কীভাবে বাংলায় এলেন ‘পিকে’? অধরা ৩ বন্দরের ফুটেজ! প্রশ্ন বিরোধী শিবিরে

কীভাবে বাংলায় এলেন ‘পিকে’? অধরা ৩ বন্দরের ফুটেজ! প্রশ্ন বিরোধী শিবিরে

কলকাতা: সংখ্যার কারচুপি থেকে লাশ গায়েব, করোনার লড়াইয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানান অস্বস্তিকর অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যে কেন্দ্রীয় টিম রয়েছে। তাদের কার্যবিধি আটকান হচ্ছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরের টুইট, ‘পত্রযুদ্ধ’ এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাল্টা চিঠি, রাজ্যের রাজনৈতিক আবহাওয়াকে উত্তপ্ত রেখেছে৷ ঠিক এই মুহূর্তে, দুটি প্রশ্ন বিরোধী রাজনৈতিক শিবিরে ঘুরপাক খাচ্ছে৷ যা রাজ্য সরকারকে কিছুটা অস্বস্তিতে রেখেছে৷ এক, লকডাউনের মাঝে ভোটকৌশলী প্রশান্ত কিশোর কীভাবে কলকাতায় পৌঁছলেন? দুই, করোনা হাসপাতালে মোবাইল নিয়ে ঢোকা কেন নিষিদ্ধ করল রাজ্য সরকার? শুধুই কী সংক্রমণ আটকাতে, নাকি হাসপাতালের দশা এবং সন্দেহজনক কার্যকলাপ যাতে কেউ মোবাইলে ভিডিও রেকর্ডিং করে না রাখতে পারে, সেই ব্যবস্থাকে নিশ্চিত করা?

রাজ্যে রাজনৈতিক কানাঘুষো শুরু হয়ে গিয়েছে৷ বিরোধীরা বলাবলি শুরু করেছে, এই ঘোর লকডাউনে, যখন যাত্রী বিমান বন্ধ, ট্রেন বন্ধ, তখন কীভাবে কলকাতায় পৌঁছলেন প্রশান্ত কিশোর, পিকে? তিনি কী সড়কপথে এসেছেন? যদি সড়কপথেই এসে থাকেন, তবে কোনপথে কলকাতায় পৌঁছলেন? এর মধ্যেই নাকি কেন্দ্রীয় সরকার বিষয়টি নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু করেছে৷ অনেকে বলেছেন, পিকে নাকি লুকিয়ে কার্গো বিমানে চেপে কলকাতায় প্রবেশ করেছেন৷ আবার অনেকে তা উড়িয়ে দিয়েছেন, এই বলে যে পিকে'র মত হেভিওয়েট ব্যক্তিত্ব মালপত্রের সঙ্গে সহযাত্রা করতে পারেন না! বিমানবন্দরের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷ তবে, রাজ্য সরকারের জন্য রাজনৈতিক টাল মাটালের সময়ে পিকে'কে মমতার যে বিশেষ প্রয়োজন সেই বিষয়ে কারোরই দ্বিমত নেই! পিকে ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করেছেন৷

করোনা হাসপাতালগুলিতে মোবাইল ফোন নিয়ে প্রবেশ নিষিদ্ধ করল রাজ্য সরকার। কারণ, আপনার হাতের মোবাইল ফোনটি করোনা সংক্রমণের জন্য উপযুক্ত-মনে করছে রাজ্য সরকার। কিন্তু, এই সিদ্ধান্তের পিছনে অভিসন্ধি দেখছে বিরোধীদের একাংশ। কিছু বামপন্থী ফেসবুক পেজে ইতিমধ্যেই 'মিম' প্রকাশিত হয় শুরু করেছে। বলা হচ্ছে, কোভিড  হাসপাতালের বেহাল দশা থেকে লুকিয়ে ফেলার মত বিষয়গুলিকে মোবাইল ফোন ক্যামেরার সামনে আসতে দেওয়া চলে না। হাসপাতালের ভিতর মানুষের হাতে মোবাইল থাকলে সেই ভিডিও বা ছবি বাইরে চলে আসবেই। সেই জন্যই ফোন নিয়ে প্রবেশ বন্ধ করা হয়েছে।

যা খবর, করোনা চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে প্রবেশ করতে গেলে মোবাইল প্রধান দরজায় জমা রাখতে হবে৷ তার জন্য 'স্লিপ' পাওয়া যাবে। পরে বেরোনোর সময় 'স্লিপ' জমা রেখে মোবাইল ফেরত পাওয়া যাবে। কিন্তু, এই ভাবে যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ হয়ে গেলে হাসপাতালের কাজের অসুবিধা হতে পারে৷ ডাক্তারবাবু এবং নার্সদের পারস্পরিক যোগাযোগ সমস্যায় পড়বে৷ সেই জন্য, রাজ্য সরকার হাসপাতাল গুলিতে ইন্টারকম ব্যবস্থা চালু করেছে৷

রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক রাজু বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগে রাখঢাক রাখেননি৷ তিনি বলেন, ‘‘কোভিড হাসপাতালের আসল চিত্র বাইরে চলে আসবে বলেই মোবাইল নিয়ে প্রবেশ বন্ধ করল রাজ্য সরকার৷ হাসপাতালের বেহাল দশা, নোংরা, লাশ পড়ে আছে, এই দৃশ্য সোশ্যাল মিডিয়ায় বেরিয়ে পড়ছিল৷ সেক্ষেত্রে তা আটকানোর জন্যই এই ব্যবস্থা৷’’ অন্যদিকে, রাজুর আরও বক্তব্য, ‘প্রশান্ত কিশোর কত বড় ডাক্তার জানি না৷ তিনি, করোনা আটকাতে পারবেন কতটা তাও জানা নেই৷ তবে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে কোটি কোটি টাকা নিয়ে নিয়োগ করেছেন৷ এই লকডাউনের বাজারে তিনি কীভাবে বাংলায় এলেন এবং কী কারণে এলেন, তা রাজ্য সরকার জানাক৷’’

কলকাতায় আসার জন্য প্রশান্ত কিশোর নাকি কার্গো বিমান ব্যবহার করেছেন কি না, তা জানতে ইতিমধ্যেই নজর বাড়িয়েছে বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রক৷ সিএনএন নিউজ ১৮ সূত্রে খবর, প্রশান্তের বিমান সফর নিয়ে মন্ত্রক কিছুই খুঁজে পায়নি৷ ৩টি বিমানবন্দরের ৭২ ঘণ্টার সিসিটিভি ফুটেজে প্রশান্ত কিশোর উপস্থিতি পাওয়া যায়নি বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সিএনএন নিউজ ১৮৷ তবে, তিনি কলকাতায় এলেন কীভাবে? উত্তর এখনও অজানা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *