Aajbikel

পঞ্চায়েতের আগে বাতাসে বারুদের গন্ধ! এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে উঠছে বহু প্রশ্ন!

 | 
পঞ্চায়েতের আগে বাতাসে বারুদের গন্ধ! এগরা বিস্ফোরণ কাণ্ডে উঠছে বহু প্রশ্ন!

কলকাতা: এগরায় বোমা বিস্ফোরণ কাণ্ডে ইতিমধ্যেই ৯ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আশঙ্কাজনক অবস্থায় একাধিক ব্যক্তি হাসপাতালে ভর্তি। বেআইনি বাজি কারখানার মালিক তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত সদস্য ভানু বাগ ঘটনার পর থেকেই এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গিয়েছেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি তিনি ওড়িশায় পালিয়ে গিয়েছেন।  বিরোধীদের অভিযোগ পঞ্চায়েত ভোটকে মাথায় রেখেই ওই বাজি কারখানায় বোমা বানানো হচ্ছিল। তাই বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটা বেশি হয়েছে। কিন্তু যাই হোক না কেন, পুলিশ কি এসবের কিছুই জানত না? ঘটনা হল বেশ কয়েক বছর আগে ভানু বাগের এই বাজি কারখানাতেই বিস্ফোরণে কয়েকজনের মৃত্যু হয়েছিল। গ্রেফতারও করা হয়েছিল ভানুকে। এরপর জামিনে মুক্ত হয়ে আবার বেআইনি কারবার ফেঁদে বসেছিলেন তিনি। স্থানীয় মানুষদের অভিযোগ পুলিশকে নিয়মিত টাকা দিয়ে এই অবৈধ কারবার চালিয়ে যাচ্ছিলেন ভানু। তবে কি সেই কারণেই সব কিছু দেখেও হাত গুটিয়ে বসেছিল এগরা তথা পূর্ব মেদিনীপুর জেলার পুলিশ? এই প্রশ্ন স্বাভাবিকভাবেই উঠছে।


সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন। তার আগে এই ঘটনা প্রশাসনের ঘুম ছুটিয়েছে। এখনও নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়নি। তার আগেই বাতাসে বারুদের গন্ধ! তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কি হবে? তা ভেবে কুল পাচ্ছেন না গ্রামাঞ্চলের লক্ষ লক্ষ মানুষ। বিরোধীদের অভিযোগ ভানু বাগের ওই কারখানায় অবৈধ বাজির পাশাপাশি বোমা বানানো হতো। শাসক দলের মদতে এই কারবার চলত বলে অভিযোগ তাদের। যথারীতি এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে শাসক দল।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতেই রয়েছে পুলিশ দফতর। তাই এগরা কাণ্ডের জেরে পুলিশমন্ত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগ চেয়ে সরব হয়েছেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। ইতিমধ্যেই বিরোধীরা এনআইএ তদন্ত চেয়েছেন। এনআইএ তদন্ত চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হচ্ছেন শুভেন্দু। মুখ্যমন্ত্রীও বলেছেন এনআইএ তদন্ত হলে তাঁর আপত্তি নেই। তবে মুখ্যমন্ত্রী একথা বললেও তিনি ঘটনাটি নিয়ে এমন একটি মন্তব্য করেছেন যা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।


মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, বাজি কারখানাটি যে অঞ্চলে রয়েছে সেখানকার পঞ্চায়েতটি এখন বিজেপির হাতে রয়েছে। তাই তাদের উচিত ছিল এলাকায় কি হচ্ছে সেদিকে নজর রাখা। কিন্তু এটা কি বাস্তবসম্মত মন্তব্য? এলাকার পঞ্চায়েত তৃণমূল, বিজেপি, কংগ্রেস বা সিপিএম যার হাতেই থাকুক না কেন, এই বিষয়টি তো পুলিশের দেখার কথা। এগরায় এত বড় বেআইনি কারবার বছরের পর বছর ধরে চলছে, তা সত্ত্বেও পুলিশ কেন ব্যবস্থা নিল না সেই প্রশ্ন তুলছেন সবাই।


 স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ পুলিশ সবকিছু দেখেও চুপ করে ছিল। এমনকী কেউ কেউ বলছেন ঘটনার পর ভানু বাগ সবার চোখের সামনে দিয়ে পালিয়ে গেলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। আর এই অভিযোগের যদি সামান্যতম সত্যতা থাকে তাহলে তা রাজ্যবাসীর পক্ষে একেবারেই ভাল খবর নয়।


পুলিশ-ইন্টেলিজেন্সের যদি এই হাল হয় তাহলে নিরাপত্তার  নিরিখে সাধারণ মানুষ যে কতটা অসহায় সেটা আর নতুন করে বলার কিছু নেই। তবে কি এরকমটাই চলবে? পুলিশের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ উঠবে আর অকালে ঝরে যাবে এতগুলি তাজা প্রাণ? এই প্রশ্নের উত্তর দেবেন কে? তাই এগরা-কাণ্ডের পর রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাজি কারখানাগুলি নিয়ে প্রশাসন কি ব্যবস্থা নেয় এখন সেটাই দেখার।

 

Around The Web

Trending News

You May like