Aajbikel

অস্তমিত মোদি ম্যাজিক? কর্ণাটকে বিজেপির শোচনীয় হারে পর মোদী-শাহ-নাড্ডার নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন

 | 
মোদী অমিত শাহ

নিজস্ব প্রতিনিধি: কর্ণাটকে শোচনীয় পরাজয় হয়েছে বিজেপির। এক ধাক্কায় গতবারের থেকে প্রায় ৪০টি আসন কমে গিয়েছে তাদের। বিজেপি নেমে এসেছে ৬৬-তে। স্বাভাবিকভাবে প্রশ্ন উঠছে এই পরাজয়ের দায় কার? রাজনৈতিক মহল মনে করে যেভাবে কর্ণাটকের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা লিঙ্গায়েত সমাজের  সবচেয়ে জনপ্রিয় ও প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব বিএস ইয়েদুরাপ্পাকে জোর করে সন্ন্যাসে পাঠিয়ে দিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি-অমিত শাহরা, তার জেরেই দক্ষিণের এই রাজ্যটিতে বিজেপির ভরাডুবি হল। সেক্ষেত্রে রাজনৈতিক মহল মনে করছে এই পরাজয়ের দায় অবশ্যই নিতে হবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে।


ঘটনা হল যে কোনও রাজ্যে বিজেপি সাফল্য পেলেই প্রধানমন্ত্রীকে তার কৃতিত্ব দিয়ে থাকে দল। কোনও ছোট রাজ্যের পুরসভা বা পঞ্চায়েত স্তরে বিজেপি সাফল্য পেলেও তার কৃতিত্ব মোদিকে দেওয়া হয়। মোদিও টুইট করে অভিনন্দন জানিয়ে থাকেন সংশ্লিষ্টদের। তাই জয়ের কৃতিত্ব যদি মোদিকে দেওয়া হয় তাহলে কর্ণাটকের পরাজয়ের দায়ও কেন তিনি নেবেন না সেই প্রশ্ন অবধারিত ভাবে উঠছে। উল্লেখ্য কর্ণাটকে নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে মোদি প্রায় কুড়িটি সভা এবং ছ'টি রোড শো করেছেন। একইভাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাও দক্ষিণের রাজ্যটিতে গিয়ে লাগাতার প্রচার করেছেন। দক্ষিণ ভারতের এই একটি মাত্র রাজ্যেই বিজেপি ক্ষমতায় ছিল। এবার সেই রাজ্যটিও হাতছাড়া হল তাদের। যা লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপির পক্ষে একেবারেই ভাল বিজ্ঞাপন নয়। তাই কর্ণাটকে পরাজয়ের পর প্রশ্ন উঠে গিয়েছে মোদি-শাহ-নাড্ডার নেতৃত্ব নিয়ে। তবে কি মোদি ম্যাজিক অস্তমিত হওয়ার পথে? মোদি ক্যারিশ্মাতে আর ভুলছে না জনগণ? ৫৬ ইঞ্চি ছাতির মালিকের রাজনৈতিক সাফল্য শেষ হওয়ার দিকে? এই সমস্ত প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠতে শুরু করেছে।


ঠিক সময় লোকসভা নির্বাচন হলে আর বাকি মাত্র ১০-১১ মাস। অর্থাৎ পুরো এক বছর সময়ও নেই। কেন্দ্রে ক্ষমতায় আসার পর বেকার যুবক-যুবতীদের বিপুল সংখ্যক চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি নানা ক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনার কথা শুনিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। কিন্তু বিরোধীদের অভিযোগ তার কোনওটাই বাস্তবায়িত হয়নি। এই সমস্ত প্রসঙ্গ বিরোধীদের তরফে উঠে এসেছিল কর্ণাটকের নির্বাচনী প্রচারে। সেখানে বিজেপি যথারীতি ধর্মীয় মেরুকরণের চেষ্টা করে গিয়েছে। কিন্তু তাতে ভোলানো যায়নি কন্নড়ভূমের মানুষদের। সবচেয়ে বড় কথা কর্ণাটকে যখন বিজেপি সরকার ছিল তার বিরুদ্ধে সীমাহীন দুর্নীতির অভিযোগ ওঠে। এই ইস্যুতেও সেখানকার মানুষ কংগ্রেসকে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোট দিয়েছেন। তাই মোদি ক্যারিশ্মা কোনও ভাবেই কাজ করেনি দক্ষিণের রাজ্যটিতে। আর সেই কারণেই এই পরাজয়ের দায় অবশ্যই নিতে হবে প্রধানমন্ত্রীকে, এমনটাই মত রাজনীতি সচেতন মানুষের। মোদি নিশ্চয়ই মানুষের মনের কথাটা বুঝতে পারছেন। চলতি বছরে আরও কয়েকটি রাজ্যে নির্বাচন রয়েছে। সেই নির্বাচনগুলিতেও যদি বিজেপি কর্ণাটকের মতো মুখ থুবড়ে পড়ে তাহলে চব্বিশের হাইভোল্টেজ  লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি কতটা যে ব্যাকফুটে চলে যাবে সেটা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। তাই কর্ণাটকের পরাজয় ভুলে বিজেপি নিজেদের কতটা গুছিয়ে নিতে পারে এখন সেটাই দেখার।

Around The Web

Trending News

You May like