কলকাতা: আগামী ২৬ মার্চ রাজ্যের ৫ রাজ্যসভা আসনে নির্বাচনের ঘোষণা করেছে নির্বাচন কমিশন৷ ভোট ঘোষণার পরেই সব শিবিরেই প্রার্থী বাছাই নিয়ে শুরু হয়েছে তৎপরতা৷ রাজ্য থেকে কারা সংসদের উচ্চকক্ষে যাবেন তা নিয়েও চলছে জোর জল্পনা৷ বাম কংগ্রেসের জোট প্রার্থীর নাম নিয়ে যেমন আলোচনা হচ্ছে তেমনি ঘাসফুল শিবির থেকে নতুন কারা রাজ্যসভায় যেতে পারেন সেসব নামও ভাসিয়ে দেওয়া হচ্ছে দলের অন্দর থেকেই৷
এই পাঁচটি আসনে বর্তমানে সদস্য রয়েছেন ঋতব্রত ব্যানার্জি, যোগেন্দ্র নাথ চৌধুরী, ডক্টর কানোয়ার দ্বীপ সিং, মণীশ গুপ্ত এবং আহমেদ হাসান। আগামী দোসরা এপ্রিল এদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে৷ পরিসংখ্যান বলছে, খালি হতে চলা পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি তৃণমূল সহজেই জিততে পারে৷ পঞ্চম আসনে যদি জোট প্রার্থী দেয়, তাহলে জয় নিশ্চিত৷ তা না হলে লড়াই হতে পারে৷ এখনও পর্যন্ত যা সম্ভাবনা তাতে তৃণমূল শিবির থেকে দীনেশ ত্রিবেদি ও যোগেন চৌধুরীর রাজ্যসভায় যাওয়া নিশ্চিত৷ বাকি দুটি আসনের জন্য সুগত বসু, সুব্রত বক্সি, বিবেক গুপ্তা, মণীশ গুপ্ত, ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগ, মৌসম বেনজির নূরের নাম শোনা যাচ্ছে৷ তবে এঁদের মধ্যে থেকে যে কোনও দু’জন টিকিট পাবেন৷
তৃণমূলের একটি সূত্র বলছে, মণীশ গুপ্তকে ফের রাজ্যে ফিরিয়ে আনতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এবার রাজ্যসভায় তাঁকে না পাঠিয়ে ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে যাদবপুর থেকে আবারও মণীশ গুপ্তকে প্রার্থী করা হতে পারে৷ অনেকে আবার যাদবপুর কেন্দ্রে ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম নিয়েও চর্চা করছেন। তবে দীনেশ ত্রিবেদি ও যোগেন চৌধুরীর নাম মোটামুটি চূড়ান্ত৷ তবে তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতার কথায়, ‘কেউই চূড়ান্ত নয়৷ একমাত্র নেত্রীই বলতে পারবেন কারা কারা যাবেন৷ ফলে যে নামই সামনে আসুক না কেন, তার কোনও ভিত্তি নেই৷’
তৃণমূল শিবিরের যখন এই অবস্থা, তখন বাম কংগ্রেসের জোট প্রার্থী নিয়ে তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে৷ জোটপ্রার্থী হিসেবে সীতারাম ইয়েচুরিকে রাজ্যসভায় পাঠানো হতে পারে বলেই সূত্রের খবর৷ কিন্তু সেখানেও সমস্যা থাকছে৷ একাধিক কংগ্রেস বিধায়ক কংগ্রেসের কাউকে রাজ্যসভায় পাঠাতে ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন৷ বামেদের তা সমর্থন করতে হবে৷ এর আগে রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ও পরবর্তীকালে রাজ্যসভার নির্বাচন নিয়ে বামেদের আচরণে ক্ষুব্ধ কংগ্রেসের একটা বড় অংশ৷
সেই কারণে একাংশের দাবি, বাম প্রার্থী নয় কংগ্রেসের প্রার্থীকে রাজ্যসভায় পাঠানো হোক৷ উঠে আসছে একাধিক নাম৷ প্রথম নামই রয়েছে রয়েছে প্রিয়ঙ্কা গান্ধির নাম৷ যে নামে সমর্থন করতে বামেদের সমস্যা হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে৷ আবার সেই তালিকায় রয়েছেন দ্বিগ্বিজয় সিং, মীরা কুমার, জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, এমনকি আব্দুল মান্নানের নামও৷ এই নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রদেশ কংগ্রেস হাইকমান্ডকে তদ্বির করে চিঠিও পাঠিয়েছে৷ কংগ্রেস নেতারা স্বীকার করে নিয়েছেন, যাই সুপারিশ করা হোক না কেন দিল্লি থেকে যে নাম আসবে, সেটাই মানা হবে। তবে বাম নয়, প্রার্থী হবে কংগ্রেসের৷
আগামী ২৬ মার্চ দেশের ১৭টি রাজ্যের ৫৫টি রাজ্যসভা আসনে ভোটগ্রহণ করা হবে বলে জাতীয় নির্বাচন কমিশন এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে৷ নির্বাচনের জন্য ৬ মার্চ বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে৷ মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ১৩ মার্চ৷ ১৬ মার্চ সেগুলি পরীক্ষা করা হবে৷ ১৮ মার্চ প্রার্থীপদ প্রত্যাহারের শেষ দিন৷ ২৬ মার্চ সকাল ন'টা থেকে বিকেল চারটে পর্যন্ত রাজ্যের বিধানসভায় ভোট গ্রহণ করা হবে৷ ওই দিন বিকাল পাঁচটায় ভোটের ফলাফল৷