কলকাতা: গোটা বিশ্বজুড়ে চলছে করোনা মহামারী৷ আতঙ্কে দিন গুনছেন সাধারন জনতা৷ কমেছে উপার্জন, অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ৷ সাধারণ জনগণ যখন কর্নার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন, ঠিক তখন ঢাকঢোল পিটিয়ে ২০২১ সালের নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল ও বিজেপি৷ দু’দলের ভার্চুয়াল বৈঠককে কেন্দ্র করে নতুন করে তপ্ত হতে শুরু করেছে বঙ্গ রাজনীতির ময়দান৷ ২১-এর নির্বাচনকে মাথায় রেখে দু’দলের অন্দরে শুরু হয়েছে ঘর গোছানোর পালা৷ কিন্তু তাতেই দেখা দিচ্ছে বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর ঘটনা৷ উল্লেখযোগ্য ভাবে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো নেতারা ঠিক যেমন বঙ্গ বিজেপির রাজ্য কমিটিতে স্থান করে নিয়েছেন, ঠিক তেমনই বাম-কংগ্রেসের ‘বহিস্কৃত’ নেতাদের রাজ্য কমিটিতে বড় দায়িত্ব দিয়েছে শাসক দল তৃণমূল৷ বিজেপি ও তৃণমূলে দলবদল করা নেতাদের গুরুত্ব ঘিরে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চর্চা৷
সম্প্রতি রাজ্য বিজেপির তরফে রাজ্য কমিটির ঘোষণা করা হয়৷ সেখানে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে নাম লেখানো একগুচ্ছ প্রভাবশালীকে বিজেপি তার রাজ্য কমিটিতে স্থান দিয়েছে৷ এবার ছিল তৃণমূলের পালা৷ আজ তৃণমূলের তরফে সংশোধিত রাজ্য কমিটির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে৷ সেখানেও দেখা গিয়েছে অন্য দল থেকে আসা নেতাদের গুরুত্ব৷
সূত্রের খবর, কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়া ওমপ্রকাশ মিশ্রকে তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দেওয়া হয়েছে৷ মূলত মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধী বলে টিভির পর্দায় পরিচিত অধ্যাপক ওম প্রকাশ ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ পদে৷ কিন্তু, গত বছর পুজোর আগে আচমকা দল বদলে তৃণমূলে লিখেছেন তিনি৷ বিধানসভায় তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূলে যোগ দেন কংগ্রেসের এই প্রবীণ নেতা৷ কংগ্রেস থেকে তৃণমূলের নাম লেখানোর পর এবার রাজ্য কমিটিতে সরাসরি স্থান করে নিলেন ওমপ্রকাশ৷
সিপিএম থেকে বহিস্কৃত রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় উল্লেখযোগ্যভাবে তৃণমূলের রাজ্য কমিটিতে স্থান পেয়েছেন৷ রাজ্য সম্পাদক পদও পেয়েছেন তিনি! সাম্প্রতিক রাজ্যসভা নির্বাচনে ঋতব্রত তৃণমূলের টিকিট পেতে পারেন বলে তৈরি হয় জল্পনা৷ কিন্তু শেষমেশ তা হয়নি৷ কিন্তু ২০২১ সালের বাংলা বিধানসভা নির্বাচনকে মাথায় রেখে এবার দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ পেলেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়৷ আলিপুরদুয়ার জেলার গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তাঁকে৷
কিন্তু এই ঋতব্রতকে নিয়ে বিতর্ক কম হয়নি৷ বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাসের পর প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে৷ এই নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় ঋতব্রতর অর্ধনগ্ন ছবি প্রকাশ করে দিয়েছিলেন অভিযোগকারিণী যুবতী৷ একদা মার্কসবাদের নীতি আওড়ে চলা ঋতব্রতর যৌনজীবনের কেচ্ছা প্রকাশ্যে আসতেই চরম অস্বস্তিতে পড়েছিল সিপিএম৷ পরে ঋতব্রতকে সাসপেন্ড করে সিপিএম৷ যদিও, এর আগে ঋতব্রতর বিরুদ্ধে সরাকরি আক্রান্ত করেছিলেন রেজ্জাক মোল্লা৷ যদিও তিনিও এখন সেই তৃণমূলে৷ যুবতীর সঙ্গে যৌন-কেচ্ছা বিতর্কের পর কিছুদিন আত্মগোপন করেন তরুণ এই নেতা৷ পরে সরাসরি তৃণমূলের যুক্ত হন সুবক্তা ঋতব্রত৷ ভোটের আগে এবার তৃণমূলে পেলেন গুরুদায়িত্ব৷