চাঁচল: তিনি গান্ধী পরিবারের কাছের লোক বলেই পরিচত প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে৷ বাংলায় শক্ত হাতে দলটা গুছিয়ে নিয়েছিলেন৷ বিধানসভায় প্রধান বিরোধী দল হিসাবে কংগ্রেসকে তুলে এনেছিলেন তিনি৷ বাংলায় বড় রাজনৈতিক কর্মসূচি হয়েছে, তখন তাঁকে চালকের আসনে দেখে এসেছে বাংলা৷ কিন্তু, লোকসভা নির্বাচনের ঠিক মুখে যখন বাংলার হয়ে প্রচার করে গেলেন রাহুল গান্ধী, তখন তাঁকেই দেখা গেল না পুরোনা চেহারায়৷ দেখা গেল না মঞ্চে৷ চাঁচলে রাহুল গান্ধীর সভামঞ্চে এহেন অধীর চৌধুরীর গরহাজিরা ঘিরে তুঙ্গে বঙ্গের রাজনীতি৷
আজ, লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের তরফে রাজ্যে এই প্রথম নির্বাচনী জনসভা করে গেলেন রাহুল গান্ধী৷ চাঁচলের সভায় কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ছাড়াও সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য, রাজ্য কংগ্রেসের দায়িত্বপ্রারপ্ত গৌরব গগৈ, দীপা দাসমুন্সিদের দেখা গেলেও মজার বিষয় হল, কংগ্রেসের অন্যতম বড় সৈনিক তথা বহরমপুরের একচ্ছত্র কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরিকে এদিনের সভায় অনুপস্থিত দেখে কানাঘুষো শুরু হয়েছে।
তাহলে কি তৃণমূলের অর্জুন সিংয়ের মতো তিনিও কি সাধের কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপির দিকে পা বাড়ালেন। বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেস নেতৃত্ব মুখ না খুললেও একটা অসন্তোষ তো মাথাচাড়া দিয়েছে। তবে রাহুল গান্ধী এদিন মমতার বিরোধিতা করেছেন যা চৌধুরি সাহেবের জন্য মঙ্গলজনক বৈকি। কেননা বিজেপির বিরোধিতা করার পাশাপাশি লাগতার তৃণমূল নেত্রী ও তাঁর দলের বিরুদ্ধে আক্রমণ করে গিয়েছেন অধীর চৌধুরি। তাঁর মতে কেন্দ্রীয় বাহিনী লোকসভা ভোটে থাকুক নাহলে গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের মতো ফের ক্ষীর খেয়ে চলে যাবে তৃণমূল। কংগ্রেসের নেতা কর্মীরা তৃণমূলের হাতে খুন হবে। কিন্তু এহেন মমতা বিরোধী কংগ্রেস নেতা রাহুলের সভায় অনুপস্থিত থাকায় আলোচনা তো হবেই। তাহলে কি তৃণমূল বিরোধিতা বিজেপির সখ্যতাকে বাড়িয়ে দিল, বাকিটা সময় বলবে।
এদিন বাংলার পূর্বতন সিপিএম রাজের সঙ্গে মমতার তৃণমূল সরকারের তুলনা করলেন কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী। এদিন মালদহের চাঁচলে নির্বাচনী জনসভা থেকে মমতাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন। দিদি রাজ্যের বাসিন্দাদের জন্য কিছুই করেননি। শুধু ভাষণ দিয়ে গিয়েছেন আর রাজ্যের মানুষের মধ্যে দিনের পর দিন বেকারের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এদিনের জনসভায় দলের গদ্দার তথা গণিখান চৌধুরির ভাগনি মৌসম বেনজির নূরের বিরুদ্ধে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি কংগ্রেস সভাপতি। রাহুল মালদহ উত্তরের বাসিন্দাদের উদ্দেশে বলেন, আপনাদের একজন ধোঁকা দিয়েছেন, বিশ্বাস ঘাতকতা করে তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছেন। তাঁকে এবার জবাব দেওয়ার সময় এসেছে, তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্রের মানুষ এই বিশ্বাসঘাতকতার জবাব দেবে।