কলকাতা: আর্থিক প্রতারণার মামলায় কলকাতা পুলিশের জেরার হাজির হওয়ার আগে ফের তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করলেন মুকুল রায়৷ কলকাতা পুলিশের জেরার মুখে বসার আগে মুকুলের মন্তব্য ঘিরে তুঙ্গে বঙ্গ রাজনীতির ময়দান৷
আজ বিকালে বেহালার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের অফিসে হাজিরা দিতে গিয়ে সাংবাদিকের মুখোমুখি হয়ে মুকুল রায় বলেন,‘‘আমি সবসময়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত পালিয়ে যায় না৷ তদন্তকারীরা ডাকলে আমি তদন্তে সহযোগিতা করি৷ কলকাতা পুলিশ ডেকেছে৷ যা জিজ্ঞাসা করবে তার উত্তর দেব৷’’ রেলের গুরুত্বপূর্ণ কমিটিতে সদস্যপদ দেওয়ার নামে ৪০ লক্ষ টাকা প্রতারণার অভিযোগ প্রসঙ্গে মুকুলের জবাব, ‘‘এটা কোন অভিযোগ হল না কি৷ রেলের কমিটিতে সদস্যপদ এভাবে হয় নাকি৷ আমার সঙ্গে এর কোনও যোগ নেই৷ আমি কিছুই জানি না৷’’ ধৃত বাবান ঘোষ আপনার পরিচিত? জবাবে মুকুলের মন্তব্য, ‘‘ও আমাদের পার্টির লোক বটে, তবে আমি ওর সম্বন্ধে কিছু জানি না৷ আমার রেল মন্ত্রী থাকাকালীন এমন কোন অভিযোগ ওঠেনি৷’’
এরপরই তৃণমূল সুপ্রিমোকে বেলাগাম আক্রমণ করে মুকুল রায়ের মন্তব্য, ‘‘আমি আপনাদেরকে বলে যাচ্ছি, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গ্রেপ্তার হবেন৷ আট কোটি টাকা লুট করেছেন৷ তারও তদন্ত হবে৷ অপেক্ষা করুন৷’’ মুকুলের এই মন্তব্য ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷ আর্থিক প্রতরাণা মামলা থেকে নজর ঘোরাতে এই মুকুলের এই অভিযোগ বলেই মনে করছেন পর্যবেক্ষক মহল৷
সূত্রের খবর, আর্থিক প্রতারণার মামলার দায়ে বেহালার অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনারের অফিসে হাজিরা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয় মুকুল রায়কে৷ ভারতীয় রেলের গুরুত্বপূর্ণ কমিটির সদস্য পদ দেওয়ার নাম করে এক ব্যবসায়ীর থেকে ৪০ লক্ষ টাকার ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে মুকুল রায় সহ তাঁর ঘনিষ্ঠদের বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে৷ গোটা ঘটনায় ইতিমধ্যেই মুকুল রায় সহ বিজেপির প্রাক্তন শ্রমিক সংগঠনের নেতা বাবান ঘোষের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হয়েছে৷ মুকুল রায়ের নাম ভাঁড়িয়ে ৪০ লক্ষ টাকা প্রতারণার দায়ে গত ২৫ আগস্ট বাবান ঘোষকে গ্রেপ্তারের পর দলে অন্দরে শুরু হয় বিতর্ক৷ বিতর্ক ধামাচাপা দিতে তড়িঘড়ি রাজ্য বিজেপি তাঁদের শ্রমিক সংগঠনে নতুন মুখ আনতে উদ্যোগ নেওয়া হয়৷ বাবানের পদ ছিনিয়ে সাধন তালুকদারকে দলের শ্রমিক সংগঠনের প্রধান করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বিজেপির তরফে৷
এই মামলায় বাবানকে জেলের ঘানিও টানতে হয়েছে৷ তবে এফআইআর দায়েরের পর গ্রেপ্তারির উপর রক্ষাকবচ পেয়েছেন মুকুল রায়৷ আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মুকুল রায়কে গ্রেপ্তার করা যাবে না বলে আগেই জানিয়েছে আদালত৷ তবে আদালত এইটাও জানিয়েছে, তদন্তের জন্য তাঁকে সহযোগিতা করতে হবে৷ আর সেই সুবাদে এবার বেহালা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনের অফিসে হাজিরা দিয়ে মুকুল রায়কে জেরা করতে চলেছে কলকাতা পুলিশ৷ আর তাতেই নতুন করে শক্ত হতে শুরু করেছে বঙ্গ রাজনীতির ময়দান৷