নয়াদিল্লি: ফের শিরোনামে গান্ধী পরিবার৷ কুর্সি নিয়ে ফের কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের অন্দরে চেয়াক দখলের লড়াই! কার দখলে থাকবে সভাপতির চেয়ার? সোনিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী পদে থাকার মেয়াদ শেষ হতেই নতুন করে শুরু হয়েছে জল্পনা৷
আজ সকাল ১১ টায় শুরু হচ্ছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক৷ সূত্রের খবর, আজ অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী পদ থেকে ইস্তফা দিতে পারেন দলের সোনিয়া গান্ধী৷ কংগ্রেসের অন্দরের খবর, দলের ২০ জন পূর্ণ সময়ের নেতা চেয়ে চিঠি পাঠানো হয়েছে৷ দলের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়েও চিঠিতে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে বলে খবর৷ দলের হাল নিয়ে সভানেত্রী অসন্তুষ্ট বলেও নাকি শোনা যাচ্ছে৷ সূত্রের খবর, দলের পরিস্থিতি দেখে তিনি ইস্তফা দিতে চান৷ যদিও এই ধরনের কোনও চিঠির প্রসঙ্গ উড়িয়ে দিয়েছেন কংগ্রেস নেতারা৷ তবে ওয়ারকিং কমিটিতে সোনিয়া গান্ধীর ইস্তফা গ্রহণ করা হবে না বলে জানা গিয়েছে৷ তাহলে কে হবেন পরিবর্তী সভাপতি? ফের কি সোনিয়া না রাহুল? নেতৃত্ব বিভ্রাটে ফের জেরবার কংগ্রেস৷
২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির দায় মাথায় নিয়ে পদত্যাগ করেন তৎকালীন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী৷ তারপর সোনিয়া গান্ধী দলের অন্তর্বর্তকালীন সভানেত্রী হন৷ গত ১০ আগস্ট শেষ হয়েছে সোনিয়া গান্ধীর অন্তর্বর্তীকালীন সভাপতিত্বে মেয়াদ৷ সোনিয়া গান্ধী পার কে হবে পরবর্তী সভাপতি? সভাপতি পদ নিয়ে অনিশ্চয়তার অন্ধকারে কংগ্রেস৷ নতুন বনাম প্রবীণ নেতাদের দ্বন্দের আবহে অন্তর্বর্তী সভাপতি পদ নিয়ে চলছে জোর চর্চা৷ যদিও কংগ্রেস মুখপাত্র রণদীপ সূর্যওয়ালা জানিয়েছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সভানেত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেবেন না সোনিয়া গান্ধী৷
কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটি চাইছে, সে সোনিয়া হোক কিংবা রাহুল-প্রিয়াঙ্কা, স্থায়ী ভাবে সভাপতি নিয়োগ হোক৷ কিন্তু দলের অন্দরে নতুন করে সভাপতি পদ নিয়ে তৈরি হয়েছে বিভ্রান্তি। রাহুল গান্ধীর ইতিমধ্যেই লোকসভা নির্বাচনে হারের দায় নিয়েসভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দিয়েছেন৷ তাঁর মনমতো নেতৃত্ব না হলে তিনি সভাপতি দায়িত্ব নিতে আগ্রহী নন বলে কংগ্রেস সূত্রে খবর৷ রাহুল সভাপতি না হলে মেয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর হাতেই কি উঠবে পরবর্তী সভাপতিত্বের ভার? যদিও এই নিয়ে কোনও ইঙ্গিত দেয়নি হাইকমান্ড৷
সভাপতি পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব চলছে গান্ধী পরিবার অন্দরে৷ কোনোভাবেই সভাপতি পদ গান্ধী পরিবারের বাইরে চলে যাক, তাও চাইছেন সোনিয়া৷ রাহুল গান্ধীর পদত্যাগের পর সভাপতি পদে নিজের নামেই রেখে দিয়েছিলেন সোনিয়া৷ ওই সময় প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর নাম উঠলেও তা শেষ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি৷ এবার ভেঙেপড়া কংগ্রেসতে চাঙ্গা করতে রাহুল কিংবা প্রিয়াঙ্কা গান্ধী নিজেদের মতো করে সক্রিয় হয়ে উঠবেন কি না, সে দিকে তাকিয়ে গোটা কংগ্রেস৷ কেননা, টুইটারের বাইরে তাঁদের খুব একটা সরব হতে দেখা যায়নি৷
ইতিমধ্যেই দলের অন্দরে উঠতে শুরু করেছে নানান প্রশ্ন৷ কেননা সোনিয়া গান্ধীর বয়স বাড়ছে৷ তিনি খুব একটা সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করতে পারছেন না৷ বিজেপির বিরুদ্ধে লড়তে গেলে মাঠে ময়দানে নেমে কাজ করতে হবে৷ এটা বিলক্ষণ জানে গান্ধী পরিবার৷ কিন্তু পরিবারের অন্দরের বিতর্ক এখন গোটা কংগ্রেসকে প্রশ্নের মুখে ঠেলে দিচ্ছে৷ পুরোনো ধ্যান-ধারণা বদলে দলের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করতে এবার কি গান্ধী পরিবারের বাইরে সভাপতি পদ যাবে? সেই নিয়ে শুরু হয়েছে জোর চর্চা৷