দিলীপের নিশানায় পুলিশ! নেপথ্যে কী ছক বিজেপির?

কলকাতা: ২০২১ সালের মহাগুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুলিশকে চাপে রাখতে চাইছে বিজেপি৷ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে গেরুয়া শিবিরের স্ট্রাটেজি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে – রাজ্য সরকার এবং শাসক দলের চাপে অবনত পুলিশকে পাল্টা চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে বিজেপি৷ দিলীপ ঘোষ সম্প্রতি বলেছেন, ক্ষমতায় এসে পুলিশের মাইনে থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে৷ সব নাম লেখা

দিলীপের নিশানায় পুলিশ! নেপথ্যে কী ছক বিজেপির?

কলকাতা: ২০২১ সালের মহাগুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের আগে পুলিশকে চাপে রাখতে চাইছে বিজেপি৷ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্যে গেরুয়া শিবিরের স্ট্রাটেজি পরিষ্কার হয়ে গিয়েছে – রাজ্য সরকার এবং শাসক দলের চাপে অবনত পুলিশকে পাল্টা চাপে রাখার কৌশল নিয়েছে বিজেপি৷ দিলীপ ঘোষ সম্প্রতি বলেছেন, ক্ষমতায় এসে পুলিশের মাইনে থেকে টাকা কেটে নেওয়া হবে৷ সব নাম লেখা থাকছে৷ অবসর নিলেও পর পাবেন না৷ পেনশন থেকে কেটে নেওয়া হবে৷ দিলীপের এই বক্তব্য ইতিমধ্যেই পুলিশ মহলে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে৷

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ব্যাখ্যা, বিজেপি এই রাজ্যে শাসকদলকে চ্যালেঞ্জ করছে৷ সেক্ষেত্রে, পুলিশকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করার সিদ্ধান্তটা রাজনৈতিক ভাবে সঠিক৷ কারণ এটা অস্বীকার করার উপায় নেই যে পুলিশকে শাসকদলের ইচ্ছা অনুসারে কাজ করতে হয়৷ সেক্ষেত্রে অনেক সময় ইচ্ছা না থাকলেও পুলিশ অনেক সময় শাসক দলের জনপ্রতিনিধি বা নেতার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ করে৷

কিন্তু, পুলিশকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ করতে পারলে চাপে রাখা যায়৷ বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনের পর রাজ্যে গেরুয়া শিবিরের অবস্থান অনেক শক্ত৷ বাম, কংগ্রেসকে পিছনে ফেলে প্রধান বিরোধী হিসাবে তারা উঠে এসেছে৷ রাজ্যের যা সাম্প্রতিক পরিস্থিতি, রাজ্যপাল নিজের সুরক্ষার জন্য কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনীকে ব্যবহার করছেন৷ জোর বিতর্ক চলছে৷ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চিঠি লিখে জানতে চেয়েছে রাজ্যপালের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় পুলিশ কেন? যদি আইন-শৃঙ্খলা রাজ্যের বিষয় হয় তবে রাজ্যপালের নিরাপত্তার দায়িত্বও রাজ্যের হওয়া উচিত৷

বিজেপি অবশ্য রাজ্য পুলিশকে তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাস হিসাবে ব্যাখ্যা করতে চাইছে৷ দিলীপ ঘোষ থেকে অর্জুন সিংহ – বিজেপির ছোটবড় সব নেতাই বলেছেন, রাজ্য পুলিশের একমাত্র কাজ বিজেপি নেতাদের মিথ্যা কেস দিয়ে গ্রেফতার করা৷

রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বারবার দেখেছেন, রাষ্ট্রের ক্ষমতার পরিবর্তনের সময় আগাম খবর থাকে পুলিশের কাছেই৷ এলাকার রাজনৈতিক পালস বুঝতে পুলিশের জুড়ি নেই৷ সেক্ষেত্রে, পুলিশকে ক্ষমতার পরিবর্তনের ভয় দেখিয়ে শাসক বিরোধী শিবির মুখী করতে পারলে গেরুয়া শিবিরের লাভ রয়েছে৷

অন্ততপক্ষে, ৩০ শতাংশ পুলিশ যদি শাসক দলের চাপের মুখে কাজ করতে অস্বীকার করে, তবে গেরুয়া শিবিরের রাজনৈতিক লাভ রয়েছে বলে মনে করেন বিজেপি নেতারা৷ সেক্ষেত্রে, পুলিশের উদ্দেশ্যে দিলীপ ঘোষের হুমকিমুলক মন্তব্য নির্দিষ্ট স্ট্রাটেজি’র মধ্যেই পড়ে৷

পুলিশকে বোমা মারার নিদান দিয়ে খবরে এসেছিলেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল৷ প্রশ্ন উঠেছিল, শাসক দলের নেতারা যদি এই কথা বলেন তবে ভবিষ্যতে কি দিন আসছে৷ আপাতত বিজেপি ২০২১ – এ নিজেদের ভবিষ্যৎ দেখতে পাচ্ছে৷ সেই কারণেই দিলীপ ঘোষের মন্তব্য ইঙ্গিতপূর্ণ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *