নলহাটি : শতাব্দীর প্রচারে সেই একই আকর্ষণ। সেই একই ‘শতাব্দী ঝড়’ বইছে। কেউ মাথায় আশীর্ব্বাদ করছেন, কেউ তাঁকে উলু দিয়ে বরণ করে নেন। কেউ তাঁর সাথে সেলফি তোলেন। কেউ তাঁকে চশমা খুলতে বলেন। ভক্তের আবদার শুনে, দিদি একবার চশমাও খোলেন।
আবার রসিকটা করে বলেন, আমার চোখ, নাক ঠিক আছে। সোমবার বীরভূমের নলহাটি ব্লকের প্রচারের শুরুতেই মঞ্চে ওঠার আগেই মোস্তফা ডাঙা পাড়ায় ষাঠোর্ধ এক মহিলা শতাব্দী রায়ের মাথায় হাত আশীর্ব্বাদ করে বলেন, মা সুখে থাকো, ভালো থাকো। তোমাকে আবার দেখব ভাবি নি। সেখান থেকে ভদ্রপুরে মৌসুমী ভট্টাচার্য্যের মত গৃহবধূরা তাঁকে শঙ্খ বাজিয়ে উলু দিয়ে বরণ করে নেন। সেখান থেকে নগোড়া হয়ে আকালিপুর গ্রামে গুহ্যকালীর পূজা দিয়ে নব হিমায়েতপুরে শ্রী অনুকূল বাবার আশ্রমে আনন্দ বাজারে যোগ দেন। অন্যদিকে, মোস্তফা ডাঙায়, গুরু দক্ষিণা সিনেমার ‘ফুল কেন লাল হয়’ গানের এক কলি গাইতে বলায়, শতাব্দী তাঁকে শান্ত ভাবেই বলেন, আমি ভোট প্রচারে এসেছি। এখন তো গান গাইতে আসি নি। আপনি তৃণমূল রাজনীতির সাথে যুক্ত হলে এমন কথা বলবেন না। এদিন বিজেপি প্রার্থী দুধকুমার মণ্ডল সম্পর্কিত এক প্রশ্নে, শতাব্দী বলেন, বীরভূমে দুধ কুমার মণ্ডলের আশা পূরণ হবে না।
এদিনের সভায় বলেন শতাব্দী বলেন, অনেকের এম পি ল্যাডের টাকা ফেরত গেছে। কিন্তু ২৫ কোটি টাকা ফেরত যায় নি। বিগত ১০ বছর আপনাদের পাশে আমি ও আমাদের কর্মীরা আপনাদের পাশে আছি। এক টাকাও ফেরত যায় নি। এরকম নয়, যে ভোটে দাঁড় করানো হল, আর দেওয়াল লিখন শুরু হল। শুধু নির্বাচন এলেই থাকি, তা নয়। শুধু আমাকে দেখা নয়। আমাকে ভালোবাসলে, আমাকে আমাকে ভোট দেবেন। আমাকে ভোট দেওয়া মানে তৃণমূলকে ভোট দেওয়া। তৃণমূলকে ভোট দেওয়া মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ভোট দিয়ে তাঁর হাত শক্ত করা। আমাকে আরও কাজ করার সুযোগ দিন। যেটুকু বাকি আছে তা আগামী পাঁচ বছরে হয়ে যাবে। কাজ করেছি বলেই , সেই দাবি নিয়ে আবার এসেছি। কোন সরকার আগে রাস্তাঘাট বা কোন কিছুই করে নি। আমি যখন প্রথম আসি, তখন অনেক রাস্তায় মোরাম ছিল। আজ সব পাকা। যেটা আমি পারব সেটাই বলেছি। কন্যাশ্রী, রুপশ্রী, কৃষকবন্ধু থেকে সমস্ত প্রকল্পে আপনারা সুবিধা পেয়েছেন।
আজকে সবুজ সাথী প্রকল্পে আপনাদের মেয়েরা সাইকেল পেয়েছে। হয় আপনার মেয়ে, না হয় আপনি সেই সাইকেল চালান। দেখুন, নির্বাচনে জিতে আমি সিনেমা করতে চলে যায় নি। সারা বছর আপনাদের পাশে আছি। এই মুহুর্তে কোন প্রতিশ্রুতি আমি দিতে পারব না। তবে কাজ করার সুযোগ আপনাদের কাছে অবশ্যই চাইব। দুটি নির্বাচনে আমাকে ভোট দিয়ে আপনারা কোন ভুল করেন নি। আজকে আপনারা অনেকেই সেলফি তুলছেন। তবে অভিনেত্রী শতাব্দী হিসেবে নয়, বীরভূমকে ভালোবাসি, বীরভূমের উন্নয়ন হোক এটা চাই বলেই, আপনাদের কাছে ছুটে আসি। নলহাটি-২ ব্লকের ভদ্রপুর অঞ্চলের তৃণমূলের সভায় উপস্থিত ছিলেন জেলা সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিব ভট্টাচার্য্য, বিভাস অধিকারী, আবু জাহের রানা, কংগ্রেস থেকে সদ্য আগত সৈয়দ সিরাজ জিম্মি প্রমুখেরা।