সংসদ অধিবেশন একদিন কেন বাড়ল? জল্পনায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ

সংসদ অধিবেশন একদিন কেন বাড়ল? জল্পনায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ

নিজস্ব প্রতিনিধি:   লোকসভা নির্বাচনের আগে সংসদের শেষ অধিবেশন চলছে। এরপরই ভোটের দামামা পুরোপুরি বেজে যাবে। কিন্তু হঠাৎ করেই অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশনের দিন বাড়ানো হয়েছে। এক দিন বাড়ানো হয়েছে অধিবেশন। কিন্তু কেন? কোন লক্ষ্যে দিন বাড়ানো হয়েছে? আর সেই সূত্রেই উঠে আসছে যে, সম্ভবত আজ শনিবার অধিবেশনের শেষ দিনে রাজ্যসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ করা হতে পারে। শনিবার বিজেপির সমস্ত রাজ্যসভার সাংসদ যাতে অধিবেশন কক্ষে উপস্থিত থাকেন সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে দলের তরফে। নির্দেশিকায় বলা হয়েছে,”বিজেপির সমস্ত রাজ্যসভার সাংসদকে জানানো হচ্ছে যে, রাজ্যসভায় অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে শনিবার ১০ ফেব্রুয়ারি আলোচনা করা হবে। তাই সেদিন সবাইকে অধিবেশন কক্ষে সারাদিনের জন্য উপস্থিত থাকতে বলা হচ্ছে।” এতেই দুইয়ে দুইয়ে চার করছেন রাজনীতির কারবারিরা। ঘটনা হল ৯ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার শেষ হওয়ার কথা ছিল অন্তর্বর্তী বাজেট অধিবেশন। কিন্তু হঠাৎই তা একদিন পিছিয়ে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। তবে কি বিল পেশের জন্যই অধিবেশনের সময় একদিন বাড়ানো হয়েছে? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।

নিয়ম অনুযায়ী লোকসভায় কোনও বিল পেশ করার পর লোকসভা ভেঙে নির্বাচনের পর নতুন করে হাউস গঠিত হলে আগের পেশ করা বিলগুলি আর টেবিলে থাকে না। তখন নতুন করে বিল পেশ করতে হয়। কিন্তু রাজ্যসভার ক্ষেত্রে সেই নিয়ম খাটে না। তাই বিল পেশের চেষ্টা কেন্দ্র করছে বলে খবর। সদ্য দেশের মধ্যে প্রথম রাজ্য হিসেবে রীতিমতো নজির সৃষ্টি করে উত্তরাখণ্ড বিধানসভায় গত বুধবার পাশ হয়ে গিয়েছে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল। দেশের মধ্যে উত্তরাখণ্ড প্রথম রাজ্য যেখানে এই বিল পাশ হয়েছে। এবার রাজ্যপাল বিলটিতে স্বাক্ষর করলেই সেটি আইনে পরিণত হয়ে যাবে। এবার দেশজুড়ে এই আইন আনতে চাইছে বিজেপি, এমনটাই মনে করা হচ্ছে।

আসলে লোকসভা নির্বাচনের আগে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল যেভাবে উত্তারাখণ্ড বিধানসভায় পাশ হল তার যথেষ্ট রাজনৈতিক তাৎপর্য আছে বলেই মনে করা হচ্ছে। কারণ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি উত্তরাখণ্ড তথা দেশজুড়ে আগামী দিনে আইনে পরিণত হলে বিবাহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, দত্তক, উত্তরাধিকার, জমি ও সম্পত্তি ভাগাভাগির ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধর্মের ও জনজাতি মানুষের মধ্যে একই আইন লাগু হবে। এটি আইন হলে অস্তিত্ব হারাবে মুসলিম পার্সোনাল ল’ বোর্ড। তখন নিশ্চিতভাবে পথে নামবে বিভিন্ন মুসলিম সংগঠন। বিজেপি বিরোধীরা প্রত্যাশিতভাবেই তখন তাঁদের পাশে দাঁড়াবে বলে রাজনৈতিক মহল মনে করে। তাতে হিন্দু মেরুকরণের সুবিধা হবে বিজেপির, এমনটাই ধারণা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের।

এই আবহের মধ্যে বিজেপি দেশ জুড়ে এই আইন লাগু করার লক্ষ্যে শনিবার রাজ্যসভায় অভিন্ন দেওয়ানি বিধি বিল পেশ করতে চলেছে বলে জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে। স্বাভাবিকভাবেই এটা হলে তার বিরোধিতা করবে কংগ্রেস-সহ অ-বিজেপি দলগুলি। কিন্তু বিজেপি এই বিল পেশ করতে মরিয়া অবস্থান নিয়েছে বলেই খবর। এবার না হলে আগামী দিনে ভোটে জিতে ক্ষমতায় ফিরলে এই বিল পেশ করে তা আইনে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর গেরুয়া শিবির। তাই শনিবার রাজ্যসভায় কোন ঘটনা ঘটে সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *