কৃষি বিল: মোদির আগেই পশ্চিমবঙ্গে একই কাজ করেছেন মমতা, দাবি বামেদের

কৃষি বিল: মোদির আগেই পশ্চিমবঙ্গে একই কাজ করেছেন মমতা, দাবি বামেদের

cc0514baeb727a56b9f10565a4c47101

দেবময় ঘোষ:  মাঝে মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে রাজনৈতিক কার্যকলাপে নিজের দলকে আবদ্ধ করেন, তা কী শুধুই নরেন্দ্র মোদী বিরোধী, নাকি অন্য তাৎপর্য আছে? আপাতদৃষ্টিতে মমতার অনেক সিদ্ধান্তই আজকাল বামপন্থীদের সমান্তরাল বলে মনে হয়। মমতা কী বামপন্থায় উদ্বুদ্ধ, নাকি ভোটের দিকে তাকিয়ে এসব অনিচ্ছা সত্ত্বেও করতে হয়? সাম্প্রতিক কৃষিবিল সম্পর্কে মমতার মনভাবের প্রসঙ্গ টেনে বামপন্থীরা তার অবস্থান ব্যাখ্যা করেছেন।

মোদি সরকারের কৃষি বিলের বিরোধী মমতা। সারা রাজ্যে তার কৃষক দরদী ভাবমূর্তিও প্রস্ফুটিত। কিন্তু, বামপন্থীরা ওই মুখের পিছনে মুখোশ দেখছেন। মঙ্গলবার, ২২ সেপ্টেম্বরে গণশক্তির প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, “আজ নয়, ক্ষমতার প্রথম তিন বছরের মধ্যেই কর্পোরেট স্বার্থে রাজ্যের কৃষিপণ্য বিপণন আইনের অভিমুখই বদলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের চালু কৃষিপণ্য বিপণন আইনের সংশোধনী এনেছিলেন বিধানসভায়। বিরোধীর প্রবল আপত্তি উড়িয়ে সংখ্যার জোরে তা পাশ করিয়ে নেওয়া হয়েছিল। অতি দ্রুততার সাথে সেই আইনের বিধি তৈরি করে সরকার জানিয়ে দিয়েছিল বৃহৎ বাণিজ্যের হাতে কৃষককে তুলে দেওয়ার পরিকল্পনা।’’

ওই প্রতিবেদনে প্রকাশ, ‘‘কৃষকবিরোধী বিল পাশ করতে মোদী সরকারের মতোই তৎপরতা দেখিয়েছিলেন মমতা ব্যানার্জি। গায়ের জোরে বিল পাশ করতে এখন সংসদে যা ঘটছে, রাজ্যের আইনকে সংশোধন করতে সাড়ে পাঁচ বছর আগে রাজ্য বিধানসভায় একই দৃশ্যের সাক্ষী ছিল রাজ্য বিধানসভা৷’’

বামপন্থীরা যে তথ্য তুলে ধরেছেন, তা হল – রাজ্যের কৃষিপণ্য বিপণন (নিয়ন্ত্রণ), ১৯৭২ আইনটিকে প্রায় পালটে দেয় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। ২০১৪ সালের ৮ ডিসেম্বর বিধানসভায় কৃষিপণ্য বিপণন (নিয়ন্ত্রণ) আইনের সংশোধনী পাশ হয়। ২০১৫ সালের ২১ জানুয়ারি রাজ্যপালের সম্মতি আদায় করে তৈরি হয় আইনের বিধি বা রুল।

গণশক্তিতে প্রকাশ, “সাড়ে পাঁচ বছর আগে রাজ্যের কৃষিপণ্য বিপণন (নিয়ন্ত্রণ), ১৯৭২ সালের মূল আইনকে কার্যত পালটে দেয় রাজ্য সরকার। সংশোধনী এনে রাজ্যের কৃষিক্ষেত্রকে বেসরকারি ক্ষেত্রের হাতে তুলে দেওয়ার সিলমোহর পড়ে সেদিনই। এখন নয়াদিল্লিতে যা ঘটছে তার বহু আগেই রাজ্যের কৃষি বাজারকে বেসরকারি মালিকদের জন্য ছাড়পত্র দিয়ে রেখেছে নবান্ন।” এখন প্রশ্ন, মমতার সমালোচক রাজ্যপাল জগদীপ ধনখরের ‘কুম্ভীরাশ্রু’ মন্তব্যই কী মুখ্যমন্ত্রীর জন্য সঠিক? একি শুধুই লোক দেখানো ‘মোদি বিরোধিতা’? নাকি অন্য কিছু কারণ রয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের ব্যাখ্যা, রাজ্যে বাম ভোট মমতার জন্য জরুরি। অন্তত বিজেপিকে ক্ষমতা থেকে দূরে রাখার জন্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *