নয়াদিল্লি: সেই সময়টা এমন ছিল না। ভারত সফরে এসেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ঠিক আট মাস আগে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে মহাবলিপুরমের মন্দির শহর পরিদর্শন করেন তিনি। বৈঠক হয় সেখানেই। ঠিক আট মাসের মাথায় পরিস্থিতি কেন বদলে গেল? মুখোশের আড়ালে চিনকে 'না চেনার' চেনা ভুল আবার করে বসল ভারত?
মহাবলিপুরোমের মন্দির শহরের পঞ্চ পাণ্ডবের পাঁচ রথের মাঝেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। অস্বীকার করার জায়গা নেই, ভারত এবং চিন পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন দুই সভ্যতা।
দুই দেশের প্রাচীন যোগাযোগের কথা ইতিহাসে পাতায় রয়েছে। ফা-হিয়েন, হু-এন-সাং, রাজা হর্ষবর্ধনের গল্প আজও ভারতের ইতিহাস বইতে পাঠ্য। তবে সে প্রাচীন চিন। বিশ্বাসঘাতকতার মধ্যেই নিজের নতুন ইতিহাস রচনা করেছে কমিউনিস্ট চিন। সত্য যে, ১৯৬২ এবং ১৯৬৭ সালে যুদ্ধে জড়িয়েছে দুই দেশ। ৬২তে ভারতের কিছু সিদ্ধান্তগত ভুলের জন্য সীমান্তে বড় মূল্য চোকাতে হয়েছিল। আজ জম্মু-কাশ্মীরের যে অংশটি 'আকসাই চিন' – সেই অংশটি ১৯৬২ সালের যুদ্ধের পরই চিনের হাতে চলে যায়। ৬৭ তে আবার নাথুলা দখল করতে আসে চিন। কিন্তু, পুরান ভুল করেনি ভারত। পর্যদুস্ত হয়ে ফিরতে হয় চিন সেনাকে।
যদিও দীর্ঘ চল্লিশ বছর সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যকে গুরুত্ব দিয়ে এরপরে সীমান্তে আর একটিও গুলি চলেনি। সীমান্ত সমস্যা মেটেনি। কিন্তু, শান্তি রক্ষায় একটি সমঝোতা মেনে চলা হত। ২০২০ তে এসে আর শান্তি রক্ষিত হয়নি। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে (যদিও গুলি চলেনি) ২০ ভারতীয় সেনার প্রাণ গিয়েছে। জানা গিয়েছে ৪০ জনের বেশি চিন সেনার মৃত্যুর খবর। ১৭ চীন সেনার দেহ ঘটনাস্থলেফেরত দিয়েছে ভারতীয় সেনা।
কিন্তু, সম্পর্কের এই অবনতির কারণ কী? শুধু মাত্র কি সীমান্তে ভারতের রাস্তা এবং ব্রিজ তৈরি? তা তো কয়েক বছর ধরে তৈরি হচ্ছে। নাকি জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা হ্রাস করে লাদাখকে নতুন কেন্দ্রীয় শাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষিত করা? উল্লেখ্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় দাঁড়িয়ে আকসাই চিন পুনর্দখল করার ইঙ্গিত দিয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, তখন থেকেই তলে তলে ঘুটি সাজাচ্ছিল চিন। লাদাখের বরফ গলার পরই সেনা নিয়ে হাজির হয়েছে। অনেক বিশেষজ্ঞ, আমেরিকা-ভারত সক্ষতার কথাই বলছেন। যা চিনের গলায় কাঁটার মত বিঁধেছে।