কলকাতা: ২০১১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তৃণমূল কংগ্রেসের অন্দরে এত দুর্দশা আসেনি। দুই প্রবীণ নেতা প্রকাশ্যে দলের জনপ্রতিনিধিদের কাজের দোষারোপ করেছেন। ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল থেকে দল পরিবর্তন করে অনেক ভারি নেতা বিজেপি'তে এসেছেন। কিন্তু সেদিনও দলের মধ্যে এইদিন দেখেননি মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর এই পরিস্থিতির মুখে কখনও পড়েননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অনেক সমালোচক বলছেন, তৃণমূলের অন্দরে গতি বাড়িয়েছে ঘূর্ণিঝড়, এত শুধু তাণ্ডবের পূর্বাভাস। আবার অনেকের মতে, পুরোটাই সুপরিকল্পিত ছক। প্রশান্ত কিশোর (পি কে'র) গেমপ্লেন। কোভিড-১৯ পরিস্থিতি এবং উমপুনের মোকাবিলায় রাজ্য সরকার যে সফল তা অতি বড় ভক্তও বলবেন না। কারণে-অকারণে আম জনতার মনে জমেছে ক্ষোভের পাহাড়। মমতার মন্ত্রিসভার বরিষ্ঠ মন্ত্রীদের মুখে সহকর্মীদের উন্মুক্ত সমালোচনা ক্ষুব্ধ ভোটারদের যন্ত্রণা কিছুটা উপশম করতে পারে। উমপুনের তাণ্ডব এবং পরবর্তী প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য যে জনতা ভুক্তভোগী, তাঁদের কাছে ওই শব্দগুলি ব্যথার ওষুধের কাজ করতে পারে।
রাজ্যের ক্রেতা সুরক্ষা মন্ত্রী সাধন পাণ্ডে শুরু করেছিলেন। কলকাতা পুরসভা, রাজ্যের পুর এবং নগরোন্নয়ন দফতরের অকর্মণ্যতা তুলে ধরেন। মেয়র (এখন প্রশাসক) এবং মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম যে লক্ষবস্তু তা স্পষ্ট হয়ে যায়। উত্তর দিয়েছিলেন ফিরহাদও। পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ক বলেছেন, ঘূর্ণিঝড়ের পর সাগরদ্বীপে কোনও মন্ত্রী যাননি। যাওয়া উচিত ছিল। তিনি আরও জানান, ঝড়ের মোকাবিলায় কলকাতায় প্রশাসনিক পরিকাঠামো ঠিক ছিল না। নিজেও কলকাতা পুরসভার মেয়র ছিলেন সুব্রত। এক্ষেত্রে ইঙ্গিত ফিরহাদের দিকেই।
অনেকেই প্রশ্ন করছেন, তৃণমূলের বরিষ্ঠ নেতারা হঠাৎ আক্রমনত্বক হয়ে উঠলেন কেন। ২০২১ সালেই বিধানসভা নির্বাচন। দলের মধ্যে কি চাপ বাড়ছে। গেরুয়া হাতছানি কী রয়েছে। নাকি, পিকে একটি নতুন পলিটিকাল মাস্টারস্ট্রোক দিলেন? মন্ত্রীদের পরস্পরের সমালোচনা কি শুধুই 'আই ওয়াশ' । গুঞ্জন শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে, ইস্যুতে মুখ খুলেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তাঁর বক্তব্য, সুব্রতবাবু, সাধনবাবু সিনিয়ার নেতা। তাঁরা বলছেন। আবার মুখ্যমন্ত্রী এবং 'বাশি' মেয়র ফিরহাদ হাকিম কিছু কাজ করুন। অন্যদিকে, বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী বলেছেন, তৃণমূল যদি সুব্রতবাবুর কথা মেনে চলদ তবে তাদের দল এবং রাজ্যের উপকার হবে।