কলকাতা: বৃহস্পতিবারই পাহাড়ের রাস্তায় দৌড়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার আবার সল্টলেকে হেঁটে দেখিয়ে দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখর। বঙ্গ রাজনীতির সাম্প্রতিক রঙ্গমঞ্চে এই দুই চরিত্রই পরস্পর বিরোধী হিসাবে ইতিমধ্যেই পরিচিত হয়েছেন। রাজ্যপাল একদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে সমালোচনায় ভরিয়ে দিয়েছেন। অন্যদিকে মমতার মন্ত্রীরা রাজ্যপালকে সমালোচনার জবাব ফিরিয়ে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপাল এবং মমতা দৌড়ে ও হেঁটে সুস্থ্যতার বার্তা ছড়িয়েছেন। কিন্তু, রাজভবনে-নবান্নের সংঘাত প্রশাসন এবং রাজনীতিতে সুস্থতা আনতে দিচ্ছে কই।
রাজ্যপাল এবং রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে প্রথম সংঘাতের আবহ তৈরি হয় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিক্ষোভের মুখে পড়া কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়কে উদ্ধার করতে সেখানে নিজেই যান রাজ্যপাল। মুখ্যমন্ত্রীর বারবার নিষেধ তিনি শোনেননি। এরপর আসে উত্তর বঙ্গের ঘটনা। উত্তরবঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে দেখা করতে চান রাজ্যপাল। একমাত্র বিজেপি এবং কংগ্রেসের এমপি-এমএলএ ছাড়া কেউ সেই বৈঠকে অংশগ্রহণ করেনি। ক্ষুব্ধ রাজ্যপাল বলেন, তিনি প্রীতিটি জেলায় যাবেন। বৈঠক করবেন।
এরমাঝে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শিক্ষক বন্ধুপ্রকাশ পাল এবং তাঁর পরিবার নৃশংসভাবে খুন হয়। রাজ্যে আইনশৃঙ্খলা নেই – সরব হন রাজ্যপাল। কিছুদিন আগে উত্তর এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলা প্রশাসন এবং জনপ্রতিনিধীদের সঙ্গে দেখা করতে চান রাজ্যপাল। সেই বৈঠকও ছিল ফাঁকা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য কীভাবে তা নিয়েই সংশয় প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। রাজভবন এবং নবান্নের তিক্ততা যখন চরম পর্যায়ে তখন রাজপালকে ভাই ফোঁটা দিতে চেয়ে কিছুটা মিষ্টতা আনতে চেয়েছেন মমতা।
Participated and flagged with the First Lady Sudesh Dhankhar this morning in the RUN FOR AYURVED organized on the AYURVED DAY at Central Park Salt Lake Congratulations for large turn out in spite of inclement weather. Health is Wealth and our 5000 year tested way is BEST. pic.twitter.com/kyJFyZ9zcQ
— Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) October 25, 2019
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে রাজভবনে এবং নবান্নের সম্পর্কের এই অধগমন নতুন নয়। বাম আমলে রাজ্যপাল গোপাল কৃষ্ণ গান্ধীর সঙ্গে মহাকরণের বিভিন্ন বিষয়ে দ্বন্দ্ব লেগেছিল, বিদায়ী রাজ্যপাল কেশরিনাথ ত্রিপাঠির সঙ্গেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে মতানৈক্য হয়েছে, কিন্তু নতুন রাজ্যপাল শুরু থেকেই এই প্রশাসনকে টার্গেট করে রেখেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে পোরখাওয়া রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জগদীপ ধনখর। দেশের অন্যতম সিনিয়র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দুজনের সম্পর্কের রসায়ন কেমন হবে তা কেউ আপাতত জানে না। কিন্তু, রাজনৈতিক সুস্থ্যতা বজায় থাক তা চাইছে সব পক্ষই। কারণ দুজনেই সুস্বাস্থে বিশ্বাস করেন। তাই একজন দৌড়েছেন, একজন হেঁটেছেন।