দুবাইয়ে আটক বাংলার বহু শ্রমিক! সুকান্তের দ্বারস্থ পরিবারের সদস্যরা

দুবাইয়ে আটক বাংলার বহু শ্রমিক! সুকান্তের দ্বারস্থ পরিবারের সদস্যরা

নিজস্ব প্রতিনিধি: বিদেশে কাজ করতে গিয়ে বাংলার বহু যুবকের জীবনে চরম ভোগান্তি নেমে এসেছে, এমন ঘটনার কথা অনেকবার শোনা গিয়েছে। ফের এমন ঘটনার কথা সামনে এল। দক্ষিণ দিনাজপুরের গঙ্গারামপুরের বেশ কয়েকটি পরিবারের ১৩ জন যুবককে  বিদেশে আটকে রাখার অভিযোগ উঠল। এমনকী দেশে ফেরার কথা বললে তাঁদের প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়েছে। আর তাঁদের নিরাপদে ঘরে ফিরিয়ে আনতে এবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের দ্বারস্থ হলেন আটকে থাকা শ্রমিকদের বাড়ির লোকজন। বিদেশে আটকে রাখায় বাড়ি ফিরতে না পেরে ওই শ্রমিকরা ভিডিও বার্তায় তাঁদের অসহায়তার কথা জানিয়েছেন। এরপরই সুকান্তের দ্বারস্থ হন অসহায় পরিবারগুলির সদস্যরা। সুকান্ত জানিয়েছেন তিনি বিষয়টি নিয়ে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করবেন।

কী ঘটনা ঘটেছে গঙ্গারামপুরে? গঙ্গারামপুর পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডের ১৩ জন শ্রমিক গত ১ ডিসেম্বর দুবাই রওনা হন কাজের জন্য। তাঁদের বড় অঙ্কের বেতন দিয়ে কম্পিউটারের কাজ করানো হবে, এই প্রতিশ্রুতি দিয়ে দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়। অথচ সেখানে তাঁদের দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করানো শুরু করে ওই সংস্থা। এর প্রতিবাদ করতেই তাঁদের একটি ঘরে আটকে রাখে আরবের ওই সংস্থা। এই পরিস্থিতিতে ভিডিও বার্তায় গোটা ঘটনার কথা পরিবারের কাছে জানান ওই ১৩ জন শ্রমিক। যে কোনও ভাবে তাঁদের দেশে ফেরানো হোক, এমন কাতর আর্তি জানাচ্ছেন তাঁরা। ঘটনার কথা জেনে সংশ্লিষ্ট পরিবারের সদস্যদের মাথায় হাত পড়ে যায়। কি করবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না তাঁরা।

এরপরই রাজ্য বিজেপি সভাপতি তথা বালুরঘাটের সাংসদ সুকান্ত মজুমদারের দ্বারস্থ হন পরিবারের সদস্যরা। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ওই শ্রমিকদের প্রতি মাসে আড়াই লক্ষ টাকা বেতন দেওয়া হবে, এ কথা বলেই দুবাই নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে অন্য অভিজ্ঞতা হয় শ্রমিকদের। কম্পিউটারের বদলে নির্মাণের কাজ করতে বলা হয় তাঁদের। আর মোটা অঙ্কের বেতন দেওয়া তো দূরের কথা, বাড়িতে আসার কথা বললে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি জন প্রতি এক লক্ষ টাকা দাবি করে দুবাইয়ের ওই সংস্থা। তাঁদের এখন ঘরের মধ্যে আটকে রাখা হয়েছে, এমনকী খাবার দেওয়া হচ্ছে না বলে অভিযোগ। ভিডিও বার্তায় শ্রমিকদের বলতে শোনা যাচ্ছে,”একটা ছোট্ট ঘরে আমাদের ১৩ জনকে আটকে রেখেছে। খাবার, ওষুধ-সহ অন্যান্য খরচ দিতে অস্বীকার করছে ওরা। আমাদের বাড়ি ফিরিয়ে আনুন।” এই অবস্থায় সুকান্ত আশ্বাস দিয়েছেন বিদেশমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে তিনি সকলকে দ্রুততার সঙ্গে দেশে ফিরিয়ে আনার ব্যবস্থা করবেন। আর চরম উদ্বেগ নিয়ে এখন সে দিকেই তাকিয়ে আটকে থাকা শ্রমিকদের পরিবারের সদস্যরা। পশ্চিমবঙ্গে কাজের সুযোগ নেই, এমন দাবি বহুদিন ধরে করছে বিরোধীরা। তাই বাংলার যুবকদের অনেকেই পেটের টানে অন্য রাজ্য বা বিদেশে চলে যাচ্ছেন। আর সেখানে গিয়ে তাঁদের অনেককে বিপদের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এই অবস্থায় গঙ্গারামপুরের যুবকরা কবে বাড়ি ফিরে আসেন সেটাই দেখার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *