কলকাতা: ফের বঙ্গ বিজেপিতে বড় ভাঙন৷ বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দিলেন বেশ কয়েকজন বিজেপির প্রথম সারির নেতা৷ এছাড়াও ৩ হাজার বিজেপি কর্মী তৃণমূলে যোগ দিলেন৷ এর আগে ২১ জুলাই ভার্চুয়াল সভা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, যাঁরা তৃণমূলে আসতে চান, তাঁদের স্বাগত৷ ২১ সালের নির্বাচনের ‘গৃহযুদ্ধে’ বেসামাল বিজেপি ভেঙে তৃণমূলে নেতা-কর্মীদের যোগদান বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
আজ সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি ছেড়ে আসা নেতাদের হাতে দলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়৷ জানান, বাংলা জননেত্রী হাত শক্ত করতে তাঁরা আগেও বাবা আবেদন করেছিলেন৷ চেয়েছিলেন তৃণমূলে যোগদান করতে৷ তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের সুপারিশে তাঁকে এই যোগদান বলে জানিয়েছেন পার্থ৷ বিজেপির তরুণ তুর্কী নেতা কৃশানু মিত্র ও রাজু ঘোষ আজ তৃণমূলে যোগদান করেন৷ এছাড়াও ৩ হাজার বিজেপি কর্মী জেলাস্তরে তৃণমূলে যোগ দিচ্ছেন বলেও জানিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব৷ যদিও এর আগে বিজেপিতে থাকার সময় গত ৭ জুন কৃশানু মিত্র সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছিলেন, ‘‘তৃণমূলের ছাঁটা মাল দিয়ে তৃণমূলের বিরোধিতা হয় না৷’’ এবার মাত্র দু’মাসের ব্যবধানে নিজের মন্তব্যকেই নিজেই ব্যর্থ করলেন!
এমনিতেই নেতৃত্ব কোন্দলে ‘গৃহযুদ্ধে’র আগুনে জ্বলছে বঙ্গ বিজেপি শিবির৷ সরারসি বিজেপি দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন বিজেপির একাংশ৷ এই নিয়ে জল গড়িয়েছে দিল্লি পর্যন্ত৷ এবার বিজেপির কোন্দল আবহে ‘বিদ্রোহীদে’র তৃণমূলে যোগদান করলেন বেশ কয়েকজন সক্রিয় কর্মী৷ ২০২১ এর বাংলা ভোটের আগে এই দলবদল বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছে পর্যবেক্ষক মহলের একাংশ৷
বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগদান পর্ব ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নয়া চর্চা৷ কেননা আমফান ও করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি তৃণমূল নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে৷ জেলায় জেলায় প্রকট হয়ে উঠেছে গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব৷ এমনিতেই যুব বনাম আদি দ্বন্দ্ব লেগেই আছে ঘাসফুলের অন্দরে৷ এবার গণহারে বিদ্রোহী বিজেপির নেতাকর্মীদের দলে দরজা অবারিত রাখার সিদ্ধান্ত কিংবা কৌশল আদৌ ভোটের বাক্সে ডিভিডেন্ট দেবে, প্রশ্ন তুলছেন নিচুতলার কর্মীদের একাংশ৷
তাঁদের একাংশের প্রশ্ন, লড়াই তো বিজেপির ‘সাম্প্রদায়িক’ রাজনীতির বিরুদ্ধে৷ তার বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মীদের মাঠে ময়দানে নেমে লড়াই করতে হচ্ছে৷ কিন্তু, ‘সাম্প্রদায়িক’ রাজনীতির করা সেই বিজেপি কর্মীদের দলে টেনে আদৌও কি ভাবমূর্তি সুরক্ষিত হচ্ছে? কেনান, শেষ পর্যন্ত মাঠে-ময়দানে নেমে লড়াই আন্দোলন কর্মীদের চালিয়ে যেতে হবে৷ সে ক্ষেত্রে বিজেপির বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে লড়াই অন্যদিকে বিদ্রোহী বিজেপি নেতা-কর্মীদের দলে আমন্ত্রণ, একে অপরের পরিপন্থী নয় কি? প্রশ্ন নেতাকর্মীদের৷