দেবময় ঘোষ: বিজেপি নেতা রাহুল সিনহা নিজের ‘কেন্দ্রীয় সম্পাদক’ পদ হারানোর পর সংবাদমাধ্যমে যে বিবৃতি দিয়েছেন তাতে খুশি নয় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ। সঙ্ঘের দক্ষিণবঙ্গ বিষয়টি ভাল ভাবে নেয়নি। রাহুল বাবুর মত বরিষ্ঠ এক নেতার থেকে এই ব্যবহার আশা করা যায় না – বিষয়টিকে এই ভাবেই ব্যাখ্যা করেছেন সংঘের দক্ষিণ বঙ্গের এক শীর্ষ ব্যক্তিত্ব।
সঙ্ঘ মনে করছে, রাহুলবাবুর বিবৃতিতে রাজ্য বিজেপি’র সম্মানহানি হয়েছে। বিজেপি বিরোধীরা, বিশেষ করে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস সুবিধা পেয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে এখন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। আর কয়েকমাস পরেই বিধানসভা নির্বাচনে। এই সময় এই আচরণ প্রার্থিত ছিল না। যদিও সঙ্ঘ মনে করে, সব কিছুই ঠিক হয়ে যাবে। রাহুলবাবুও বিজেপিতে নিজের দায়িত্ব পালনে অব্যাহত থাকবেন।
দুদিন আগেই রাহুল যে বিবৃতি দিয়েছেন তা শুনেছে সঙ্ঘ। ওই বিবৃতিতে রাহুল বলেছেন, ‘‘৪০ বছর বিজেপির সেবা এবং বিজেপির একজন কর্মী হিসাবে কাজ করে এসেছি। জন্ম লঙ্গ থেকে বিজেপির সেবা করবার পুরস্কার এটাই, যে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা আসছে। তাই আমাকে সরতে হবে। এর চেয়ে বড় দুর্ভাগ্যের কিছু হতে পারে না। আমি এর বাইরে আর কিছু বলব না। পার্টি যে পুরস্কার দিল, সেই পুরস্কারের পক্ষে ও বিপক্ষে আমি কিচ্ছু বলতে চাই না। আমি যা বলার ১০ থেকে ১২ দিনের মধ্যে বলব। এবং আমার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা ঠিক করব৷’’
কেন্দ্রীয় বিজেপি জাতীয় সম্পাদক পদে অনুপম হাজরাকে মনোনীত করেছে। বর্তমানে তিনিই রাজ্য থেকে একমাত্র জাতীয় সম্পদক। ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে দলে এসেছিলেন অনুপম। তৃণমূল কংগ্রেসের প্রাক্তন এই সাংসদ যুব তৃণমূল সভাপতি তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর সমালোচক। অনুপম নিজেই বলেছেন তার সঙ্গে বিবাদে জড়িয়ে পড়েই তৃণমূল ছেড়েছেন তিনি। কিন্তু, রাহুল সিনহা পদ থেকে অপসারণ মেনে নিতে পারেননি। তিনি ১০-১২ দিনের কথা বলেছেন। তার ওই কথাকে ভাল ভাবে নেয়নি সঙ্ঘ। সঙ্ঘের ওই শীর্ষ বাক্তিত্বেওর কথায়, ‘‘রাহুল সিনহা ওই কথা না বলতেই পারতেন। আর আগে যখন বিজেপি রাজ্য সভাপতি ছিলেন , তখনও ওই পদ থেকে যাওয়ার সময় উষ্মা প্রকাশ করেছিল। যদিও আশা রাখি কয়েকদিন পরে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু, তার ওই বিবৃতি বিরোধীদের হাতিয়ার হবে। যা তার দেওয়া উচিত হয়নি৷’’