বিজেপিতে শোভনের ভূমিকা ফের অনিশ্চিত, কোন পথে ‘কানন-ভবিষ্যৎ’?

বিজেপিতে শোভনের ভূমিকা ফের অনিশ্চিত, কোন পথে ‘কানন-ভবিষ্যৎ’?

কলকাতা: পরিবর্তনের অঙ্গীকার নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় দল পরিবর্তন করেছিলেন। তৃণমূল থেকে বিজেপিতে তিনি এসেছে বেশ কিছু মাস। পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক-প্রশাসনিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে তাঁর দল সম্প্রতি রাজ্য কমিটিতে পরিবর্তনও করে ফেলেছে।

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে সরকার গঠন। কিন্তু, শোভন কোথায়? যে রাজনৈতিক অভিজ্ঞতার মূল্য দিয়ে 'ক্ষুব্ধ' শোভনকে তৃণমূল থেকে বিজেপি আনা হয়েছিল- তা কি মূল্যহীন হয়েছে? এখন কী তাঁকে আর দরকার নেই? শোভন এখন কোন রাজনৈতিক দলের সদস্য? নাকি তিনি এখন দলহীন? সাংবাদিক সম্মেলনে উত্তর দিয়েছেন রাজ্য সম্পাদক দিলীপ ঘোষ। দিলীপ বলেন, ‘‘শোভন চট্টোপাধ্যায় দলেই আছেন।’’ অনেকেরই প্রশ্ন, শোভন কী রাজ্য কমিটিতে ঠাঁই পাবে। আপাতত, যা খবর রাজ্য কমিটিতে জায়গা হয়নি শোভন চট্টোপাধ্যায়ের।

দলবদল নিয়ে মাঝে মাঝেই সংবাদ শীর্ষে থাকেন কলকতার প্রাক্তন মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তাঁর দলবদল, ৯০ দশকে কলকাতা ফুলবলের দলবদলের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। দলবদলের বাজারে শোভনের সঙ্গে চিমা বা কৃষানু-বিকাশ-সুব্রত-সুদীপদের তুলনা টানা যেতে পারে। তবে একথা ঠিক, দুই নৌকায় পা দিয়ে রাজনীতিতে যে নজির সৃষ্টি করেছেন শোভন, তার তুলনা বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসে দ্বিতীয়টি আছে কিনা তা এখন গবেষণার বিষয়।

একটা সময় বাংলার রাজনীতি উচ্চ আদর্শে অধিষ্ঠিত ছিল। প্রবল রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার মাঝেও কিছু পাওয়ার জন্য 'ক্যাম্প' বলানোর কথা ভাবা যেত না। যদিও, 'অপমানিত' সমীর পুততুন্ড, সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় রা নিজের দল বানিয়ে সাফল্য পান নি। সাফল্য পেয়েছেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। কিন্তু, কিন্তু সম্মান বা ব্যাক্তিগত স্বার্থে বিরোধী শিবিরে নাম লেখানোর খুব বেশি নজির নেই। তা শুধু কলকাতা ফুলবল ময়দানেই দেখা যেত। কিন্তু, ময়দানেও  সুব্রত ভট্টাচার্যের মত খেলোয়াড় ছিলেন যারা পাওনা বা অপমান কে পাত্তা না দিয়ে ঘরের ছেলে হয়ে থেকে গিয়েছিলেন বছরের পর বছর।

দিন বদলেছে। বিধান সভায় বাম, কংগ্রেস বিধায়কের অনেকেই সুবিধা এবং পাওনার জন্য তৃণমূলে নাম লিখিয়েছিলেন। বিজেপিও বহু তৃণমূল , বাম, কংগ্রেস নেতা, বিধায়ক এবং সাংসদকে নিজের দলে আনতে সক্ষম হয়েছে। রাজনীতি এখন ময়দানের দল বদলের মতই। তবে, লেনদেন প্রকাশ্যে আসে না। শোনা গিয়েছিল, তৃণমূলের  কাছে শোভনের সাফ কথা, রত্নাকে তা তাড়ালে তিনি তৃণমূলে যাবেন না। অন্যদিকে, কলকাতা পুরসভা নির্বাচনে মেয়র পদেপ্রার্থী হিসাবে শোভনকে চায় বিজেপি। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা নাকি শোভন কে চেয়েছেন।

এই পরিস্থিতিতে শোভনের হাতে অস্ত্র হিসাবে রয়েছে পদ্মফুল। যা তিনি ঘাসফুলের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে পারেন। কিছুদিন আগেই প্রাক্তন সহকর্মী বর্তমানে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে সমালোচনা করেছিলেন শোভন। বলেছিলেন, উমপুন পরিস্থিতি আরও দক্ষ ভাবে সামলান যেত। অনেকেই ভাবছিলেন, শোভনের বিজেপির মেয়র প্রার্থী হওয়া পাকা। কিন্তু, রাজ্য কমিটির অবস্থান দেখে তা যদিও মনে হচ্ছে না এখন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *