কলকাতা: শোভন চট্টোপাধ্যায় বিজেপিতে শুরু কিরেছিলেন ধামাকা দিয়ে৷ বাংলার রাজনৈতিক মহলের সিংহ ভাগকে ফাঁকি দিয়েই বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে বিজেপিতে যোগ দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্নেহের কানন৷
দিল্লির দীনদয়াল উপাধ্যায় মার্গের সদর দফতরে শুরু করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নাম করে৷ তারপর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, কার্যকরী সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা, রাজ্যের পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন, শিবপ্রকাশ এবং সাধারণ সম্পাদক অরুণ সিং এর নাম করেন শোভন৷ এই কথাও মনে রাখা প্রয়োজন, পরবর্তীকালে প্রতিমুহূর্তেই রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের নাম উল্লেখ্য করেছেন শোভন৷
কিন্তু দিলীপ ঘোষের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক কোথাও শুরুর আগেই শেষ হয়ে গিয়েছে৷ রাজ্য বিজেপির সদর দফতর ৬ নম্বর মুরলিধর সেন লেনে প্রথমবার সাংবাদিক সম্মেলন করতে এসে মুকুল রায়ের নাম একবারের জন্যও বলেননি শোভন৷ বরং, দিলীপ ঘোষকে বারবার ‘দিলীপ দা’ বলে সম্মোধন করেছিলেন৷
কিন্তু, তৃণমূল কংগ্রেসে তাঁর এক সময়ের সহযোগী মুকুল রায় যেন বিজেপিতে শোভনের জীবনে আড়ালেই থেকে গেলেন৷ আজ যখন শোভনের তৃণমূলে ফিরে যাওয়ার তোড়জোড় শুরু হয়েছে, অনেকেই নেপথ্যে বলছেন, পুরোন সহকর্মী মুকুল রায়ের শরণাপন্ন হলে, শোভনের গায়ে এত পদ্ম কাঁটা ফুটত না৷ শোভন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষকে অনুসরণ করতে চেয়েছিলেন, কিন্তু, বান্ধবী বৈশাখীকে নিয়ে দিলীপের ‘ডাল-ভাত’ মন্তব্য শুরু থেকেই তাল থেকে দেয়৷ পরে আর দল-ভাত-দিলীপ মিলমিস হয়নি৷
অনেকেই বলছেন, শোভন বিজেপিতে আসার পর নারদা কাণ্ডের অভিযোগে সিবিআই জেরা করেছে৷ বিজেপি প্রত্যাশা করেছিল শোভন তৃণমূলের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেবেন৷ কিন্তু তা হয় নি৷ বরং, সিবিআই সূত্রে খবর একটি বিশেষ মহলকে সুরক্ষিত রাখতে তিনি তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে এক সুরেই বয়ান দিয়েছেন৷ বিজেপির সন্দেহ শোভন পুরোন দলের সঙ্গে তলায় তলায় সম্পর্ক রেখে চলেছেন৷ এক বিজেপি নেতা ইঙ্গিতপূর্ণ ভাবে বলেছেন, শোভনের মোবাইলের কলার টিউনে এখনো বাজে তোমার “আমার ভিতর ও বাহিরে , অন্তরে অন্তরে আছো তুমি হৃদয় জুড়ে …৷” কে হৃদয় জুড়ে আছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷