কলকাতা: বিজেপি যোগ দেওয়ার দু’সপ্তাহের মধ্যেই এবার দল ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন শোভন-বৈশাখী৷ বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বকে কাঠগড়ায় তুলে দুই সপ্তাহের মধ্যে বিজেপিতে যাওয়ার মোহভঙ্গ শোভন-বৈশাখীর৷ প্রয়োজনে পদত্যাগের পাঠাতে তৈরি তাঁরা৷
শনিবার সংবাদমাধ্যমে বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের নিষ্কৃতি দেওয়া হোক৷ প্রয়োজনে পদত্যাগ পাঠাতে পারি৷ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বিষয়টি জানিয়েছি৷ বারংবার অসত্য কথা বলা হচ্ছে৷ ভাবমূর্তি নষ্ট করা হচ্ছে৷ পুরনো চিটিতেই যদি বিজেপি পাই গলাতে চাই, তাহলে তো পুরানো দলেই থাকা যেত৷ শোভন চট্টোপাধ্যায়ও চান দল ছাড়তে৷’’
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার শর্ত হিসাবে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, দেবশ্রী রায় যেদিন বিজেপিতে যোগ দেবেন, সেটাই হবে তাঁর বিজেপিতে শেষ দিন! শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এহেন হুঁশিয়ারি পর দেবশ্রীকে নিরাশ করেছিল বিজেপি নেতৃত্ব৷ এবার সেই বিজেপি দেবশ্রীকে দলে যোগদানের তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে বলে খবর৷ আর এই সিদ্ধান্তের জেরেই শোভনবাবুর বিজেপিতে থাকা নিয়ে শুরু হয় জল্পনা৷
কেননা, বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন শোভনবাবুর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ঘিরেও তৈরি হয় বিতর্ক৷ বিতর্ক আরও বাড়িয়ে ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ শোভন-বৈশাখীকে ডাল-ভাতের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তিনি৷ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করে দিলীপ ঘোষের পাশে বসেই ডাল-ভাত মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন বৈশাখীদেবী৷ মুখ খুলেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে শোভন-বৈশাখীর গরহাজিরা নিয়ে নিয়ে শুরু হয় বিতর্ক৷ সেই নিয়েও দানা বেঁধেছিল বিতর্ক৷ আমন্ত্রণ পাননি বলে সভায় অনুপস্থিত থাকার কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হলেও শোভন-বৈশাখী নিয়ে বিজেপির অন্দরে বাড়তে থাকে নানান জল্পনা৷
শোভন-বৈশাখীর বিদ্রোহ রুখতে তড়িঘড়ি মাঠে নামতে কার্যত বাধ্য হন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা বিজেপির সহকারি পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনান৷ সূত্রের খবর, বুধবার রাতেই তিনি শোভনবাবুর গোলপার্কের বাড়িতে হাজির হন৷ সেখানে বৈশাখীদেবী ছিলেন বলে নানা মহল থেকে জানা গিয়েছে৷ সেখানেই অরবিন্দ মেনানকে ক্ষোভ উগরে দেন দু’জনেই৷ সূত্রের খবর, সেখানে দিলীপ ঘোষের ডাল-ভাত মন্তব্য নিয়েও ওঠে প্রশ্ন৷ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁদের ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আদতে তা যে কাজে আসেনি, তা আরও একবার প্রমাণিত হয়ে গেল শোভন-বৈশাখীর নয়া বিদ্রোহে৷