নিজস্ব প্রতিনিধি: ফের খবরের শিরোনামে দক্ষ আইপিএস অফিসার রাজীব কুমার। তাঁকে রাজ্য পুলিশের ভারপ্রাপ্ত ডিজি’র দায়িত্ব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। অতীতে রাজীব কুমারকে নিয়ে বিস্তর বিতর্ক দেখা দিয়েছিল। আর সেই বিতর্ককে নতুন করে কার্যত জাগিয়ে তুললেন তৃণমূল মুখপাত্র তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। ২০১৩ সালে সারদা মামলায় তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করেছিল রাজ্য সরকার। সিট-এর দায়িত্বে ছিলেন রাজীব কুমার। সেই বছরেই সারদা কাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগে কুণাল ঘোষকে গ্রেফতার করেন রাজীব কুমার। ঘটনায় কয়েক বছর জেলবন্দি ছিলেন কুণাল। এরপর ২০১৯ সালে সারদা মামলায় রাজীব কুমারের বিরুদ্ধে তথ্য লোপাটের অভিযোগ তোলে সিবিআই। একটা সময় রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাঁর বাসভবনে গিয়েছিলেন সিবিআই আধিকারিকরা। তখন সিবিআইয়ের সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিবিআইয়ের সেই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ধর্মতলায় ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী। পাল্টা সিবিআইয়ের দাবি রাজীব কুমার তদন্তে সহযোগিতা করছেন না। তখন গোটা বিষয়টি নিয়ে শোরগোল পড়ে যায় রাজ্য রাজনীতিতে। এতেই স্পষ্ট মুখ্যমন্ত্রীর কতটা ঘনিষ্ঠ বৃত্তে রয়েছেন এই আইপিএস অফিসার।
এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ খোঁচা দিয়েছেন রাজীব কুমারকে। একদিকে তাঁকে ভারপ্রাপ্ত ডিজি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন, অন্যদিকে কটাক্ষ করে বলেছেন,”উনি ডিজি পদে এসেছেন। নিশ্চয়ই ভাল খবর। একজন দক্ষ আইপিএস। ভাল থাকুন, ভাল করে কাজ করুন। শুধু দেখবেন আমার মতো নির্দোষকে কারও নির্দেশে কখনও বলি দিতে যাবেন না। তাতে আগামী দিনগুলি ভাল যায় না।” কিন্তু ‘কারও নির্দেশে…’ বলতে ঠিক কোন দিকে ইঙ্গিত করেছেন তৃণমূল মুখপাত্র, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছে বিরোধীরা। তবে কি কুণাল ঘোষ ‘কারও নির্দেশে’ বলতে খোদ মুখ্যমন্ত্রীকেই বুঝিয়েছেন? নাকি অন্য কারও কথা বলতে চেয়েছেন? নাকি কারও ‘বিবেক’-এর কথা তুলে ধরতে চেয়েছেন? বিরোধীদের বক্তব্য, সবাই সবটা বুঝতে পারছেন। কিন্তু মুখ খোলা যাবে না। তবে যাই হোক না কেন, রাজীব কুমার এত বড় দায়িত্ব পাওয়ার পর নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়ল কুণালের। যদিও তাঁদের সম্পর্ক আগের চেয়ে স্বাভাবিক হয়েছে বলে একটি সূত্রে খবর। কিন্তু রাজনীতির বৃত্তে কখন কোন সম্পর্ক স্বাভাবিক হয়, বা কখন সেটি অস্বাভাবিক হয়, তা নিয়ে তো প্রশ্ন থেকেই যায়। সবমিলিয়ে রাজীব কুমার বড় দায়িত্ব পেয়ে খবরের শিরোনামে আসার সঙ্গে সঙ্গে বহু প্রশ্ন কিন্তু উঠেই গেল।