়ের মধুর সম্পর্ক। তা নিয়ে বিজেপি বিরোধীরা নানা আলোচনাও করেছেন। প্রমাণ নেই, তবে শোনা যায় সৌরভ বিসিসিআই সভাপতি হয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’র হস্তক্ষেপে। এই সব জল্পনা কোথাও না কোথাও সৌরভের অলক্ষ্যে তাকে বিজেপির প্রচারের বিষয়বস্তু করে তুলেছে। সৌরভ তা লক্ষ্য করেছেন কিনা জানা নেই। তবে সৌরভ সত্যি বিজেপি তে যোগদান করছেন কি না তা জানতে ৭ মার্চ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।