Aajbikel

দিল্লিতে মমতার ডাকা বৈঠকে হাজির বামেরাও, তৃণমূল বিরোধিতায় অসুবিধা হবে না তো?

 | 
রাষ্ট্রপতি পদে প্রার্থী দেওয়া নিয়ে মমতার ডাকা বৈঠকে হাজির বামেরাও, তৃণমূল বিরোধিতায় অসুবিধা হবে না তো?

নিজস্ব প্রতিনিধি: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন উপলক্ষে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে বিরোধী ঐক্য স্পষ্ট করেছেন। বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে দিল্লির কনস্টিটিউশন ক্লাবে হওয়া বৈঠকে তৃণমূল-সহ সতেরোটি দলের শীর্ষ নেতানেত্রী সম্মিলিতভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধী প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে একমত হয়েছেন। যেভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনকে সামনে রেখে মমতা সমস্ত বিরোধী দলকে একমঞ্চে এনেছেন তা সবার নজর কেড়েছে। এই বৈঠকের দিকে বিশেষ নজর ছিল বিজেপিরও। মমতার ডাকে সাড়া দিয়ে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শরদ পাওয়ার, অখিলেশ যাদব, মেহবুবা মুফতি, মল্লিকার্জুন খাড়্গে-সহ বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্ব। সবচেয়ে বড় কথা বৈঠকে বামেদের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন। সিপিআইয়ের বিনয় বিশ্বম, সিপিএম সাংসদ ই করিম, আরএসপি'র এন কে প্রেমচন্দ্রন উপস্থিত ছিলেন মমতার ডাকা বৈঠকে। এই বৈঠকে আরও একবার স্পষ্ট হয়ে গেল দিল্লিতে বিরোধী রাজনীতির মধ্যমণি সেই মমতাই। বৈঠক শেষে তাই তৃণমূল নেত্রীকে বেশ হাসিখুশি দেখিয়েছে। তাঁর কথায়, "এই বৈঠকের সবচেয়ে বড় বিষয় হল গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক দলগুলি এখানে এসেছে। গুটিকয়েক দল আসেনি। ‌তাদের নিশ্চয়ই কোনও বাধ্যবাধকতা ছিল। সেটাকে গুরুত্ব দিয়ে লাভ নেই।"

ঠিক এই জায়গা থেকেই প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল নেত্রীর ডাকে বৈঠকে বামেরা যেভাবে অংশ নিয়েছেন তাতে তাঁদের পশ্চিমবঙ্গে রাজনীতি করতে  অসুবিধা হবে না তো? একুশের বিধানসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ধুয়ে মুছে সাফ হয়ে যাওয়ার পর পুরসভা ভোটে কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়িয়েছে সিপিএম তথা বামেরা। রেড ব্রিগেডের রক্তক্ষরণ কিছুটা বন্ধ হয়েছে, এটা বলা যেতেই পারে। কারণ বহু ওয়ার্ডে প্রধান বিরোধী দল বিজেপিকে পিছনে ফেলে দিয়ে বামেরা দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে সংখ্যালঘু অধ্যুষিত দুটি ওয়ার্ডে তৃণমূলকে পিছনে ফেলে দিয়েছে সিপিএম। অনেকেই মনে করছেন আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে সিপিএম যথেষ্ট ভাল ফল করবে। এই অবস্থায় দিল্লির বৈঠকে মমতার সুরে সুর মিলিয়েছে বামেরা।

স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে এর ফলে আগামী দিনে তৃণমূল বিরোধিতায় বামেরা পিছিয়ে পড়বে না তো? যারা কট্টর তৃণমূল বিরোধী তারা বামেদের কতটা বিশ্বাস করবে? সেই ভোট ফের বিজেপির দিকে চলে যাবে না তো‌? উল্লেখ্য গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকেই দেখা যাচ্ছে বামের ভোট রামে গিয়েছে। সেই হারিয়ে যাওয়া ভোট পুনরুদ্ধার করতে মরিয়া সিপিএম। কিন্তু মমতার ডাকা বৈঠকে সিপিএম তথা বামেদের প্রতিনিধি থাকায় সেই ভোট পুনরুদ্ধার করতে সমস্যায় পড়তে হতেই পারে রেড ব্রিগেডের, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছে না রাজনৈতিক মহল। যদিও বামেদের বক্তব্য  সর্বভারতীয় স্তরের রাজনীতিতে সমীকরণ চিরকালই অন্যরকম হয়ে থাকে। কিন্তু সাধারণ মানুষ এত যুক্তিতর্ক বোঝেন না। সাদাচোখে তাঁরা যা দেখছেন সেটাই তাঁদের প্রভাবিত করে। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূল বিরোধিতায় বামেরা কতটা জমি ফিরে পায় সেটাই এখন দেখার।

Around The Web

Trending News

You May like