কলকাতা: এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাংলায় ওলোট-পালট ফল৷ বিজেপির অভূতপূর্ব উত্থানে হার স্বীকার করতে হল শাসকদলের বেশ কয়েকজন রাঘববোয়ালকে৷ একইভাবে বিজেপিরও কয়েকজন হেভিওয়েট প্রার্থীকে পরাজয়ের গ্লানি নিয়ে ঘরে ফিরতে ঘরে ফিরতে হয়েছে।
দীর্ঘদিনের পোড় খাওয়া রাজনীতিবিদ তথা রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বাঁকুড়া কেন্দ্র থেকে হার স্বীকার করলেন। বিজেপি প্রার্থী সুভাষ সরকারের কাছে ১৬৪৮৮২ ভোটে পরাজিত হয়েছেন তিনি। বাঁকুড়ার বিদায়ী তৃণমূল সাংসদ প্রাক্তন তারকা অভিনেত্রী মুনমুন সেনকে এবার তৃণমূল নেত্রী টিকিট দিয়েছিলেন আসানসোলে। এখানে বিজেপির তারকা প্রার্থী বাবুল সুপ্রিয় সুচিত্রা সেনের কন্যা মুনমুন সেনকে ১৯৭১৪৩ ভোটে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের জন্য সংসদে যাচ্ছেন। মেদিনীপুরে এবার ছিল দুই হেভিওয়েট রাজনীতিবিদের লড়াই, বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং তৃণমূলের বর্ষীয়ান নেতা মানস ভুঁইয়ার। কিন্তু কার্যত পদ্ম ঝড়ে উড়ে গেলেন সবংয়ের ভূমিপুত্র মানস ভুঁইয়া, হারলেন ৮৭০১৫ ভোটে।
এবারের অন্যতম নজরকাড়া কেন্দ্র ছিল ঘাটাল। এখানে শাসকদলের অভিনেতা প্রার্থী দেবের সঙ্গে লড়াইয়ে ছিলেন প্রাক্তন আইপিএস ভারতী ঘোষের। কিন্তু বাংলা সিনেমার নায়কের কাছে ১০৮৯৭০ ভোটে নতীস্বীকার করে নিতে নিলেন মেদিনীপুরের প্রাক্তন পুলিস সুপার। মালদার কংগ্রেস গড় ভেঙ্গে খান খান করে দিল বিজেপি। মালদা দক্ষিণের বর্ষীয়ান সাংসদ আবু হাসেম খান চৌধুরী ওরফে ডালুকে হারিয়ে দিয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করলেন বিজেপির শ্রীরূপা মিত্র চৌধুরী। গনি খানের মিথ ভেঙে কোতয়ালির আরেক সদস্যা মৌসম বেনজির নুরকে ৬৭৭৬৪ ভোটে হারিয়ে দিলেন সিপিএম থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়া খগেন মুর্মু। একইভাবে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা রাহুল সিনহা এবারও জয়ের স্বাদ পেলেন না।
শাসকদলের বর্ষীয়ান নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ১০৮৩৪৫ ভোটে পরাজয় স্বীকার করে নিয়েছেন। অন্যদিকে যাদবপুর কেন্দ্রে টলিউডের ডিভা মিমি চক্রবর্তী একইসঙ্গে হারালেন দুই হেভিওয়েট প্রতিপক্ষকে। সিপিএম প্রার্থী কলকাতার প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য এবং বিজেপির অনুপম হাজরাকে। রায়গঞ্জের বিদায়ী সাংসদ সিপিএমের মহম্মদ সেলিম এবার তৃতীয় হয়ে শেষ করলেন। বাংলায় বিজেপি ঝড়ে মুমতাজ সংঘমিত্রা, দীনেশ ত্রিবেদী, রত্না দে নাগের মতো দীর্ঘদিনের সাংসদ হার স্বীকার করেছেন।