কৃষ্ণনগর: নিরাপত্তার দাবিতে যখন উত্তাল বাংলা, ঠিক তখনই কোচবিহারে রাজকুমার রায় হত্যাকাণ্ডের ছায়া এবার নদীয়ায়৷ ভোটকর্মীদের বিদ্রোহে ঘি ঢেলেছে বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা৷ ভোটের কাজে গিয়ে রাজকুমার রায়ের মতোই নিখোঁজ নদিয়ার নোডাল অফিসার অর্ণব রায়৷ ইভিএম ও ভিভিপ্যাটের দায়িত্বে ছিলেন তিনি৷ অভিযোগ, বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে আর কোনও খোঁজ মিলছে না নোডাল অফিসার অর্ণব রায়ের৷
শুক্রবার এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বিদ্রোহের আগুন ছড়িয়ে বাংলার ভোটকর্মীদের অন্দরে৷ ভোটের কাজে গিয়ে নোডাল অফিসারের রহস্যজনক ভাবে নিখোঁজ হওয়ার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়েছে নানা মহলে৷ ঘটনার তীব্র সমালোচনা করেছে শিক্ষক শিক্ষা কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চ৷ নিন্দা জানিয়েছেন সরকারি কর্মচারী সংগঠনও৷ একাধিক শিক্ষক সংগঠনের তরফেও তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে৷
জানা গিয়েছে, নির্বাচনে কাজের জন্য বৃহস্পতিবার সকালেও বীপ্রদাস পালচৌধুরী পলিটেকনিক কলেজে যান অর্ণব রায়। এদিন দুপুরে খাওয়ার পর তাঁকে আর দেখা যায়নি। তিনি যে গাড়িটি ব্যবহার করতেন সেটিও রয়েছে। গাড়ির চালকের কাছে অর্ণবের কোনও খবর নেই৷ অর্ণব রায়ের সহকর্মীদের বক্তব্য, বহু জায়গায় খুঁজেও তাঁর কোনও সন্ধান পাওয়া যাননি৷ দুটি মোবাইলও সুইচড অফ৷ রাতভর তাঁর খোঁজ না মেলায় অর্ণব রায়ের স্ত্রীকে নিয়ে কোতয়ালি থানায় যান জেলার এসপি ও জেলাশাসক৷ সেখানে তাঁরা একটি নিখোঁজ ডাইরি করেন৷
এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর শিক্ষক শিক্ষা কর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের যুগ্ম সম্পাদক কিংকর অধিকারী জানান, এই ঘটনায় তাঁরা চিন্তিত৷ বলেন, ‘‘কোনও প্রলোভনে পা নয়৷ ১০০ শতাংশ বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবিতে জেলায় জেলায় তীব্র আন্দোলন জারি থাকবে৷ দলমত নির্বিশেষে এগিয়ে আসুন সবাই৷ আমাদের দাবি যে কতটা বাস্তবসম্মত তা প্রমাণিত হচ্ছে৷’’
পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় গত ১৪ মে ইটাহারে ভোট গ্রহণের কাজে গিয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন ৪৮ নম্বর বুথের প্রিসাইডিং অফিসার রায়গঞ্জের বাসিন্দা রাজকুমার রায়। পরদিন ১৫ মে সন্ধ্যায় রায়গঞ্জের সোনাডাঙা এলাকায় রেললাইনের ধার থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়। রাজকুমার রায়ের মৃত্যু ঘিরে উত্তাল হয়ে ওঠে বাংলা৷ সিবিআই তদন্ত চেয়ে দায়ের হয় কলকাতা হাইকোর্টে৷ সেই মামলার সমাধান এখনও সময়নি৷