বিহার ভোট: শরিকদ বিবাদে জেরবার বিজেপি, আসন ভাগাভাগি নিয়ে কষাকষি

বিহার ভোট: শরিকদ বিবাদে জেরবার বিজেপি, আসন ভাগাভাগি নিয়ে কষাকষি

 

তপন মল্লিক চৌধুরী : ভোটেরদিনক্ষণঘোষণার পর থেকেই আসন ভাগাভাগি নিয়ে বিহারেজোট শরিকদের মধ্যেদর কষাকষি শুরুহয়ে গিয়েছে।শাসক এনডিএ এবং বিরোধী জোটগুলি তো আছেই।আরও বেশি আসনের দাবিতে বিজেপি ও জেডিইউয়ের ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছে লোক জনশক্তি পার্টির প্রেসিডেন্ট চিরাগ পাসোয়ান। তাঁর পছন্দমতো আসন না দিলে মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের বিরুদ্ধে তিনি একাধিক প্রার্থী দেবেন বলে হুমকিও দিয়েছেন। ফলেচিন্তিত বিজেপি।

এদিকে, এলজেপি নেতা শাহনাওয়াজ কইফি জানিয়েছেন, চিরাগ বা তাঁর দল কারুর সঙ্গেই সমঝোতা করবে না।জোট ঘিরে আসন বন্টন নিয়ে এই দর কষাকষির মধ্যে কংগ্রেস আরজেডিকে জানিয়ে দিয়েছে ৭০ আসন না পেলে তারা এককভাবে লড়বে। আরজেডি কংগ্রেসকে ৫৮ আসন এবং বাল্মীকিনগর লোকসভা আসন ছাড়তে রাজী হয়েছে।অন্যদিকে, সিপিআই(এমএল) মোট ৫৩ টি আসনে লড়তে চেয়েছিল। কিন্তু আরজেডি ১২-র বেশি আসন দিতে রাজি হয়নি। অবশেষে ২০টি আসনে লড়তে রাজি হয়েছে সিপিআই(এমএল)।

এনডিএকে হারাতে একতার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও আরজেডি তাতে কান দেয়নি বলে দাবি সিপিআই(এমএল)-এর। আরজেডি সিপিআই(এম)-এর জন্য ২টি আসন এবং সিপিআই-কে ৬ আসন ছাড়তে রাজী হয়েছে। যদিও সিপিআই(এম) আরও বেশি আসনের দাবি জানিয়েছে। চিরাগের সঙ্গে বিজেপি প্রেসিডেন্ট জেপি নাড্ডার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আসন সমঝোতা নিয়েবৈঠক হয়েছে বিহার ভোটে বিজেপির নির্বাচনী দায়িত্বে থাকাদেবেন্দ্র ফড়নবিশের সঙ্গেও।জোট শরিক এলজেপি-র ক্ষোভ প্রশমন করাই ফড়নবিশের অন্যতম চ্যালেঞ্জ।

বিহার নির্বাচনের আগে বিজেপি-র সবথেকে বেশি মাথাব্যথা জোট শরিক এলজেপিকে নিয়ে৷ দ্রুত আসন বণ্টন নিয়ে সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে বিজেপি-কে চাপ দিচ্ছে তারা৷ ২৪৩ আসনের বিহার বিধানসভায় কোন ফর্মুলায় আসন সমঝোতা হবে, তা নিয়ে বৈঠকে দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। এবার এনডিএ জোটের পরিকল্পনা নিয়েবিহার নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করবেন অমিত শাহ। বিহার ভোটের রণকৌশন ঠিক করাই হবে মূল এজেন্ডা। তবে আসন ভাগাভাগিও যে আলোচনায় প্রাধান্য পাবে তাবলাই বাহুল্য। কারণ ইতিমধ্যেই এই নিয়ে শরিক অসন্তোষ জাগতে শুরু করেছে। নির্ঘন্ট ঘোষণার পর বিহারে বিধানসভা ভোটের দামামা বেজে গিয়েছে। করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বিহারে বিধানসভা নির্বাচন হবে। তার তোরজোর শুরু হয়ে গিয়েছে।

বিহার ভোটে প্রচার থেকে ভোটদান একাধিক ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। ভোট গ্রহণ হবে নিউ নর্মাল বিধি মেনেই। এই পরিস্থিতির মধ্যে বিধানসভা ভোটে এক ইঞ্চি জমি ছাড়তে নারাজ বিজেপি। তবে নীতীশকে মুখ করেই বিহারে ভোটে ছাপ ফেলতে চাইছেন অমিত শাহরা। আগেই জেপি নাড্ডা জানিয়েছেন নীতীশের নেতৃত্বে বিহারে ভোট করতে আপত্তি নেই তাঁদের। কিন্তু কী হবে রণকৌশল। তা ঠিক করতেই অমিত শাহের জরুরি বৈঠক। বিহারের বিধানসভা ভোটের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছেন তিনি। রণকৌশল নির্ধারণে বৈঠক নীতীশের নেতৃত্বে ভোট হলেও এনডিএ শরিকদের মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে দ্বন্দ্ব শুরু হয়ে গিয়েছে। কয়েকদিন আগেই চিরাগ পাসোয়ান এই নিয়ে উষ্মা প্রকাশ করে অমিত শাহকে চিঠি দিয়েছিলেন। তাঁরা জরুরি বৈঠকে বসছেন দিল্লিতে। তার আগেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন শাহরা।

বিজেপি নীতীশ কুমারকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী করে এগোতে চাইলেও এলজেপি-র চিরাগ পাসোয়ান তাঁর প্রবল বিরোধী৷ নীতীশ সহ জেডিইউ নেতাদের বিরুদ্ধে প্রার্থী দেওয়ার হুঁশিয়ারিও খোদ বিজেপি সভাপতিকে দিয়ে এসেছেন তিনি৷ এই পরিস্থিতিতে চিরাগকে বশে এনে ফড়নবিশ বিজেপি-কে বিহারে প্রত্যাশিত সাফল্য এনে দিতে পারেন কি না, আগামী ১০ নভেম্বর তা জানা যাবে৷ কারণ সেদিনই বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five − 1 =