এনসিইআরটি’র পদক্ষেপে তীব্র বিতর্ক, বইয়ে মোছা হল বাবরি মসজিদের নাম!

মুছে ফেলা হল বাবরি মসজিদের নাম (Babri Masjid) পাঠ্যক্রমের বিষয়বস্তু নিয়ে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে গৈরিকীকরণের অভিযোগ উঠল। এবার দ্বাদশের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই থেকে মুছে ফেলা হল…

Babri Masjid NCERT Controversy

মুছে ফেলা হল বাবরি মসজিদের নাম (Babri Masjid)

পাঠ্যক্রমের বিষয়বস্তু নিয়ে ফের বিজেপির বিরুদ্ধে গৈরিকীকরণের অভিযোগ উঠল। এবার দ্বাদশের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই থেকে মুছে ফেলা হল বাবরি মসজিদের নাম। যে ঘটনায় দেশ জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে এটা করা হয়েছে বলে বিরোধীদের অভিযোগ। সেই সঙ্গে ইতিহাস বিকৃত করে নতুন ভাবে বইয়ের সংস্করণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ঘটনা হল এনসিইআরটি-র দ্বাদশ শ্রেণির রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বইয়ে অযোধ্যার ইতিহাস সংক্ষিপ্ত করা হয়েছে।

‘তিন গম্বুজ সম্বলিত নির্মাণ’

অযোধ্যা সম্পর্কিত অধ্যায়ে আগে চারটি পাতা ছিল, যা এখন কমে দু’পাতা হয়েছে। আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেখানে বাবরি মসজিদের নাম উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি। বাবরি মসজিদের বদলে সেটিকে ‘তিন গম্বুজ সম্বলিত নির্মাণ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। বাবরি মসজিদ ধ্বংস কাণ্ড ও তার আগে গুজরাটের সোমনাথ থেকে অযোধ্যার উদ্দেশে যে রথযাত্রা বের হয়েছিল, নতুন ইতিহাস বইয়ের পাতায় তারও উল্লেখ নেই। যে বিষয়টি নিয়ে স্বাভাবিকভাবেই বিতর্ক তৈরি হয়েছে। বিরোধীদের অভিযোগ, যেভাবে বাবরি মসজিদকে ধ্বংস করা হয়েছিল তা আগামী প্রজন্মের পড়ুয়ারা যাতে জানতে না পারেন, সেই লক্ষ্যেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে।

দ্বাদশের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বই (NCERT Controversy)

দ্বাদশের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বইয়ে অযোধ্যার ইতিহাস হিসেবে যা তুলে ধরা হয়েছে তাতে বলা হয়েছে, ১৫২৮ সালে শ্রীরামের জন্মস্থানে ‘তিন গম্বুজ সম্বলিত’ একটি নির্মাণ গড়ে তোলা হয়। সেখানে হিন্দু ধর্মের বেশ কিছু প্রতীক চিহ্ন দৃশ্যমান ছিল। তবে পাঠ্যবইয়ে বদল আনার আগে সেখানে বাবরি মসজিদের উল্লেখ ছিল। এর পাশাপাশি পুরনো সংস্করণে লেখা ছিল, ফৈজাবাদ আদালতের নির্দেশে ১৯৮৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে বাবরি মসজিদের তালা খুলে দেওয়া হয়। এরপর বাবরি মসজিদ ধ্বংস ও সাম্প্রদায়িক অশান্তির কথাও উল্লেখ ছিল আগের সংস্করণে। কিন্তু নতুন সংস্করণে এর কোনওটাই স্থান পায়নি।

অযোধ্যা বিবাদ নিয়ে ঐতিহাসিক রায় সুপ্রিম কোর্টের

২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্ট অযোধ্যা বিবাদ নিয়ে যে ঐতিহাসিক রায় দিয়েছিল তার উল্লেখ রয়েছে নতুন সংস্করণে। ঐতিহাসিক রেকর্ড ও প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের ভিত্তিতেই আদালত সেই রায় দিয়েছিল বলে নতুন সংস্করণে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া আগের সংস্করণে উল্লেখ করা হয়েছিল বাবরি মসজিদ ধ্বংসের সময় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন কল্যাণ সিং। আর তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু নতুন সংস্করণে এই বিষয়টির উল্লেখ করা হয়নি।

এনসিইআরটি’র সিলেবাস নিয়ে প্রশ্ন

অর্থাৎ বাবরি মসজিদ ধ্বংসকে কেন্দ্র করে গোটা দেশ যেভাবে উত্তাল হয়েছিল, যার অভিঘাত পড়েছিল বিভিন্ন রাজ্যে, যেভাবে পশ্চিমবঙ্গ-সহ বিভিন্ন জায়গায় অস্থির পরিস্থিতি তৈরি হয়, সেই সমস্ত ঘটনার কোনও উল্লেখ নেই দ্বাদশের বইয়ের নতুন সংস্করণে। এই প্রথম নয়, এর আগেও এনসিইআরটি’র সিলেবাস নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষা জগতের একাংশ। তবে এবার যেভাবে বাবরি মসজিদকে মুছে ফেলা হল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের বই থেকে, তা মেনে নিতে পারছে নাও শিক্ষাজগৎ। বিষয়টি আগামী দিনে কোন দিকে মোড় নেয় এখন সেটাই দেখার।

আরও পড়ুন-

প্রিমিয়ার ট্রেনের নিরাপত্তা নিয়েই কী বেশি চিন্তিত রেল? 

ফের হুঁশিয়ারি রাজ্যপালের! আদৌ অভিঘাত হবে? 

ভোট মিটতেই রাজ্যে কেন্দ্রীয় দল! প্রতিহিংসা নাকি?

কাশ্মীর শান্ত! মোদী-শাহের দাবি কী ঠিক? বাস্তব বলছে অন্য কথা

 

Politics: Learn about the controversy surrounding NCERT‘s decision to remove Babri Masjid from a textbook. Find out why this move has sparked outrage and what it means for India’s education system.

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *