বিহারের কঠিন যুদ্ধে নীতীশ-লক্ষ্য ৪ ‘ম’! পাল্টা কৌশল মহাজোটের!

বিহারের কঠিন যুদ্ধে নীতীশ-লক্ষ্য ৪ ‘ম’! পাল্টা কৌশল মহাজোটের!

 

পাটনা: করোনা আবহে নিউ নর্মালে চলছে বিহার নির্বাচন৷ এবার নির্বাচনে নীতীশের প্রধান ইস্যু ফ্রিতে করোনা ভ্যাকসিন৷ সঙ্গে ‘১৫ বছরের উন্নয়ন’ স্লোগান৷ নীতীশের তরফে জোড়া ইস্যু তোলা হলেও বাড়ছে উদ্বোগ৷ কেনান, বিহারে বাড়তে থাকা বেকারত্ব, পরিযায়ী শ্রমিকদের বেহাল অবস্থা ভোট বাক্সে ঝড় তুলতে মুখিয়ে ২ কোটির বেশি জনতা৷

উন্নয়ন ও ফ্রি ভ্যাকসিনের প্রস্তুতি দেওয়া হলেও খুব একটা স্বস্তিতে নেই বিহারের তিনবারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার৷ কেননা, প্রতিবারের মতো এবারও জাত-পাতের রাজনীতি প্রকট হয়েছে নির্বাচনে৷ যাদব ও মুসলিম একজোট হওয়া, চিরাগ পাসোয়ানের ক্রমাগত আক্রমণ, নীতীশের সঙ্গে বিজেপির দূরত্বের গেরোয় কার্যত কোণঠাসা নীতীশ-সাম্রাজ্য৷

গত ১৫ বছরে যে কোনও উন্নয়ন হয়নি, তা মেনে নেওয়া কঠিন৷ কেননা, নীতীশের বিহারে ১৫ বছরের ভোল বদলে গিয়েছে বিহারে৷ হয়েছে উন্নয়ন, শুধরেছে আইনশৃঙ্খলা৷ চুরি, ছিনতাই, রাহাজানি অনেকটাই কমেছে৷ তবে, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার হাল এখনও ফেরাতে পারেননি নীতীশ কুমার৷ যুব সমাজের জন্য চাকরি দিতে ব্যর্থ নীতীশ সরকারের জোট নতুন করে দিয়েছে ১৯ লক্ষ চাকরির প্রতিশ্রুতি৷ কিন্তু, এর আগে দেওয়া চাকরির আশ্বাস কোথায়? প্রশ্নে মুখে কুলুপ৷

কেননা, লকডাউনে পর থেকে কোনও চাকরি হয়নি বিহারে৷ গত পাঁচ বছরেও সরকারি কোনও নিয়োগ হয়নি৷ অথচ ৪-৫ লক্ষ শূন্যপদ রয়েছে সরকারি দফতরে৷ শিক্ষক ও পুলিশে নিয়োগের ঘোষণা হলেও তা থমকে গিয়েছে৷ জীবিকার প্রশ্নে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ায় উঠেছে বিহারে৷

সরকারের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই জোরদার প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা৷ আচমকা প্রবল প্রতিপক্ষ হিসেবে উঠে এসেছে আরজেডি-কংগ্রেস-বাম জোট৷ এই আরজেডির পিছনে রয়েছে ১৭ শতাংশ মুসলিম ও ১৩ শতাংশ যাদব ভোট৷ ফলে, ভোটের অঙ্ক ইভিএমে মিললে বড়বড় ধাক্কা খেতে পারেন নীতীশ৷ শাসককে ধাক্কা দিতে ইতিমধ্যেই রাজপুত ভোটেও কোমর কষে পিছনে দাঁড়িয়েছে আরজেডি শিবির৷ আরজেডির দাবি, মুসলিম ভোট তাদের সঙ্গে আছে৷ যুব সমাজও নীতীশের উপর বেজায় ক্ষুব্ধ৷ ফলে, তারাও নীতীশের বিরুদ্ধে যেতে পারেন৷

এবার পরিস্থিতি যে কঠিন তা বিলক্ষণ টের পেয়েছেন নীতীশও৷ এ যাত্রায় ৪ ‘ম’-এর উপর ভরসা রেখেছেন নীতীশ৷ প্রথম ‘ম’ নীতীশের পাখির চোখ মহাদলিত৷ ১৭ শতাংশ ভোটারকে টার্গেট করেছেন নীতীশ৷ দ্বিতীয় ‘ম’ মোস্ট ব্যাকওয়ার্ড ক্লাস বা অত্যন্ত পিছিয়ে পড়া শ্রেণির বড় ভোট ব্যাঙ্ক৷ কেননা, ক্ষমতায় এসে যাদের জন্য সংরক্ষণ প্রথা চালু করেছিলেন নীতীশ কুমার৷ তৃতীয় ‘ম’ মহিলা ভোট ব্যাঙ্ক৷ মহিলা আসন সংরক্ষণ ও মদ নিষিদ্ধ করে তাঁদের সমর্থন পেতে চাইছেন নীতীশ৷ চতুর্থ ‘ম’-এ শেষ ভরসা মোদী৷ তবে, নীতীশের ৪ ‘ম’ বনাম যাদব-মুসলিম ও যুব সমাজের ভোট কোন জোটকে ক্ষমতার শীর্ষে বসাবে, তার জবাব দেবে ইভিএম৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eight + 12 =