নিজস্ব প্রতিনিধি: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির তদন্ত করছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। উঠে আসছে নিত্যনতুন তথ্য। এই অবস্থায় সামনের মাসে হতে চলেছে টেট। রীতিমতো নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে সেই পরীক্ষার আয়োজন করছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। কিন্তু সেই পরীক্ষা আদৌ নির্বিঘ্নে নেওয়া সম্ভব হবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন উঠে গেল। কারণ ঠিক তার আগেই ডিএলএড পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে গিয়েছে বলে উঠেছে অভিযোগ। যদিও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি গৌতম পালের দাবি, ‘প্রশ্নফাঁস নয়, সরকার ও পর্ষদের ভাবমূর্তি নষ্টের প্রচেষ্টা চালানো হয়েছে।’
কিন্তু বাস্তব অন্য কথাই বলছে। কারণ পরীক্ষা কেন্দ্রে পড়ুয়াদের যে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়েছে, আর হোয়াটসঅ্যাপে যে প্রশ্নপত্র ছড়িয়ে পড়েছে, দুটোই এক। মুর্শিদাবাদ থেকে এই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে খবর। এত সতর্কতা সত্ত্বেও প্রশ্নপত্র কীভাবে ফাঁস হল তা নিয়ে প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গিয়েছে। তবে তদন্ত কমিটি গঠন করে এর সত্যতা খুঁজে বার করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক পর্ষদ সভাপতি গৌতম পাল। সেই সঙ্গে পর্ষদ সভাপতি বিষয়টি নিয়ে এই ইঙ্গিতই দিয়েছেন যে, পরীক্ষা প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত কেউ হয়ত প্রশ্ন ফাঁস করেছেন।
এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এই অসততা মেনে নেব না। সরকারকে খাটো করার জন্য ষড়যন্ত্র চলছে। ডিএলএড কলেজগুলি নিয়েও বহু অভিযোগ রয়েছে। ট্রেনিং সেন্টারগুলিতে আগে পরীক্ষা হতো। এখন তা বদলানো হয়েছে। সেই কারণেই এই ষড়যন্ত্র হচ্ছে। কীভাবে সরকারকে বিপদে ফেলা যায়, পিছু টেনে ধরা যায়, তার চেষ্টা চলছে। বোর্ড যে সাজেশন দেবে সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ করব৷” তাই পর্ষদ সভাপতি যে কথা বলছেন তাতে বিষয়টি নিয়ে যথেষ্ট উদ্বেগ বেড়েছে শিক্ষা মহলের। তবে কি সর্ষের মধ্যেই ভূত লুকিয়ে রয়েছে? যারা প্রশ্নপত্র তৈরি করেছেন তাঁদেরই কেউ এটা ফাঁস করেছেন? না হলে প্রশ্নপত্র ফাঁস হল কভাবে?
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। ১১ ডিসেম্বর টেট পরীক্ষা হবে। তার আগে এদিন এমনটা ঘটায় চরম অস্বস্তিতে পড়েছে পর্ষদ। টেট সম্পর্কিত দুর্নীতি নিয়ে এত চর্চা চলছে তাতে ১১ ডিসেম্বর পরীক্ষা যাতে নজিরবিহীন নিরাপত্তা ব্যবস্থার মধ্যে নেওয়া যায় সেই পদক্ষেপ ইতিমধ্যেই করেছে পর্ষদ। একগুচ্ছ কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে পরীক্ষাকে কেন্দ্র করে। কিন্তু এই পরীক্ষার প্রশ্নপত্রও আবার ফাঁস হয়ে যাবে না তো? স্বাভাবিকভাবেই এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাই ডিসেম্বরের টেট কতটা নির্বিঘ্নে সম্পন্ন হয় সেদিকেই চোখ থাকবে ওয়াকিবহাল মহলের।