কলকাতা: বিজেপিতে যোগ দেওয়ার শর্ত হিসাবে কলকাতার প্রাক্তন মেয়র সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, দেবশ্রী রায় যেদিন বিজেপিতে যোগ দেবেন, সেটাই হবে তাঁর বিজেপিতে শেষ দিন! শোভন চট্টোপাধ্যায়ের এহেন হুঁশিয়ারি পর দেবশ্রীকে নিরাশ করেছিল বিজেপি নেতৃত্ব৷ এবার সেই বিজেপি দেবশ্রীকে দলে যোগদানের তৎপরতা শুরু করে দিয়েছে বলে খবর৷ আর এই সিদ্ধান্তের জেরেই শোভনবাবুর বিজেপিতে থাকা নিয়ে শুরু হয়েছে জল্পনা৷
কেননা, বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্বের ভূমিকা নিয়ে আগেই সরব হয়েছিলেন শোভনবাবুর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়৷ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ ঘিরেও তৈরি হয়েছিল বিতর্ক৷ বিতর্ক আরও বাড়িয়ে ছিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ৷ শোভন-বৈশাখীকে ডাল-ভাতের সঙ্গে তুলনা করেছিলেন তিনি৷ বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করে দিলীপ ঘোষের পাশে বসেই ডাল-ভাত মন্তব্যের পাল্টা জবাব দিয়েছিলেন বৈশাখীদেবী৷ মুখ খুলেছিলেন শোভন চট্টোপাধ্যায়৷ সেই বিতর্ক মিটতে না মিটতেই দলের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে হাজির ছিলেন না শোভন-বৈশাখী৷ সেই নিয়েও দানা বেঁধেছিল বিতর্ক৷ আমন্ত্রণ পাননি বলে সভায় অনুপস্থিত থাকার কারণ হিসেবে ব্যাখ্যা করা হলেও শোভন-বৈশাখী নিয়ে বিজেপির অন্দরে বাড়েছে নানান জল্পনা৷
শোভন-বৈশাখীর বিদ্রোহ রুখতে তড়িঘড়ি মাঠে নামতে কার্যত বাধ্য হয়েছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতা তথা বিজেপির সহকারি পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনান৷ সূত্রের খবর, বুধবার রাতেই তিনি শোভনবাবুর গোলপার্কের বাড়িতে হাজির হন৷ সেখানে বৈশাখীদেবী ছিলেন বলে নানা মহল থেকে জানা গিয়েছে৷ সেখানেই অরবিন্দ মেনানকে ক্ষোভ উগরে দেন দু’জনেই৷ সূত্রের খবর, সেখানে দিলীপ ঘোষের ডাল-ভাত মন্তব্য নিয়েও ওঠে প্রশ্ন৷ বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তাঁদের ক্ষোভ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আদতে কতটা কার্যকর হয়েছে সেই হয়েছে জল্পনা৷
অন্যদিকে, শোভন-বৈশাখীর আপত্তি সত্ত্বেও দেবশ্রী রায়ের বিজেপি যোগ জল্পনা নিয়ে তৈরি হয়েছে নানান জটিলতা৷ পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ ইতিমধ্যেই বলতে শুরু করেছেন, দেবশ্রী দলে যোগ দিলে শোভন-বৈশাখী কি দল ছেড়ে দেবে? একদিকে নেতৃত্বের বিরুদ্ধে ক্ষোভ, অন্যদিকে আপত্তি উড়িয়ে দেবশ্রীকে দলে যোগ দেওয়ার ঘটনায় চূড়ান্ত বিড়ম্বনায় পড়ে পারেন তাঁরা৷