ফের চর্চায় নন্দীগ্রাম! জমি আন্দোলনের আঁতুরঘরে লিড পেতে মরিয়া তৃণমূল

নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রীতিমতো ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তৃতীয়বার বাংলায় ক্ষমতায় ফিরেছিল তৃণমূল। কিন্তু নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই…

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নিজস্ব প্রতিনিধি: একুশের বিধানসভা নির্বাচনে রীতিমতো ডাবল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে তৃতীয়বার বাংলায় ক্ষমতায় ফিরেছিল তৃণমূল। কিন্তু নন্দীগ্রামে শুভেন্দু অধিকারীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই ঘটনা যে এখনও মুখ্যমন্ত্রী তথা গোটা তৃণমূল কংগ্রেসকে তাড়া করে বেড়ায় সেটা সকলেই বোঝেন। যদিও তৃণমূল নিয়মিত অভিযোগ করে যে, ভোট গণনার দিন নন্দীগ্রামে লোডশেডিং করে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে। তবে তা নিয়ে তৃণমূলকে কটাক্ষ করতে ছাড়ে না বিজেপি।

বিজেপির প্রত্যেকটি প্রচার সভায় বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী নন্দীগ্রামের ভোটের কথা তুলে ধরে বলে থাকেন, তিনি মুখ্যমন্ত্রীকে ১৯৫৬ ভোটের ব্যবধানে হারিয়ে দিয়েছিলেন। এই পরিস্থিতিতে লোকসভা নির্বাচনের মধ্যে ফের খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে নন্দীগ্রাম। ঘটনা হল তমলুক লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে পড়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভা। তমলুকে বিজেপির প্রার্থী হয়েছেন প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। অন্যদিকে সেখানে তৃণমূলের প্রার্থী হয়েছেন দলের যুবনেতা দেবাংশু ভট্টাচার্য। সেই সূত্রে তমলুকে প্রচারে গিয়ে তিন বছর আগে হারের ‘বদলা’ ইভিএমে নিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।

মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলের একটাই লক্ষ্য নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বেশি করে লিড নেওয়া। আর সেটা হলে যে হারের ক্ষতে অনেকটাই প্রলাপ পড়বে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই বৃহস্পতিবার তমলুকের তৃণমূল প্রার্থী দেবাংশু ভট্টাচার্যের সমর্থনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে নন্দীগ্রাম বিধানসভা নির্বাচনের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন,”আমার সঙ্গে প্রতারণা হয়েছে। রিগিং করা হয়েছে। সেদিন ডিএম বদলানো হয়েছিল। লোডশেডিং করে জিতেছিল। আজ নয় কাল, এর বদলা নেবই আমি। চিরকাল বিজেপি থাকবে না। তাই বদলা নিয়েই ছাড়ব।” নির্বাচন কমিশনের সাহায্যেই ডিএম-এসপি-আইসি সব বদলে লোডশেডিং করে ফল পাল্টানো হয়েছিল বলে মমতার অভিযোগ। এভাবেই ফের খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে নন্দীগ্রাম।

স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক মহলের প্রশ্ন, শুভেন্দু অধিকারী কী পারবেন তাঁর নিজের বিধানসভা কেন্দ্র নন্দীগ্রাম থেকে দলীয় প্রার্থী অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়কে বিপুল লিড দিতে? যদি পারেন তো ভাল। নাহলে কিন্তু শুভেন্দুর নেতৃত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাবে। তখন তৃণমূল নিশ্চিত ভাবে আরও জোর দিয়ে বলবে যে, তাদের অভিযোগই সত্যি। অর্থাৎ অন্যায় ভাবে হারিয়ে দেওয়া হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রীকে, তৃণমূলেয এই প্রচার কিন্তু তখন অনেকটাই মান্যতা পেয়ে যেতে পারে। সব মিলিয়ে জমি আন্দোলনের আঁতুরঘর নন্দীগ্রাম নিয়ে যথেষ্ট কৌতূহল দেখা যাচ্ছে রাজনৈতিক মহলে। এই পরিস্থিতিতে বিধানসভা নির্বাচনের তিন বছর পর নন্দীগ্রামের মানুষ কার পাশে দাঁড়ান এখন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *